নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপর হামলা ও লাঞ্ছনার প্রতিবাদে সারা দেশে সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা চারটি দাবির প্রেক্ষিতে সুরক্ষা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষে দাবি পূরণ না হওয়ায় এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা কেউই সুরক্ষিত নন। ১৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কোনো মামলা হয়নি, যা প্রশাসনের ব্যর্থতার পরিচয় বহন করে। তারা রোগী হত্যার দায়ে সম্পূর্ণ শাটডাউনের ঘোষণা দেন এবং ঢামেকসহ দেশের সব জেলা, উপজেলা এমনকি ব্যক্তিগত চেম্বারগুলোও বন্ধ থাকবে বলে জানান।
চিকিৎসকদের চারটি দাবি:
১. সকল হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
২. সকল হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকতে হবে।
৩. স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগ দিতে হবে।
৪. স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
চিকিৎসকরা জানান, যতক্ষণ না তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, ততক্ষণ তারা তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। এর আওতায় জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ এবং সব ধরনের চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকবে। ভর্তি রোগীদের চিকিৎসাও বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়।
উল্লেখ্য, ঘটনার সূত্রপাত ঘটে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আহসানুল ইসলাম দিপ্তের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। সাধারণ ছশিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসকদের অবহেলার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। এর জেরে শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে দায়িত্বরত এক চিকিৎসককে মারধর করা হয়। এরপর মধ্যরাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে একটি পক্ষ হাসপাতালে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও পুনরায় চিকিৎসকদের মারধর করে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে রোববার সকাল থেকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগসহ সব ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেন চিকিৎসকরা। তাদের মূল দাবি ছিলো, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সকাল থেকে হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষের সামনে চিকিৎসকরা জড়ো হতে থাকেন এবং রুদ্ধদ্বার আলোচনায় অংশ নেন। কিন্তু কোনো সুরাহা না হওয়ায় তারা সারা দেশে সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দেন।
এই সময়েও হাসপাতালের পরিচালক চিকিৎসকদের বোঝানোর চেষ্টা চালিয়ে যান। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আগত রোগীদের ভিড় বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়।
এই কর্মসূচি যতক্ষণ না চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে, ততক্ষণ চলবে বলে চিকিৎসকরা দৃঢ়ভাবে জানিয়েছেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / জেডএস/সানি
আপনার মতামত লিখুন: