• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

কুমিল্লায় ভেজাল আইসক্রীমের কারবারে শিশুরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে 


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১১:৩৬ এএম
কুমিল্লায় শিশুরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে 
আইসক্রীম

মশিউর রহমান সেলিম, লাকসাম,কুমিল্লা : এদের বৈধ কোন কাগজপত্র নেই তবুও তারা শিল্পপতির ভূমিকায়। অথচ সরকার প্রতিবছর হারাচ্ছে কয়েকলাখ টাকার রাজস্ব। কুমিল্লা দক্ষিনাঞ্চলের লাকসাম, বরুড়া, লালমাই, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্নস্থানে যত্রতত্র ভাবে গড়ে উঠেছে প্রায় শতাধিক আইসক্রীম ও বরফ তৈরীর কারখানা। এসব কারখানাগুলোতে নোংরা পরিবেশ ও বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে তৈরী হচ্ছে হরেকরকম ব্র্যান্ডের আইসক্রীম। ফলে এসব নিম্নমান ও ভেজাল আইসক্রীম খেয়ে ৫ উপজেলার হাজার হাজার শিশু-কিশোর স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে। 

স্থানীয় একাধিক স্ত্রগুলো জানায়,  উপজেলা ৫টি  বিভিন্ন হাট বাজারে স্থাপিত প্রায় শতাধিক আইসক্রীম ও বরফ তৈরীর কারখানার কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। বিশেষ করে পরিবেশ, বিএসটিআই, যুব মন্ত্রনালয়, ফায়ার ব্রিগেড, স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট  অন্যান্য বিভাগের কোন প্রত্যায়ন পত্র নেই। অথচ এসব অবৈধ কারখানায় প্রতিনিয়ত তৈরী হচ্ছে নোংরা পরিবেশে ও বিষাক্ত কেমিক্যালযুক্ত আইসক্রীম। সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারী না থাকায় এ ব্যবসা আরো জমজমাট হয়ে উঠেছে। আসন্ন  বর্ষা কালে তেমন বৃষ্টিপাত, পানি না হলেও ঋতু পরিবর্তনের কারনে প্রকৃতির মধূম্সা জৈষ্ঠ্য মাসে তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ট হয়ে এ অঞ্চলের হাজার হাজার শিশু-কিশোর খাচ্ছে ওইসব কারখানায় তৈরী প্রিয় পানীয় আইসক্রীম। এসব আইসক্রীম তৈরীতে কারখানাগুলোর পানির হাউজে শেওলা, আর্সেনিক যুক্ত, অপরিছন্ন পরিবেশ, ধুলোবালু যুক্ত, চিনির পরিবর্তে সেকারিন, দুধের বিপরীতে বিষাক্ত রাসায়নিক পাউডার, নারিকেলের পরিবর্তে দানাযুক্ত সাদা ভূষি, আটা-ময়দা, কালার রংসহ বিভিন্ন বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার হচ্ছে। অন্য দিকে কোন আইসক্রীম তৈরী কারখানায়  অভিজ্ঞ কেমিষ্ট কিংবা দক্ষ টেকনিশিয়ান নেই। পানি শোধনাগার, পরীক্ষা নিরীক্ষা সরঞ্জাম ও মলযুক্ত লাইন কিংবা আর্সেনিকমুক্ত কোন বিজ্ঞানাগার নেই। এসব কারখানাগুলোতে শিশু শ্রমিকের সংখ্যাই বেশি যা শ্রম আইনে পরিপন্থি। তাদের কোন প্রশিক্ষন কিংবা পরিক্ষীত কোন পোষাক কিংবা সরঞ্জাম দেয় না মালিক পক্ষ। 

স্থানীয় একটি বেসরকারী সংস্থার জরিপ অনুসারে এ অঞ্চলের প্রায় ৯৮ ভাগ টিউবওয়েল আর্সেনিকযুক্ত এবং ৫৬ ভাগ টিউবওয়েল মলযুক্ত। এপর্যন্ত লাকসামে সাড়ে ৫ হাজার ও মনোহরগঞ্জে প্রায় ৪ হাজার, মনোহরগঞ্জে ৪ হাজার ২’শ, লালমাই উপজেলায় ২ হাজার ৮’শ১৯, বরুড়ায় ৩ হাজার ৯’শ৭১ ও নাঙ্গলকোট উপজেলায় ৫ হাজার ২’শ৬১ জন  আর্সেনিক রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মতে ৫টি  উপজেলার  প্রায় ১১৭টি গ্রাম আর্সেনিকের কবলে পড়লেও ২৮টি গ্রাম রয়েছে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। সকল আইসক্রীম তৈরী কারাখানায় একই চিত্র। এলাকার বিভিন্ন হাটবাজার, আবাসিক কলোনী ও স্কুল কলেজ মাদ্রাসা গেইটে আইসক্রীম বিক্রি করছে ভ্রাম্যমান বিক্রেতারা। প্রতিদিন শত শত ভ্রাম্যমান বিক্রেতা বিভিন্ন যানবাহনে এসব নিম্নমানের আইসক্রীম বিক্রি করছে। আবার মালিকপক্ষ মাকেটিং হিসেবে খুচরা বিক্রির পাশাপাশি পাইকারীতে বিভিন্ন খাবার, ফাষ্টফুড ও কনফেকশনারী দোকানে বিক্রি করছে মরনঘাতক এ আইসক্রীম। 

এই ব্যাপারে ৫টি উপজেলার স্থানীয় প্রশাসন, পরিবেশবিদ, বিএসটিআই, শ্রম দপ্তর, ফায়ার ব্রিগেড ও স্বাস্থ্য বিভাগ কর্মকর্তারা জানান, আমরা রাজনৈতিক ভাবে চাপে আছি। ওইসব আইসক্রীম কারখানার মালিককরা স্থানীয় ও প্রভাবশালী। বিভিন্ন অভিযোগ সম্পর্কে বিভিন্ন মাধ্যমে অবগত আছি। বিষয়টি তদারকি করা হচ্ছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে শিঘ্রই এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image