
সুমন দত্ত: বাংলাদেশে হিন্দু আইন পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন নেই। এই আইনে যা আছে তার একটি শব্দও পরিবর্তন করতে চায় না এদেশের হিন্দু সমাজ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে একটি কুচক্রী মহল মিডিয়ায় মিথ্যা বিবৃতি দিয়ে দেশে একটি বিশৃঙ্খল অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। এদের পাতা ফাঁদে হিন্দুদের না জড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন ৪০টি হিন্দু সংগঠন নিয়ে গঠিত হিন্দু আইন পরিবর্তন প্রতিরোধ সম্মিলিত পরিষদ।
শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নবগঠিত পরিষদের পক্ষে সভাপতি বিশিষ্ট আইনজীবী ড. জে কে পাল ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার রায়। এদিন তার সঙ্গে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হিন্দু সংস্কার সমিতির সভাপতি ও পরিষদের সমন্বয়ক অধ্যাপক হীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ হিন্দু আইনজীবী পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায়।
বক্তারা হিন্দু উত্তরাধিকার আইন পরিবর্তনের বিষয়ে তীব্র নিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, সনাতনী সমাজে বিবাহ কোনো চুক্তি নয়, এটি একটি পবিত্র ব্রত। এখানে দেবতাকে সাক্ষী করে পবিত্র বেদমন্ত্র উচ্চারণ করে বর কনে কে একাত্মার ঐশী বন্দনে আবদ্ধ করে দেয়া হয়। তাই বিবাহের মাধ্যমে স্বামী স্ত্রী শাস্ত্রবিধি ও হিন্দু আইন অনুসারে অবিচ্ছেদ্য-ভাবে একাত্ম হয়ে যান। সে কারণেই স্ত্রীকে বলা হয় সহধর্মিণী বা অর্ধাঙ্গিনী। তারা পরিবারের সম্পত্তি যৌথভাবে ভোগ করে থাকেন। যুগ যুগ ধরে এদেশের হিন্দু সমাজ এসব শাস্ত্রীয় বিধি বিধান মেনে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। এটি হিন্দু পরিবারে একটি ভারসাম্যপূর্ণ আইন। কতিপয় এনজিও ও একটি বিশেষ মহলের কারসাজিতে তা বিনষ্ট করা এবং বাংলাদেশকে অচিরেই হিন্দু শূন্য করার ষড়যন্ত্র বলে মনে করা হচ্ছে।
হিন্দু সমাজ তাদের পারিবারিক আইন পরিবর্তন করতে চায় না। আইন কমিশনের সুপারিশকৃত আইন হিন্দু পরিবারগুলোতে কলহ সৃষ্টির নীল নকশা মাত্র। হিন্দু পারিবারিক আইন পরিবর্তন না করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ চায় বাংলাদেশের হিন্দুরা। হিন্দুরা সরকারের কাছে চায় হিন্দু সুরক্ষা আইন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়, সংখ্যালঘু কমিশন ও আসন্ন দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা এবং তিন দিনের ছুটি।
এদিন সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রদীপ আচার্য, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন বাংলাদেশ) এর সাধারণ সম্পাদক শ্রী মৎ স্বামী চারুচন্দ্র ব্রহ্মচারী, রুপানুগ গৌরদাস ব্রহ্মচারী ও চিন্ময় গদাধর ব্রহ্মচারী, শ্রী শ্রী প্রণব মঠের সংগীতানন্দ মহারাজ, অ্যাডভোকেট প্রবীর হালদার, অ্যাডভোকেট জয়া ভট্টাচার্য, অ্যাডভোকেট তাপস কুমার পাল, অ্যাডভোকেট কিশোর কুমার মণ্ডল, হিন্দু লীগের সাধারণ সম্পাদক শংকর সরকার, বিনয় দাস রিকো, মহানাম সম্প্রদায় (বাংলাদেশ) শ্রীমৎ কান্তি ব্রহ্মচারী, বাংলাদেশ হিন্দু ল ইয়ারস অর্গানাইজেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট নারায়ণ চন্দ্র দাস, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শংকর চন্দ্র দাস, ব্রহ্মণ সংসদ সভাপতি লে কর্নেল নিরঞ্জ ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক বিজয় ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের সভাপতি ড. সোনালি রাণী দাস, সাধারণ সম্পাদক এম কে রায়, নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে, বাংলাদেশহিন্দু পরিষদের সভাপতি দিপঙ্কর শিকদার দিপু, সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্র, অনুপ কুমার দত্ত, শ্রী শ্রী স্বামী ভোলানন্দগিরি আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক রঘুপতি সেন, নন গোপলা মজুমদার, শারদাঞ্জলি ফোরামের ঢাকা মহানগরে সভাপতি রতন চন্দ্র পাল, ভক্ত সংঘ বাংলাদেশের সভাপতি নিত্য গোপাল ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক অনিল পাল, জাগো হিন্দু পরিষদ বাংলাদেশ শাখার ও পতঞ্জলী যোগসংঘের দেবব্রত সরকার দেবু, সৎ সংঘ ফাউণ্ডেশনের ড. নলিনী রঞ্জন বসাক, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাংলাদেশ শাখার সহ সভাপতি সুবীর সাহা ও সাধারণ সম্পাদক কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল। বাংলাদেশ মাইনোরিটি সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক অশোক তরু, শ্রী গুরু সংঘের সাধারণ সম্পাদক মনঞ্জয় কৃষ্ণ দত্ত, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের পলাশ দাস, হিন্দু হেরিটেজ ফাউণ্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মানিক চন্দ্র সরকার, বাংলাদেশ হিন্দু সেবক সংঘের সাধারণ সম্পাদক রাজীব ভদ্র, বাংলাদেশ সচেতন হিন্দু পরিষদের সভাপতি গৌতম রায়,শ্যামল ঘোষ, বাংলাদেশ হিন্দু লীগের অধ্যাপক প্রশান্ত বিশ্বাস, জাতীয় শ্রী শ্রী শিব মন্দিরের এসকে বাদল, মিহির বৈরাগী, গীতা সংঘ বাংলাদেশের উত্তম দাস, শ্রী বিমল চন্দ্র চক্রবর্তী, লিটন কৃষ্ণ দাস।
ঢাকানিউজ২৪.কম / এসডি
আপনার মতামত লিখুন: