
নিউজ ডেস্ক: ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গত দুই দিন ধরে তাদের সামরিক শক্তি ব্যবহার করে অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে হামলা চালায়। দৃশ্যটি ২০০২ সালে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বড় হামলার কথা মনে করিয়ে দেয়। সেনাবাহিনীর বুলডোজারগুলো আধা বর্গকিলোমিটারেরও কম জায়গাজুড়ে জরাজীর্ণ শরণার্থী শিবিরে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। এতটুকু জায়গায় প্রায় তেইশ হাজার ৬০০ লোকের বাস। এতে ইসরায়েল কি তার সামরিক লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছে?
ইসরায়েলি অভিযানে কমপক্ষে ১২ ফিলিস্তিনি নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছে। নিহতের মধ্যে চার শিশুও রয়েছে। সেনা অভিযানে জেনিনের প্রায় ৮০ শতাংশ বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন শহরের ডেপুটি গভর্নর কামাল আবু আল রুব। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বুধবার ভোরে জেনিন থেকে সেনা প্রত্যাহার করে। এটি ছিল ২০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে শহরে ইসরায়েলিদের বড় সামরিক অভিযান। সোমবার শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানটি পশ্চিম তীরের শহরজুড়ে ধ্বংসের ছাপ রেখে গেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনের প্রাচীনতম শরণার্থী শিবিরকে সন্ত্রাসবাদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে বর্ণনা করেছে। ফিলিস্তিনিদের কাছে জেনিন শরণার্থী শিবির হয়ে উঠেছে প্রতিরোধের প্রতীক। ফলে অনেক তরুণ নিজেদের সম্প্রদায়কে রক্ষা করার জন্য ইসরায়েলি সৈন্যদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। বিশেষজ্ঞ এবং পর্যবেক্ষকদের মতে, প্রাথমিক প্রমাণগুলো ইঙ্গিত দেয় যে অবরোধ কেবল প্রতিরোধকে উৎসাহিত করতে পারে।
প্যালেস্টাইন ইনস্টিটিউট ফর পাবলিক ডিপ্লোমেসির নির্বাহী পরিচালক ইনেস আবদেল রাজেক বলেন, দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ার জন্য কারা দায়িত্বে আছেন এবং কারা ক্ষমতার অধিকারী তা দেখানোর জন্য এই ধরনের নৃশংস শক্তির মোতায়েন একটি স্বল্পমেয়াদি প্রচেষ্টা। কিন্তু ইতিহাস আমাদের দেখায় যে, এতে ফিলিস্তিনিরা আরও বেশি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হবে।
ইসরায়েলি সেনাদের চলে যাওয়ার পর শিবিরে ফিরতে শুরু করেছে ফিলিস্তিনিরা।
ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডবে এই শিবির ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিটি বাড়ি কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেয়ালে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে অসংখ্য গাড়ি। চারদিকে দেখা যাচ্ছে দেয়ালের টুকরা, কাচ ও বুলেটের খোসা।
ইসরায়েলি অভিযানে কয়েক ডজন যানবাহন ও সরবরাহ লাইনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এত কিছুর পরও মনে প্রশ্ন থেকে যায় ইসরায়েল কি জেনিনে তার লক্ষ্য অর্জন করেছে? খবর আলজাজিরার।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: