
জাকারিয়া মিঞা,ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা সদর থেকে সামান্য দূরে অন্যতম দর্শনীয়স্থান ফুলসাগর লেক। এই ফুলসাগর লেকের দক্ষিণ পাড় ঘেঁষেই নীলকমল নদ। আবাসনের ১৮০ ঘর বাসিন্দাসহ আশপাশের ৩ টি গ্রামের ১০ হাজারেরও বেশি মানুষের পারাপারের জন্য এ নদের উপর নির্মাণ করা হয় ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের কাঠের সেতু ও পাকা সংযোগ সড়ক।
কাঠের এ সেতুটির বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে পড়ায় বর্তমানে পারাপারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সেতুটি এ অঞ্চলের মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলেও এর সংস্কার কিংবা নতুন পাকা সেতু নির্মাণে জনপ্রতিনিধিদের দ্বায়িত্বহীনতার অভিযোগ স্থানীয়দের।
বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের সেতু ভেঙ্গে পড়ার ঘটনা উল্লেখ করেন বালাটারি গ্রামের বাসিন্দা আয়নাল হক, আবুল হোসেন ও নুর ইসলাম। তারা বলেন, গত ইউপি নির্বাচনে তিনি নির্বাচনী সভা করতে এই সেতু দিয়ে পার হওয়ার সময় সেতু ভেঙ্গে মোটরসাইকেলসহ নিচে পড়ে যান। পরে আমরা স্থানীয়রা ওনাকে উদ্ধার করি। এসময় ছকমল নামের এক ব্যক্তির হাতও ভেঙ্গে যায়। ওয়াদা করেছিলেন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে সেতুর ব্যবস্থা করবেন। চেয়ারম্যান ছাড়া অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরাও সেতুটির সংস্কার কিংবা নতুন করে নির্মাণে এগিয়ে আসেননি বলেও এলাকাবাসীর অভিযোগ।
মঙ্গলবার বিকালে সেতু স্থলে গিয়ে দেখা গেছে, জরাজীর্ণ সেতুটির বিভিন্ন অংশ ভেঙে গেছে। কিছু অংশে পাটাতনের তক্তা ভেঙ্গে পড়ে ফাঁকা হয়ে গেছে। সেতুর খুটিগুলোর এতোই নড়বড়ে অবস্থা যে উপরে উঠলেই সেতুটি দুলতে থাকে। তবুও ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে সেতু দিয়েই নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ অনেকেই পারাপার হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, বর্তমানে সেতুটি পারাপারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হলেও এই সেতু দিয়েই পারাপার হচ্ছি। পারাপার হতে গিয়ে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। কয়েকদিন আগে সন্ধ্যা বালা নামের ৬২ বছরের এক বৃদ্ধা সেতু থেকে পরে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছিল। প্রায়ই সেতু দিয়ে মালামাল পারাপারের সময় দুর্ঘটনা ঘটে। এভাবে চলতে থাকলে যে কোন সময় প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা অনেকের।
সেতু দিয়ে পারাপারে জনভোগান্তির সত্যতা স্বীকার করে সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ বলেন, আগে যাতায়তের জন্য এখানে বাঁশের চাটাইয়ের তৈরি সেতু ছিল। আমি এখানে কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণের পরে বিভিন্নভাবে কয়েক দফায় সেতুর মেরামত করা হয়েছে। বর্তমানে এটি আর মেরামত যোগ্য নয়। আর পাকা সেতু নির্মাণের সামর্থ ইউনিয়ন পরিষদের নেই। তাই জনগনের ভোগান্তি লাঘবে এখানে পাকা সেতুর নির্মানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন দাস বলেন, সরেজমিনে সেতুটি পরিদর্শন পূর্বক জনসাধারণের নিরাপদ যাতায়াতের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: