ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ কৃষি নির্ভর দেশের উত্তরে র জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে এবার চৈত্র- বৈশাখ মাসের মতো খরা। কোথাও বৃষ্টির ছিটেফোটা নেই। বৃষ্টি না হওয়াতেই দূচিন্তায় পড়েছেন কৃষক।
আর এ খরার তীব্রতায় রোপা আমন ধানের জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। রোদে পুড়ে বিবর্ণ হয়েছে রোপা আমন ধানের চারাগুলো।
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সরেজমিন জেলার পাঁচটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ফসলের মাঠ ঘুরে রোপা আমন ধানের জমিতে এমন চিত্র চোখে পড়েছে।
জেলার মন্ডলাম, ধর্মপুর, ঢোলারহাঁট, কুজিশহর, লক্ষিরহাঁট, ডিহাট, গড়েয়া, ঘিডোব, মহবৎপুর সহ শতাধিক গ্রামে মাঠে এখন রোপা আপন ধানের জমি সবুজে ভরে গেছে। তবে, পানির অভাবে অধিকাংশ ধানক্ষেত ফেটে চৌচির। প্রচণ্ড তাপদাহে ধান গাছ বিবর্ণ হচ্ছে। কোথাও কোথাও কৃষক শ্যালো মেশিন বা বৈদ্যুতিক মোটরের মাধ্যমে রোপা আমন ধানের জমিতে সেচ দিচ্ছেন।
ধর্মপুর গ্রামের কৃষক সমারু বলেন, বর্ষা মৌসুমে আমন ধান চাষ করা হয়। এ মৌসুমে বৃষ্টির পানি থাকায় ধান চাষে সেচের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু এ বছর চাহিদা অনুযায়ী বৃষ্টি নেই। ফলে আমন ধানের ক্ষেত ফেটে যাচ্ছে।
মধুপু গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, তিনি ২ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। বৃষ্টির পানিতে রোপা আমন ধানের ফলন ভালো হয়। কিন্তু এ বছর চাহিদা অনুযায়ী বৃষ্টি না হওয়ায় শ্যালো মেশিন ও বৈদ্যুতিক মোটর চালিয়ে জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে।
বিশ্রামপুর গ্রামের কৃষক ললিত জানান, পানির ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি না থাকায় জমি ফেটে যাচ্ছে। অথচ আর্থিক সংকটে তিনি জমিতে সেচ দিতে পারেননি। পানির অভাবে ধান গাছ বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, ফসলের ক্ষেত ফেটে চৌচির হওয়ায় জমির ফসল নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। শ্যালো মেশিন কিংবা বৈদ্যুতিক মোটর চালিয়ে রোপা আমন আবাদ উপযোগী নয়। বৃষ্টির পানিতে রোপা আমন চাষ ভালো হয়।
এদিকে, অবস্থাপন্ন কৃষকরা ভূগর্ভস্থ পানি দিয়ে আমন ক্ষেতে সেচ দিয়ে ধানের চারা রক্ষার চেষ্টা করছেন। ১ বিঘা (৫০ শতক) জমিতে একবার করে কৃত্রিম সেচ দিতে ৪০০ টাকা হিসাবে ব্যয় হচ্ছে। এমতাবস্থায় মাসে ৫ বার পানি দিলে প্রতি বিঘায় শুধু সেচ বাবদ কৃষকের বাড়তি ২ হাজার টাকা খরচ হবে। অথচ বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি থাকলে অত্যন্ত অল্প খরচে কৃষকরা আমন ধান ঘরে তুলতে পারেন।
ঠাকুরগাঁও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণ রায় বলেন, চলতি মৌসুমে তুলনামুলক কম বৃষ্টি হয়েছে। যা আমন চাষের উপযোগী নয়। প্রচণ্ড তাপদাহে আমন ক্ষেত ফেটে যাওয়ায় বিভিন্ন পদ্ধতিতে কৃষকে ক্ষেতে পানি দিচ্ছেন। এছাড়া তাপদাহ মোকাবেলা করে আমন চাষ করার বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / গৌতম চন্দ্র বর্মন/কেএন
আপনার মতামত লিখুন: