নিউজ ডেস্ক : ঢাকার খিলগাঁওয়ে মনসুর আহমেদ এর কাছ থেকে এম এস রিয়াজ একটি ফ্ল্যাট ক্রয়ের চুক্তিপত্র করেন। কিন্তু এখন উক্ত ফ্লাটটি বুঝিয়ে না দিয়ে মনসুর আহমেদ এম এস রিয়াজকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকী দিচ্ছেন।
চুক্তিপত্রে উল্লেখ্য যে, এখ. এম রিয়াজ, পিতা এস এম আজমী, স্থায়ী সাং উত্তর কাট্রালী, আতর আলী চৌধুরী বাড়ী, পোঃ উত্তর কাট্টলী ৪২১৭, পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম। এ/পি, হোল্ডিং নং- ১৮৪, দক্ষিণ গোড়ান, অপ্যার্ট সামছুদ্দিন টাওয়ার ৯ তলা ভবন, পোঃ খিলগাঁও-১২১৯, থানা- খিলগাঁও, দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা এর ২য় তলা ২(এ), মোঃ মনসুর আহমেদ মালিকানাধীন ফ্ল্যাটটিতে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করিতে থাকাকালীন মনসুর আহমেদ সাথে সুসম্পর্ক গড়িয়া ওঠে এবং উক্ত সুসম্পর্কের সুবাদে মনসুর আলী তাহার পারিবারিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে জরুরী ভিত্তিতে টাকার দরকার পড়িলে উক্ত ফ্ল্যাটটি আমার নিকট বিক্রয়ের প্রস্তাব করিলে আমি মনসুর আহমেদ সাথে ফ্ল্যাট ক্রয়ের চুক্তিপত্র করি। উক্ত চুক্তিপত্রের মাধ্যমে অদ্য পর্যন্ত উক্ত ফ্ল্যাটে বসবাস করিয়া আসিতেছি। মনসুর আহমেদ সাথে তাহার ভাইদের বিরোধ আছে, তাহাদের সম্পর্ক ভালো না। পরবর্তীতে মনসুর আহমেদ সহ তাহার ভাইরা আমাকে উক্ত ফ্ল্যাট হইতে উচ্ছেদ করিবার পায়তারা করিতেছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বিগত ০৬৯/০৮/২৪ ইং তারিখে আনুমানিক সন্ধ্যা ৭:৩০ ঘটিকার সময় আমি বাসার নিচে নামিলে (১) মনসুর আহমেদ, পিতা- সামসুদ্দিন, সাং- ১৮৪, দক্ষিণ গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা এর নির্দেশে (২) আনসার আলী (৪০) পিতা: মৃত সামছুদ্দিন সাং- ১৮৪ দক্ষিণ গোড়ান ৯ম তলা, খিলগাঁও, ঢাকা (ফ্ল্যাট মালিকের আপন ভাই), (৩) মাঈনউদ্দিন (৩৮) পিতা: অজ্ঞাত, শশুর হযরত আলী (১ নং আসামীর বড় ভাইয়ের মেয়ের জামাই), সাং- ১৮৪ দক্ষিণ গোড়ান, ৬ষ্ঠ তলা, খিলগাঁও, ঢাকা (৪) রাজু (২৫), পিতা- মৃত খালেক (১নং আসামী আনসার আলীর ভাগিনা), সাং- দক্ষিণ গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা, (৫) ইলিয়াস, পিতা- অজ্ঞাত, সাং- দক্ষিণ গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা, (৬) হোসনে আরা, পিতা- সামসুদ্দিন, সাং- ১৮৪ দক্ষিণ গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা, (৭) সামসুন নাহার, স্বামী- সামসুদ্দিন, ১৮৪ দক্ষিণ গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা, (৮) সিফাত, স্বামী আনসার আলী, সাং- ১৮৪ দক্ষিণ গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা, (৯) সোহান (২৫), পিতা- অজ্ঞাত, মাতা- জহুরা বেগম, সাং- ১৮৮ দক্ষিণ গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা (১০) মিঠু, পিতা- অজ্ঞাত, দক্ষিণ গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা এবং মহিলাসহ অজ্ঞাত আরও ২০/৩০ জন আসামী যাদের ১-৬নং আসামীগণ চিনেন, জানেন এবং আমি দেখিলে চিনবো। উক্ত আসামীগণ লাঠি, মোটা এসএস পাইপ, লোহার রড, শাবল, দা-বটি, সহ বিভিন্ন প্রকার হাতিয়ার দেখিতে পাই। ২নং আসামী আমার পথ আটকাইয়া বলে যে, ফ্ল্যাটের চুক্তিপত্র দে আর তুই বাসা থেকে বের হও এই বলিয়া আসামীগণ আমাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারিতে থাকেন। তাহাদের হাতে থাকা, লাঠিসোটা, এসএস পাইপ দিয়া আমাকে বেদম প্রহার করিয়া আমাকে গুরুতর আহত করিয়া আমাকে সাথে করে নিয়ে ২য় তলায় এসে ২-৪নং আসামীগণ তাহাদের হাতে থাকা লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে আমার ফ্ল্যাটের মূল দরজার তালা ভাংগিয়া ফেলে এবং অন্যান্য আসামীগণ পিছনের তালা ভাঙ্গিয়া ফ্ল্যাটের ২টি দরজা দিয়ে আসামীগণ আমার ফ্ল্যাটে জোর পূর্বক প্রবেশ করে। অতঃপর আমাকে, আমার ছোট ভাই ভাগনিকে লাঠিসোটা, পাইপ, লোহার রড দিয়ে গুরুতর আঘাত করিয়া রক্তাক্ত করে। ২ নং আসামির হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দা দিয়া আমার মাথায় আঘাত করিলে আমার মাথা ফাটিয়া রক্ত বের হইতে থাকে। ৩ নং আসামির হাতে থাকা রড দিয়া আমার পায়ে ও কোমরে গুরুতর জখম করে। ৪ নং ও ৫ নং আসামির হাতে থাকা মোটা এস.এস পাইপ দিয়া আমার দুই যাতের বাছতে, পিঠে এবং শরীরের অন্যান্য স্থানে গুরুতর আঘাত করে নীলাফুলা যখম করে। ৬নং আসামীর হাতে থাকা ইট দিয়া আমার নাকে আঘাত করে এতে আমার নাক ফাটিয়া অক্ত বের হইতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি মাটিতে পড়ে গেলে ২-৬নং এবং অজ্ঞাতনামা আসামীগণ সবাই মিলে আমাকে এলোপাথারি বিল মুষি লাথি মারিতে থাকে এবং হাতে থাকা লাঠি দিয়া শরীরের বিভিন্ন আয়গায় গুরুত্বর আঘাত করে। প্রমানস্বরুপ রক্ত মাখা টি শার্ট এবং টাউল্লার আমার কাছে আছে। ২, ৭ ও ৮নং আসামীগণ আমার আগিনি চায়না খাতুন ছন্দাকে (শিক্ষানবীশ আইনজীবি) চর-থাপ্পর ও কিলঘুষি মারিতে থাকে। এক পর্যায়ে ২নং আসামী আমার ভাগ্নির চুল ধরিয়া টানাটানি করে। ৭ ও ৮নং আমার ভাগ্নির চুল ধরিয়া টানিয়া মাটিতে ফেলে দেয়। ২নং আসামী ভাগ্নির গলায় পারা দিয়া ধরে। ৬-৮নং আসামীসহ অজ্ঞাত আসামীগণ তাহাদের হাতে থাকা লাঠি দিয়া এলোপাথারি আঘাত করিয়া আমার ভাগ্নির শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে। আসামীগণ আমার ভাগ্নির শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় ও শ্রীলারা হানী করে। ৯ ও ১০নং আসামীদ্বয় সহ অজ্ঞাত আসামীগণ আমার ছোট ভাই আয়াজকে তাহাদের হাতে থাকা লাঠি, এস.এস পাইপ এবং রড দ্বারা মারিতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার ছোট ভাই তাহাদেরকে ধাক্কা দিয়া দৌড় দিয়া ঘটনাস্থল হইতে পালাইয়া যায়। এরপর আসামীগণ আমার ফ্ল্যাটের সকল জিনিসপত্র আসবাবপত্র সব লুটপাট করা শুরু করে। ১-১০নং আসামীগণ দুটি ওয়ার্ডব এবং কম্পিউটার টেবিলের ড্রয়ারের তালা ভাঙ্গিয়া প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন সকল একাডেমিক মূল সার্টিফিকেট, অফিসিয়াল গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র এবং ফ্ল্যাট মালিক মনসুর আহমেদ সাথের লেনদেনের সকল কাগজপত্র ছিড়ে টুকরো টুকরো করে এবং অফিসিয়াল অনেক গুরুত্বপূর্ন কাগজ ছিড়ে ফেলে এবং ওয়ার্ডবে রক্ষিত সোনার গহনা, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী আসামীগণ লুটপাট করে নিয়ে যায়। ১-১০নং সহ অপরাপর অজ্ঞাত আসামীগণ আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করিয়া নিম্নলিখিত মূল্যবান ইলেকট্রনিক্স মালামাল স্বর্ন টাকা লুট করিয়া লইয়া যায় যেমন- (১) কম্পিউটার- ২ সেট আনুমানিক মূল্য- ১,৫০,০০০/- (২) স্কেন মেশিন ও প্রিন্টার (আনুমানিক মূল্য- ২০,০০০/-) (৩) আইপিএস (আনুমানিক মূল্য- ৩৭,০০০/- টাকা (৪) বড় সাইজ এর ২টি সাউন্ড বক্স এম্পলি ফায়ার সহ আনুমানিক মূল্য- ২৫,০০০/- টাকা (৫) লাগেজ (বড়) ১টি (যাহাতে- জরুরী কাগজপত্র এবং রেজার ছিল) (৬) ১টি আইফোন সেভেন যাহার মূল্য আনুমানিক ১,৫০,০০০/- টাকা (৭) ওয়ার্ডব এর তালা ভেঙ্গে ১২ ভরি স্বর্ণালংকার যাহা ওয়ার্ডব এ রক্ষিত ছিল (যাহার আনুমানিক মূল্য ১৩,২০,০০০/- টাকা (৮) ওয়ার্ডব এ রক্ষিত নগদ ৫,৬৫,০০০/- লক্ষ টাকা যাহা ওয়ার্ডব এর তালা ভাঙ্গিয়া লুট করিয়া লইয়া যায়, (৯) সনি টিভি (৪২ ইঞ্চি) আনুমানিক মূল্য ৩০,০০০/- (ত্রিশ হাজার) টাকা, (১০) ফ্রিজের ইউপিএস আনুমানিক মূল্য ৫,০০০/- (পাঁচ হাজার), (১১) ফার্নিচার সহ অন্যান্য গৃহস্থালির সামগ্রী আনুমানিক মূল্য ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা। পরবর্তীতে আমি প্রাণভয়ে ফ্ল্যাট হইতে নিচে নামিয়া আসিলে কিছু মালামাল ও আসবাবপত্র নিচের গ্যারেজে পড়িয়া থাকতে দেখি এবং বাসা থেকে বের হয়ে আশেপাশের কিছু লোকজনকে আমার ভাগ্নিকে রক্ষা/বাঁচানোর জন্য পাঠাই। অতঃপর আমার বাসার ফ্ল্যাট মালিক ১নং আসামীকে ফোন করিয়া ঘটনার বর্ণনা করিলে তিনি আমাকে বলেন, আমি বাসার আশপাশেই আছি, আপনি বাঁচতে চাইলে ফ্ল্যাট ছাড়িয়া অন্যত্র চলিয়া যান, নয়তো আপনাকে ও আপনার পরিবারের সদস্যদের জানে মারিয়া ফেলিবে। এই বলিয়া ফোন রাখিয়া দেয়।
