• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

১ মার্চ দুপুরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার অনিবার্য যাত্রা 


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ২৭ ফেরুয়ারী, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৫:২২ পিএম
১ মার্চ দুপুরে
বাংলাদেশের স্বাধীনতা

মুহম্মদ জুলফিকার আলী 

পাকিস্তানের ২৩ বছরে প্রথম অনুষ্ঠিত সাধারন নির্বাচনে, পূর্ব পাকিস্তান নামক প্রদেশের অবিসংবাদী বাঙ্গালি নেতা শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় পরিষদে (ন্যাশনাল এসেম্বলি) সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে আওয়ামী লীগকে এককভাবে জিতিয়ে আনেন। প্রথম সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হওয়াতে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের ‘ভাবী প্রধানমন্ত্রী’ হওয়ার কথা সামরিক জান্তা প্রধান নিজেই স্বীকার যান, তখনকার দিনের প্রতিযোগিতামূলক পাকিস্তানের শ্রেষ্ঠ সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে। 

২৫ মার্চ ’৭১-এর রাতে উপরোক্ত কথা বেমালুম ভুলে পাকিস্তানের সামরিক জান্তা, বাঙ্গালি নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রধান মন্ত্রীত্ব দূরের কথা, বাঙ্গালি (হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান, মুসলমান)জাতিকে এক তরফা গণহত্যার শিকার বানায়। এর অত্যল্প সময়ের মধ্যে ঔদ্ধত্য দেখায়, গণতান্ত্রিকভাবে পাকিস্তানের প্রথম অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত সংখ্যাগরিষ্ঠ দলীয় নেতা বঙ্গবন্ধুকে ধানমন্ডির ৩২ থেকে আটকের। এ অন্যায্য কাজে সারা দুনিয়াই জেনে যায়, সামরিক জান্তা কর্তৃক প্রথম সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত সংখ্যাগরিষ্ঠ দলীয় নেতা, বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের সম্মানিত প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হতে দিবে না। তাতে যে পাকিস্তানিরা অসম্মানিত পথের যাত্রী হল, তা বুঝবার মত অবস্থানে ছিল না পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠি। 

স্মরণীয়, দুনিয়ার কোন সামরিক শাসক বন্দুকের নলে ক্ষমতা কব্জা করার পরে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিবে জানিয়ে মুখে যতই জাবড় কাটুক তা কার্য্যকর করে না। ২৫ মার্চ ’৭১-এ সামরিক জান্তা ইয়াহিয়াও তাই করেন। 

এ যাত্রায় বরং ‘নাইজেরীয় প্রজাতন্ত্রের পূর্বাঞ্চলীয় সংখ্যালঘু বায়াফ্রা’র বিচ্ছিন্ন হওয়ার ব্যর্থ কান্ড ঘটাতে চাইছিল পাকিস্তান। সে চাওয়াটাই তাদের ব্যর্থ হয়। এর যথার্থ কারণ হল, শেখ মুজিব সংখ্যালঘু দল নেতা ছিলেন না। তিনি ছিলেন গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা। এতে প্রকাশ পায়, স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক ছাঁচকে পাল্টে তাজ্জব সব অকান্ডে জড়ায় পাকিস্তান সামরিক জান্তা। শিকার বানায় পাকিস্তানের অংশ পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) কে জাতিগতভাবে গণহত্যার। এ অবাক কান্ডে খুলে যায়, ভবিষ্যৎ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কায়েমের যথার্থ রাস্তাটি। 

যে সামরিক জান্তা ১৯৭০-এর অনুষ্ঠিত প্রথম সাধারণ নির্বাচনে মুখ্য ভ‚মিকা পালন করেছিল। বিশেষ করে, ‘এক লোক, এক ভোট’ ভিত্তিতে নির্বাচন প্রক্রিয়াটি নিজেরা নিয়ন্ত্রণে রেখে সর্বাঙ্গসুন্দর করার প্রচেষ্টায় দুনিয়াময় প্রশংসা কুড়ায়। সে একই সামরিক জান্তা ২৫ মার্চে গণহত্যার শুরু করে ও গণতান্ত্রিক পথে নির্বাচিত সংখ্যাগরিষ্ঠ দলীয় নেতা শেখ মুজিবকে আটক করার ধিক্কারে হয়ে যায় একেবারে মলিন। জনদাবীর কাছে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা অনিবার্য রূপ নেয়। এ অনিবার্য গন্তব্যে পৌঁছানোর যাত্রা শুরু হয় ১৯৭১-এর ১ মার্চের দুপুরেই। 

সামরিক জান্তা ইয়াহিয়া খানের ‘এলএফও’র শক্ত বাঁধন ছিঁড়ে ফেলার একমাত্র পথ যে গণতন্ত্র, তা নেতা শেখ মুজিব মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতেন। তাই ১৯৭০-এর নির্বাচনে তার দল আওয়ামী লীগের অংশ গ্রহণ ছিল তার ব্যক্তি বিশ্বাসকে প্রমাণ করার উপযুক্ত কৌশল। শত বাঁধন কেটে পাকিস্তানের গঠিত জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েও দীর্ঘ কালক্ষেপণের পরে প্রথম অধিবেশন ডেকে কারণ ছাড়া স্থগিত করা রেডিও ঘোষণার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল অবাক করা। ছাত্র-জনতা মুহূর্তেই রাস্তায় নেমে শ্লোগান তুলেছিল, বীর বাঙ্গালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর।

পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ, ঢাকা অধিবেশন ১ মার্চে স্থগিত করার অর্থ তখন দাঁড়িয়েছিল, অনির্বাচিত সংখ্যালঘু পাকিস্তানিরা সামরিক অস্ত্রবলে বাঙ্গালিকে ‘দাবায়ে’ রাখতে চায়। সেটি তারা পাকিস্তানের জন্ম থেকেই শুরু করেছিল। এর প্রতিবিধানেই ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬-তে লাহোরে শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা পেশের মধ্যে স্পষ্ট করেছিলেন বাংলা তথা বাঙ্গালির স্বায়ত্বশাসনের দাবী। সে দাবীর সমর্থনে নেতা শেখ মুজিব পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের মোট ৩১৩ আসনের (সংরক্ষিত নারী আসনসহ) ১৬৭টি আসন লাভ করায় তার দলের জন্য তা কার্য্যকর করা বাধ্যতামূলক হয়ে যায়।  এতে ২৩ বছরের বৈষম্যের পূর্ণ ঘড়া উছলে পাকিস্তান কাঠামোর মধ্যে বাঙ্গালির অধিকার গণতান্ত্রিক পদ্ধতিবলে সুদে-আসলে পরিশোধের বড় ধাক্কায় পড়ে পাকিস্তান। পাকিস্তানের কায়েমী স্বার্থ বজায় রাখার সব হিসাবই গোলমেলে ঠ্যাকে পাকিস্তানিদের কাছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জেতা শেখ মুজিবকে পাকিস্তানের পূর্ণ শাসনভার দিতে তারা ছিল তাই একেবারে নারাজ। পাকিস্তান রেডিওর ১ মার্চের এ এক ঘোষণাই সে সত্য তুলে ধরে। সত্য প্রকাশ হওয়ায় মুহূর্তে ছাত্র-জনতা বাঙ্গালির দাবী, ‘পূর্ব পাকিস্তান নয়, . . . বাংলাদেশ  স্বাধীন কর’ শ্লোগানে মুখরিত হয়। 

গণতান্ত্রিক আদর্শ রক্ষা করতে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের পূর্ব পাকিস্তান ১ মার্চ থেকে স্বায়ত্বশাসনের পরিবর্তে বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে হয়ে ওঠে উত্তাল। ঐ দিনের দিবাগত গভীর রাতে প্রার্থনারত শেখ মুজিবুর রহমানের নিজের উপলব্ধিতে আসে যে, তিনি জনগণের নাড়ি ধরে রাজনীতি করেছেন। নাড়ি ধরা রোগে ছয় দফার ডোজ প্রয়োগে জনতা নেতার অগ্রে চলতে শেখানোতে পরম করুণাময়ের কাছে তার মন ভরা কৃতজ্ঞতা জানান। নেতার মনে হয়, তিনি তার রাজনীতিতে সার্থক হয়েছেন। যা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞগণ অনুমান পর্যন্ত করতে পারেন নাই, সাধারণ মানুষের নাড়ি টেপা রাজনীতির নিজস্ব শিক্ষায় করে ফেলেছেন তিনি। এটি প্রমাণ করে নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের নাড়ি ধরা রাজনৈতিক পাঠ্যক্রমের চুড়ান্ত ফল। 

রাজনীতির সাদামাটা পাঠে মাত্র ৪ মাস ২ দিন পরে ৭ জুন ১৯৬৬তে তৃণমূল শক্তির প্রতীক শ্রমিক মনু মিঞারা অকাতরে বুকের রক্ত দেন। ছয় দফা আন্দোলনে তাদের এমন জীবন দানের বিনিময়ে কিছুই পান নাই তারা। তবে তা আলোকবর্তিকা হয়ে ’৭১-এর ১ মার্চ সস্ফ‚র্ত স্বাধীনতার দাবীতে সমগ্র বাঙ্গালি জাতিকে রাস্তার নামার সাহস দেখিয়েছে ৭ জুনের প্রাণ দানকারী অগ্রজেরা। 

তাদের উত্তরসূরিরা, যারা মুহূর্তে রাস্তায় নামতে নেতার আহবানের অপেক্ষা পর্যন্ত করে নাই। ১ মার্চ দুপুরে অর্থ্যাৎ তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান সময় দুপুর ১টা এবং পশ্চিম পাকিস্তান সময় দুপর ১২টায় পাকিস্তানের বারোটা বাজায় শাসকগোষ্ঠিরা নিজেরাই রেডিও পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ অধিবেশন কারণ ছাড়া স্থগিত করার ঘোষণাটি দেওয়ায়। নতুন মাত্রায় যা ধরা দিয়েছিল, অসীম কষ্টে পাওয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা নামে। 

স্বাধীনতা শব্দের আনন্দ ব্যক্তি হিসাবে মাতা-পিতার পরে একজন প্রকৃত শিক্ষকই দাবী করতে পারে। কোন ছাত্র শিক্ষকের চেয়ে জ্ঞানে বড় হলে  প্রকৃত শিক্ষক আনন্দে আটখানা হন। নেতাও তাই হয়েছেন। তার আনন্দ, ছয় দফা প্রণয়নকালে যে স্বায়ত্বশাসন দাবী করা হয়েছিল, তা পূর্ণ হলে স্বাধিকার পেত বাঙ্গালি। আর ১ মার্চের দুপুরে রেডিও ঘোষিত কারণ ছাড়া জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত করা মাত্র স্বাধিকারের অন্তর্নিহিত ইচ্ছা, ‘স্বাধীনতা’র দাবী ছাত্র জনতা করে তাকে গৌরব দীপ্ত করেছে। রাতে প্রার্থনারত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সে সময়ে আন্তরিকভাবে উপরওয়ালা যে তা পূরণ করবে বিশ্বাস রাখেন।  পল্টন ময়দানে ঘোষিত ছাত্র জনতা ১ মার্চ  বিকেলের সমাবেশে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চে ভাষণ দেয়ার আগাম কথাটি মনে রেখে তা দিগনির্দেশনাপূর্ণ যেন হয় তার প্রার্থনাও করেন সে সময়ে।

বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনার প্রতিটি শব্দকে হৃদয়ে ধারণ করেছিল গোটা বাঙ্গালি জাতি। নেতার ৭ মার্চের আহবানকে বাঙ্গালি মাত্র তাদের স্ব স্ব ক্ষুদ্র ধারণ ক্ষমতাবলে মনে করত, পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক সম্ভাব্য চরমতম এক আঘাত আসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। তাই তারা বিচ্ছিন্নভাবে মুক্তিযুেদ্ধর প্রস্তুতি শুরু করে। কেরানীগঞ্জের কলাতিয়ায় গগন এমপিএ’র বাড়ির সদ্য ফাঁকা ধানখোলায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগহণেচ্ছুকদের অস্ত্রের আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ, ১৯ মার্চ গাজীপুরে মেজর শফিউল্লাহর বাঙ্গালি ট্রুপ্স নিয়ে পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো, চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ হান্নান-মান্নানেরা ২৬ মাচের্র ইপিআর ওয়্যারলেসের দাবীকৃত বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণায় নিজেরা রাস্তায় রাস্তায় মাইকিং করা, চট্টগ্রামের কালুরঘাটে অবস্থিত রেডিও পাকিস্তানের কর্মীদের দিয়ে তা বিপ্লবী বাংলাদেশ বেতার নামকরণের মাধ্যমে প্রচার করানো, বিশেষ করে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে নোঙ্গর করা এমভি সোয়াত জাহাজে আনানো পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অস্ত্র খালাস করতে যাওয়া মেজর জিয়াকে ক্যাপ্টেন অলির অনুরোধে ফিরানো প্রভৃতি ঘটনা ছিল উল্লেখযোগ্য। 

কালুরঘাটে অবস্থিত তখনকার বেতার কেন্দ্রে মেজর জিয়া পৌঁছালে, ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা বারবার ঘোষিত হওয়ার বিষয়টি মেজর জিয়াকে বেলাল মোহাম্মদ অবগত করেন। এটিও জানান যে, স্বাধীনতার ঘোষণার পরে তো যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা খেলতে চাইলেও তা সামগ্রিক বিচারে মুক্তিযুদ্ধের রূপ ধারণ করেছে। সাধারণ বেতার কর্মীরা মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক অবস্থায় কলম ও কন্ঠযুদ্ধে নামলেও তা বৃহত্তর পর্যায়ে আবেদনযোগ্য হয়ে উঠে নাই। এ ক্ষেত্রে কোন সামরিক ব্যক্তির কন্ঠে তা উচ্চারিত হলে, সত্যিকার যুদ্ধটি যুদ্ধ হয়ে উঠত পারে।

স্বাভাবিক সময়ে সামরিক বাহিনীকে তো যুদ্ধ করার প্রশিক্ষণ দেওয়াই হয় এ জন্য। বছরের পর বছর পার করেও সামরিক বাহিনীতে কর্মরতদের অনেকের জীবিতাবস্থায় যুদ্ধ করবার সুযোগই ঘটে না। এ সময়ে হাসতে হাসতে বেলাল মোহাম্মদ বলে ফেলেন, আপনি সামরিক বাহিনীর মেজর। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা মেজর জিয়ার নিঃসৃত কন্ঠে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে প্রচার পেলে যুদ্ধ রূপের পূর্ণ প্রকাশ ঘটতে পারে। আর বেসামরিক মানুষেরা যুদ্ধক্ষেত্রে মাইনর গণ্য হয়। আবারও বলি মেজর আপনি, যুদ্ধের মেজর কাজে লাগুন। 

সম্ভবতঃ মেজর জিয়া বেলাল মোহাম্মদের কথায় খুশি হন এবং ইংরেজিতে কলম ও কাগজ চান। কাগজ-কলম হাতে ধরিয়ে দিতেই তিনি সামনে থাকা এক কাঠের টেবিলের উপরে খস্খসে নিজের ইংরেজি লিখিত খসড়াটি রেডিওর জন্য পাঠ করেন। পঠিত মেজর জিয়ার ঘোষণাটির কন্ঠ রেকর্ড করেছিলেন বেলাল মোহাম্মদই। আর, কাগজে লিখিত খসড়াটি পকেটে নিয়ে বেলাল মোহাম্মদ রাতেই শহীদ জায়া মুশতারি শফির বাড়ির চুলায় ফেলে পুড়ে ফেলেন।

বাঙ্গালির পোড়া কপাল, কাগজে লিখিত খসড়াটি চুলায় পুড়ে ভস্ম হয়ে যাওয়ার পরে, আমরা ‘ঘোষক’ ও ‘পাঠক’ কাজিয়ায় ইতিহাস ঘুরিয়ে দেয়ার মজায় আছি। মজায় ছিল বাঙ্গালি ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের পরেও। তবে, একদা কথিত ভীরু বাঙ্গালির ইতিহাসে, এমন বিজয়লাভের মজায় মনোরাজ্যে মনমরা ভাবটি কেউই গোপন রাখতে পারে নাই। 

১০ জানুয়ারি ’৭২-এ পাকিস্তানের জেলে আটকাবস্থা থেকে মুক্ত হয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর পা স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে পড়া মাত্র, তার অনুপস্থিতির মর্মযাতনা সে দিনক্ষণে দূর হয় সবার। বাংলাদেশের আসল স্বাধীনতার বিজয় আনন্দ পূর্ণতা পায় যে তখনই! 

লেখকের প্রকাশিতব্য গ্রন্থ ‘ধূর্ত মোস্তাক, ওস্তাদ জিয়া ও শিষ্য এরশাদ’ থেকে নেয়া খন্ডবিশেষ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কর্মী ও ১০টি গ্রন্থের লেখক     

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image