• ঢাকা
  • শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

রাজস্ব আদায় বাড়াতে এনবিআরের নতুন পরিকল্পনা


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শনিবার, ২০ আগষ্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ১০:৫৯ এএম
রাজস্ব আদায় বাড়াতে
এনবিআরের নতুন পরিকল্পনা

নিউজ ডেস্ক: অর্থবছরের শুরুতে রাজস্ব আদায় বাড়াতে কার্যক্রম জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর অংশ হিসেবে বেশ কিছু নতুন পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং এগুলো বাস্তবায়নে সম্প্রতি এনবিআর থেকে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পর মাঠপর্যায়ে কাস্টমস এবং আয়কর বিভাগে উচ্চ পদে বড় ধরনের রদবদল করার মাধ্যমে পুরো রাজস্ব বিভাগকে সাজানো হয়েছে। এরপর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

বৈঠকে এবারের নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে শুরু থেকেই কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে কমিশনারদের কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়। একই সঙ্গে রাজস্ব বোর্ড থেকে আলাদা পরিকল্পনা তৈরি করে তা বাস্তবায়নের কথা বলা হয়।

এনবিআরের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এক কর্মকর্তা জানান, লক্ষ্য পূরণে প্রতি বছরই কিছু নির্দেশনা দেয়া হলেও বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ঋণ পরিশোধে আমাদের সক্ষমতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন না থাকলেও অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণে যথেষ্ট দুর্বলতা রয়েছে। সংকট মোকাবিলায় রাজস্ব আদায় বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য আমরা বছরের শুরুতেই নানামুখী প্রচেষ্টা হাতে নিয়েছি।

চলতি অর্থবছরে বাজেটে এনবিআরকে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়। গত অর্থবছরে আদায় ৩ লাখ ১৭৯ কোটি টাকা।

রাজস্ব আদায়ে বেশ কিছু পরিকল্পনা নেয় এনবিআর। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে: আয়কর ও ভ্যাটের আওতা আরও বাড়ানো, ভ্যাট রিটার্ন শতভাগ অনলাইনে দাখিল করা, উৎসে কর কর্তনের অনলাইন ব্যবস্থা সর্বস্তরে প্রচলন, অনলাইনে কর প্রদানে সব ক্ষেত্রে এ-চালান প্রচলন, ডিজিটাল আয়কর নিরীক্ষা ব্যবস্থা চালু, কর্মকর্তাদের কর আহরণে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর দেয়ার পদ্ধতি সহজ করা।

এনবিআর সূত্র জানা গেছে, গত মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি প্রতিনিধিদল এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে রাজস্ব আদায় বাড়াতে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরির পরামর্শ দেয় সংস্থাটি। আগামী অক্টোবরে আইএমএফের সঙ্গে সরকারে সাড়ে চার শ কোটি ডলারের ঋণ নিয়ে আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে।

এনবিআরের সাবেক সদস্য ফরিদউদ্দীন বলেন, কাঙ্ক্ষিত আয় বাড়াতে হলে রাজস্ব বিভাগে একটি কার্যকর ও বাস্তবভিত্তিক সংস্কার কর্মসূচি নিতে হবে। এ জন্য পুরো রাজস্ব বিভাগকে অটোমেশন করে আয়কর ও ভ্যাট বিভাগকে একীভূত করার পাশাপাশি মাঝারি পর্যায়ে আরও দুটি ট্যাক্স পেয়ার ইউনিট গঠন করতে হবে।

ভ্যাট ও করের ভিত্তি সম্প্রসারণে নানা উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। বর্তমানে ৭০ লাখ লোক করের আওতায়। এ বছরের মধ্যে এই সংখ্যা ১ কোটিতে উন্নীত করতে চায় এনবিআর। বর্তমানে ১০০টি উপজেলায় কর অফিস আছে। দেশের সব উপজেলায় কর অফিস চালুর জন্য নতুন জনবল দরকার। এরই মধ্যে নতুন জনবল কাঠামো অনুমোদনের বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আছে। শিগগিরই এটি পাস হবে বলে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

দেশে বর্তমানে সাড়ে ৩ লাখ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে। তাদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান প্রতি মাসে অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন দেয়। চলতি অর্থবছরেই এটি শতভাগে উন্নীত করতে চায় এনবিআর। অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন নিশ্চিত করা গেলে হয়রানি কমে যাবে, সহজে ভ্যাট রিটার্ন দিতে পারবেন প্রতিষ্ঠান মালিকরা। ভ্যাট আদায়ে গতি আসবে।

কর বিভাগ প্রতি বছর যত কর আদায় করে থাকে, এর ৮০ শতাংশ উৎসে কিংবা অগ্রিম কর থেকে আদায় করা হয়। ঠিকাদারি, আমদানি পর্যায় ও সঞ্চয়পত্রের সুদের হার থেকে উৎসে ও অগ্রিম কর বাবদ আসে প্রায় ২৩ শতাংশ। উৎসে কর আদায় ব্যবস্থাটি পুরোপুরি অনলাইন করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এটি করা হলে কর আহরণ বর্তমানের চেয়ে অনেক গুণ বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছে এনবিআর।

বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর অনলাইনে কর পরিশোধের ক্ষেত্রে ‘এ-চালান’ বাধ্যতামূলক করার কথাও ভাবছে সরকার। এখন ‘এ-চালানের’ জন্য একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত ছাড় আছে।

ঘরে বসে যাতে করদাতারা আয়কর রিটার্ন দিতে পারেন, সে জন্য একটি অনলাইন ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে এনবিআর। এটি অনেকটা অ্যাপসের মতো হবে। নিবন্ধন নিয়ে ওই ওয়েবসাইটে ঢুকে ঘরে বসেই রিটার্ন জমা দেয়া যাবে। এমনকি আয়-ব্যয় সংক্রান্ত কিছু তথ্য দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিটার্নও তৈরি করে দেবে কর বিভাগের ওই সিস্টেম। চলতি বছরে এটি চালু হতে পারে বলে জানা গেছে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image