১-১০নং আসামীগণ সবাই পরস্পর ফ্ল্যাট মালিকের আত্মীয়-স্বজন এবং একই পরিবারের সদস্য। তাহাদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ পারিবারিক কোন্দল চলিয়া আসিতেছিল এবং তাহারা দীর্ঘদিন যাবৎ আমাকে ফ্ল্যাট হইতে উচ্ছেদের পায়তারা করিতেছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আসামীগণ আমার ফ্ল্যাটে আক্রমণ করে। ১-১০নং সহ অজ্ঞাত আসামীগণ ঘটনাস্থল এবং এর আশেপাশে বসবাস করে।
২নং আসামী আমার ফ্ল্যাট মালিকের আপন ভাই, তাহাদের দীর্ঘদিন যাবত পারিবারিক কোন্দল-বিরোধ চলিতেছে এই বিরোধের জের ধরিয়া ১ ও ২নং আসামীগণ আমার বসবাসরত ফ্ল্যাট বাসা হইতে আমাকে ইতিপূর্বেও উচ্ছেদের পায়তারা করিয়াছে। ২নং আসামী আমার বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র করিয়াছে এবং সতরীতি প্রদর্শন করিয়াছে। বিগত ২৯/১২/২২ ইং আরবে গিও বানায় জিডি সায়ের করা হয় খাবার নং- ২১৫২ এবং বিগত ২৭/০৩/২০২৩ ইং তারিখে এবং আসামীর বিরুদ্ধে জিডি করা হয় (যাহার জিডি নং ২০৫২০, তাং- ২৭/০৩/২০২০) পরবর্তীতে জিডি নং ২০৫২/২৩ আলোকে একটি নন এফ আই আর ৫৯৯/২৩ মামলার উরগ হয়। গায়া এখনও বিজ্ঞ মেজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীণ আছে। আসামীগণ দীর্ঘদিন যাবৎ আমার ক্ষতিসাধন করায় সুযোগে ছিল।
বিগত ০৫/০৮/২৪ ইং তারিখে সরকারের পতন হওয়ার পরের দিন পূর্ব থেকেই তৈরী হয়ে থাকে আসামীগণ। আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে পিটিয়েছেন। এভাবে আমার মালামাল টাকা স্বর্ন লুটপাট করার পর আমি পরিবারের সদস্যদের শইয়া প্রথমে এলাকার ইয়া ফার্মেসিতে (গোড়ান ট্যাম্পুস্ট্যান্ড) প্রাথমকি চিকিৎসা লইয়া দ্রুত মুগদা হাসপাতালে যাই এবং চিকিৎসা নেই। পরবর্তীতে আমার আশেপাশের লোকজন নিয়া বাসায় আসিলে ২নং আসামী এলাকার লোকজনের চাপে পড়িয়া লিখিত আকারে এই মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে আমি এই ফ্ল্যাট হাড়িয়া অন্যত্র চলিয়া যাইব এই মর্মে ৩০০ টাকার স্টাম্পের উপর লিখিত দেয় এবং সই স্বাক্ষর নেয় (যাহার স্ট্যাম্প নং- খস৩৪৮৬৫৭৯-৮১ পর্যন্ত ১০০ টাকার ৩ টি স্ট্যাম্প। তারপর আমাকে আবার ফ্ল্যাটে উঠতে দেয় এবং ২ নং আসামী বলে যে, এই মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে অন্যত্র চলিয়া না গেলে জানে মারিয়া ফেলব। পরবর্তীতে আমি আমার ফেলে রাখা আসবাবপত্র মালামাল লইয়া উক্ত ফ্ল্যাটে উঠি। এলাকার আশেপাশের সিসি ক্যামেরা ঘটনার সত্যতা প্রমান করিবে। সরকারের পতনে দেশের অবস্থান ভাল না থাকায় এবং থানার কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারনে মামলা দায়ের করতে বিলম্ব হয়।
আমি উক্ত ফ্লাটটি পেতে এবং হুমকী থেকে মুক্তি, ন্যায়বিচার পেতে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: