• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

কিশোরগঞ্জের হাওর যেন হলুদ সমুদ্র, ভীড় করছেন পর্যটকরা


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ১২:১১ পিএম
শীতে কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইন
হাওর যেন হলুদ সমুদ্র

বিজয় কর রতন, মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জের শতভাগ হাওর অধ্যুষিত উপজেলা মিঠামইনের মাঠ প্রান্তরে এখন যেন হলুদ চাদর বিছানো এক হলুদ সমুদ্র। সরিষা ফুলের হলুদরঙ, ঘ্রান আর মৌমাছির গুঞ্জন আকৃষ্ট করছে প্রকৃতি প্রেমিদের। এবার সরিষার বাম্পার ফলনে খুশি কৃষকও। ফুলে ফুলে মৌমাছির গুঞ্জন। ফুলে থাকা মধুর লোভে উড়ে বেড়াচ্ছে মৌমাছিরা। সরিষা ফুলের ঘ্রান আর হালকা বাতাসে গাছের দুলনিতে উঠে হলুদ ঢেউ।

এ দৃশ্য মুগ্ধ করবে যেকোন প্রকৃতি প্রেমিকে। শীতে কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইনের ফসলের মাঠ জুড়ে দেখা মিলবে এমন দৃশ্যের। এ যেন হলুদ চাদরে ঢাকা। যতদূর চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। প্রকৃতিতে হলুদের আভা এনেছে সরিষা ফুল। সকালে শিশিরে ভেঁজা ফুলের সৌন্দর্য বাড়ে আরও। প্রতি বছর এ মৌসুমে হলুদের এমন অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভীড় জমান প্রকৃতিপ্রেমিরা।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, মাঠে মাঠে সরিষার রাশি রাশি হলুদ। ফুলে ফুলে মৌমাছির উড়া উড়ি করছে। সরিষা ফুলের ঘ্রাণে ভাসছে মাঠের হাওয়া। এ যেন হলুদের সমুদ্র। অনেক দর্শনার্থী সরিষার মাঠে আসছেন সৌন্দর্য দেখতে। নরসিংদি জেলার
মনোহরদী উপজেলা থেকে ঘুরতে আসা আবুল বাসার বলেন, ভরা বর্ষায় হাওরের থৈ থৈ পানির সৌন্দর্য দেখতে এসেছিলাম। এখন যেখানে পানি ছিলো সেখানে সরিষা ফুলের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য দেখতে এসেছি। সরিষা ফুলের সাথে ছবি তুলতেছি, খুব ভালো লাগছে।

হাওরে আসার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভালো, তাই আসা-যাওয়া সহজ। মিঠামইনের খুনখুনি হাওরের জিরাতি কৃষক আঞ্জু মিয়া জানান, আমার বাড়ি করিমগঞ্জ উপজেলায়। এ হাওরে আমার জমি আছে। পানি নেমে যাওয়ার পর ছয় মাসের জন্য অস্থায়ী ঘর বানিয়ে আমি এ জমিতে বোরো আবাদ করি। কয়েক বছর ধরে কৃষি বিভাগের পরামর্শে পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে সরিষার আবাদ করছি।

এর আগে এমন সময়ে জমি পতিত থাকতো। ৭০ থেকে ৭২ দিনে সরিষার ফলন হয়। পরে আবার এ জমিতেই বোরো আবাদ করি। তাই এটা আমার বাড়তি ফসল। এ ফসলের টাকা দিয়ে বোরো আবাদের খরচ হয়ে যায় আমার। ১৫ একর জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। এবছর সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে, তাই খুশি আমি।

মিঠামইন উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. আনিছুর রহমান জানান,এ বছর মিঠামইনে ২০৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। সরকারী ভাবে ১১১০জনকে প্রনোদনা দেওয়া হয়েছে। মিঠামইন উপজেলার ৪৫০জন কৃষক সরিষা আবাদ করেছে। সরকারি আদেশ ৪০ শতাংশ ভোজ্য তেল দেশেই উৎপাদন করতে হবে। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। হাওরের জমি গুলো ৬ মাস পানির নীচে থাকে। বাকি ৬ মাসে একটিমাত্র ফসল হয় বোরো ধান। পানি নেমে যাওয়ার পর বোরো আবাদ ব্যহত না করে স্বল্প সময়ে এ সরিষার আবাদ হচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা কৃষকদের উৎসাহ দিয়ে পাশে থেকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এছাড়াও, সরিষা বীজ এবং সার বিনা মূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে কৃষকদের মাঝে। এতে করে প্রতি বছরই সরিষার আবাদ বাড়ছে। বাজারে বর্তমানে প্রতি মণ সরিষার মূল্য তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। ভাল দাম এবং কম সময়ে বাড়তি ফসল হিসাবে পাওয়ায় সরিষা আবাদে আগ্রহ বাড়ছে হাওর অঞ্চলের কৃষকদের।

কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আব্দুস ছাত্তার জানান, জেলায় এবার সরিষা আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ৩ শত হেক্টর জমিতে। যা থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার মেট্রিকটন সরিষা।

ঢাকানিউজ২৪.কম /

আরো পড়ুন

banner image
banner image