স্টাফ রিপোর্টার : শ্রীমঙ্গলে দেড় বছর ধরে আটকে রেখে এক দোকানের সেলসম্যান কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ শনিবার দুপুরে শ্রীমঙ্গল শহরের ষ্টেশন রোডের হিরম্ময় প্লাজার তিন তলার একটি বাসা থেকে ১৭ বছর বয়সী কিশোরীকে হাত-পা বাধা অবস্থায় উদ্ধার করে।
কিশোরীটি শ্রীমঙ্গল সরকারী কলেজে একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী, পড়াশোনার পাশাপাশি পারটাইমে ঐ ধর্ষকের দোকানের কর্মচারী হিসেবে চাকুরী করে। কিশোরীর পিতা একজন মুক্তিযোদ্ধা।
শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ চন্দ্রনে বাসার গৃহিণী পলাতক চন্দ্রনের মা সাধনা ধর (৬০), পূর্ণা ধর (৩০) স্ত্রী দুই নারীকে গ্রেফতার করেছে। তবে ধর্ষক পালিয়ে যায়। কিশোরীর বাসা শহরের শাহীবাগ এলাকায় বলে পুলিশ জানায়।
শনিবার শ্রীমঙ্গল থানায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হলে, মেয়েটি সাংবাদিকদের কাছে তার উপর দীর্ঘ দেড় বছর যাবত লোমহর্ষক নির্যাতনের বর্ণনা দেয়। মেয়েটির শরীরে আঘাতের চিহৃ পাওয়া গেছে। কিশোরীকে পুলিশ মৌলভীবাজার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেছে।
মেয়েটি জানায়, আমি ওনার কাপড়ের দোকানে গত দেড় বছর আগে কাজ নেই। শহরের ষ্টেশন রোড়ের হিরম্ময় প্লাজার তিন তলার বাসিন্দা ‘অরেঞ্জ ফ্যাশন’ র মালিক চন্দ্রন ধর (৪৫) কয়েকদিনের মাথায় চন্দ্রন ধর তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। এই ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে গত দেড় বছর ধরে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে আসছিল । এসব জানার পরও বাসার লোকজন বাধা দেয়নি বলে মেয়েটি জানায়।
মেয়েটি অভিযোগ করে, শনিবার সকালে চন্দ্রন ধর তাকে আবারও ধর্ষণের চেষ্টা করলে সে বাধা দেয়। এতে চন্দ্রন শারীরিক নির্যাতন করে তার হাত-পা বেধে একটি ঘরে ফেলে রাখে। তার মা স্ত্রী তাকে হত্যা উদ্দেশ্য মারপিট করে। সাধনা ধর মাথার চুলে, স্ত্রী পূর্ণা দুপায়ে ও ধর্ষক চন্দ্রন তার বুকের উপরে বসে নাকে মুখে চোখে হত্যার উদ্দেশ্যে মারতে থাকে। কিশোরীকে মেরে তারা রোজা ভাঙ্গায়।
স্থানীয়রা জানায়, শনিবার মেয়েটির আত্ম-চিৎকার শুনে তারা পুলিশকে খবর দেয়।
খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থল থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এসময় মেয়েটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে।
ওসি (তদন্ত) হুমায়ুন কবির জানান, ধর্ষক চন্দনের বাসা থেকে ২ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলো সাধনা ধর (৬০) মা, স্ত্রী পূর্ণা ধর ( ৩০) তবে চন্দ্রন পলাতক রয়েছে, তাকে ধরতে পুলিশি অভিযান চালাচ্ছে। এছাড়া মেয়েটির ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় কিশোরী নিজেই বাদী হয়ে চন্দ্রন ধরসহ ৩ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / মো: জহিরুল ইসলাম/কেএন
আপনার মতামত লিখুন: