সুমন দত্ত: পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক স্থাপনা বাহাদুর শাহ পার্কের সৌন্দর্য নষ্ট করে ও সেখানকার পরিবেশ ধ্বংস করে রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করেছে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপসের স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ লোকজন।
হাটাহাটি ও শরীর চর্চার জায়গা সংকুচিত করে এই অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করায় এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়।
এ দিন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য সচিব আখতারুজ্জামান খান, আহবায়ক অধ্যাপক ডা আবদুল মান্নান, এ কে রিয়াজউদ্দিন, শাহ আলম ভূঁইয়া, কাজী মো. রায়হান জামিল, অ্যাডভোকেট আবদুল সাত্তার,মো মীরুজ্জামান খান, কাজী খসরু, মোকামাল হোসেন,হাবিবুর রহমান, অ্যাডভোকেট ইলিয়াস, উজ্জ্বল বিশ্বাস।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, পুরান ঢাকার ঘন বসতি পূর্ণ এলাকায় এই একটি মাত্র পার্ক। যেখানে লোকজন সকাল সন্ধ্যায় হাটাহাটি ও হালকা শরীর চর্চা করে। বন্ধের দিনগুলিতে পার্কের ভিতর লোকজনের প্রচণ্ড ভিড় হয়। এমন স্থানে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সেখানে দুটি রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ঐতিহ্যবাহী এই পার্কের সৌন্দর্য নষ্ট করে গাছের উপর বৈদ্যুতিক বাতি লাগিয়ে পার্কটিকে একটি বাণিজ্যিক রুপ দেওয়া হয়েছে। এখানে কোনো সময়ই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল না। পার্কটিকে ব্যবসায়িক স্বার্থে ব্যবহার এই প্রথম। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে বিপ্লবীদের ধরে এনে এখানে মেরে ফেলত। তাদের স্মরণে এখানে নির্মাণ করা হয়েছে স্মৃতি স্তম্ভ। সেই স্মৃতিস্তম্ভের উপরে লেখাও রং দিয়ে মুছে দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে পার্কটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়। এবং পার্কটিকে লোহার বেষ্টনি দিয়ে ঘিরে রাখার দাবি করা হয়।
তারা আরো বলেন, পার্কের যে স্থানে আগে লোকজন শরীর চর্চা করতো সেই স্থান দখল করে রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করা হয়েছে। তারপর রেস্টুরেন্ট ঘিরে লোকজন বসার জন্য অস্থায়ী ছাতা ও চেয়ার টেবিল পাতা হয়েছে। এসব অবকাঠামো নির্মাণ করায় ব্যায়ামের জায়গা ছোট হয়ে গেছে। পার্কের একটি অংশে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। এখানে একটি নবাবদের সমাধিও রয়েছে। সেই সমাধির পাশ ঘেঁষে এই রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করা হয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, মেয়র তাপস প্রথমে আশ্বাস দিয়েছিল এখানে এসব হবে না। পরবর্তীতে রেস্টুরেন্ট নির্মাণ হলে তিনি আর সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে দেখা করতে চাননি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যারা এই রেস্টুরেন্ট ইজারা নিয়েছে তারা মেয়র তাপসের স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ লোকজন। স্থানীয় এমপি কাজী ফিরোজ রশিদও এ বিষয়ে দুর্বল অবস্থান নিয়েছেন। মেয়র তাপস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় হওয়ার কারণে প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব হচ্ছে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / এসডি
আপনার মতামত লিখুন: