• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৫ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ; ৩০ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে বিপন্ন পথে চশমাপরা হনুমান


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ২৩ আগষ্ট, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ, ০৬:১৪ পিএম
শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে
প্রাণীটির নাম চশমা পরা হনুমান

মো.জহিরুল ইসলাম,মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি:  মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দেখা মেলে বিপন্ন প্রানী চশমাপরা হনুমানের একটু দূর থেকে হঠাৎ যদি দেখা যায়, আমরা অনেকেই বানরের চোখে চশমা পরানো হয়েছে ভেবে ভুল করতে পারি। তবে কাছাকাছি গেলে দেখা যাবে স্পষ্ট হবে, চোখের চারপাশে সাদা রঙের লোমে আবৃত হয়ে চশমার আকার নিয়েছে। এ জন্যই প্রাণীটির নাম চশমা পরা হনুমান। 

জানুয়ারি থেকে এপ্রিল প্রজননকাল। স্ত্রী ১৫০-২০০ দিন গর্ভধারণের পর একটি বাচ্চা প্রসব করে। গড়ে প্রতি দুবছরে একবার বাচ্চা দেয়। বাচ্চারা ৪-৫ মাস বয়স থেকেই শক্ত খাবার খাওয়া শুরু করে। পুরুষ ৫-৬ ও স্ত্রী ৩-৪ বছর বয়সে প্রজননক্ষম হয়। আয়ুষ্কাল প্রায় ২০ বছর। যেহেতু বর্তমানে এরা মহাবিপন্ন, তাই অতি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই নিরীহ এই প্রাণীগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আর তা আমাদের প্রকৃতির ভারসাম্য কিছুটা হলেও নষ্ট করবে

এরা হনুমানের চেয়েও লাজুক প্রকৃতির। দিনের বেলায় ঘন বনের ছায়াযুক্ত স্থানে বিচরণ করতে পছন্দ করে। আর সহজে এরা মাটিতে নামে না। চশমা পরা হনুমান কচিপাতা, ফুল-ফল বীজ ইত্যাদি খেয়ে জীবন ধারণ করে। পানির চাহিদা পূরণ করতে শিশির লেগে থাকা পাতা চেটে খায় ও পানিবহুল লতাগুল্ম খায়। কমলগঞ্জ জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি ও ইকো ট্যুরগাইড মঞ্জুর আহমেদ আজাদ মান্না বলেন, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, রেমা-কালেঙ্গা বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য, চশমা পরা হনুমান চোখে পড়লেও এখন অনেক কমে যাচ্ছে। এখন এটি দিন দিন বিলুপ্তির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এদের টিকিয়ে রাখতে নির্বিচারে গাছপালা ধ্বংস রোধ করে বন্য প্রাণীর খাদ্য ও আবাসস্থল ঠিক রাখতে হবে।

চশমাপরা হনুমান (Spectacles Langur, Phayre’s Langur বা Phayre’s Leaf Monkey)। কালো হনুমান বা কালা বান্দর নামেও পরিচিত। কালো মুখমণ্ডলে শুধু চোখের চারদিকে সাদা । Cercopithecidae গোত্রভুক্ত এই প্রাণীর বৈজ্ঞানিক নাম trachypithecus phayrei। এ দেশের তিন প্রজাতির হনুমানের মধ্যে আকারে এরাই ছোট। সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের  চিরসবুজ বনের বাসিন্দা তারা।

স্ত্রী-পুরুষনির্বিশেষে মাথা থেকে লেজের গোড়া পর্যন্ত লম্বায় ৫৫-৬৫ সেন্টিমিটার। লেজ ৬৫-৮০ সেন্টিমিটার। ওজনে পুরুষগুলো সাত থেকে নয় ও স্ত্রীগুলো পাঁচ থেকে সাড়ে সাত কেজি। চোখের চশমা ছাড়া দেহের বাকি অংশের চামড়া কালো। ঠোঁটের চামড়ার ওপরও সাদার ছোপ রয়েছে। লোমবিহীন মুখমণ্ডল, কান, হাত ও পায়ের পাতা কুচকুচে কালো। পিঠ, দেহের পাশ ও লেজ কালচে ধূসর। বুক, পেট ও দেহের নিচটা সাদাটে ধূসর। নবজাতকের পুরো দেহের লোম কমলা,যা মাস খানেক পর থেকেই ধূসর হতে থাকে।

এরা বৃক্ষবাসী, কখনোই মাটিতে নামে না। ঘুম, চলাফেরা, খাবার সংগ্রহ, খেলাধুলা, গা চুলকানো, বিশ্রাম সবকিছু গাছেই সম্পন্ন করে। সচরাচর একটি শক্তিশালী পুরুষের নেতৃত্বে ১০-১৫টি একটি দলে বিচরণ করে। তবে কোনো কোনো বড় দলে ২-৩টি শক্তপোক্ত পুরুষও থাকতে পারে। প্রতিটি দলের নির্দিষ্ট বিচরণ এলাকা রয়েছে, যেখানে অন্যরা প্রবেশ করে না।

এরা গাছের মগ ডালে ডালে ঘুরে পাতা,পাতার বোঁটা, ফুল, ফল ও কুঁড়ি খেয়ে জীবন ধারণ করে। উদ্ভিদের পরাগায়ন ও বংশবৃদ্ধিতে বেশ সাহায্য করে। পাতা ও গাছে জমে থাকা পানি ও শিশির পান করে তৃষ্ণা মেটায়। ‘চেং কং’ শব্দে ডাকে।

ঢাকানিউজ২৪.কম /

আরো পড়ুন

banner image
banner image