• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ১৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

খাগড়াছড়িতে জমি দখলের জেরে ক্রেতা-বিক্রেতার বিরোধে সংঘাতের আশংকা


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: রবিবার, ০৭ আগষ্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০২:৫০ পিএম
ক্রেতা-বিক্রেতার বিরোধে সংঘাতের আশংকা
জমি দখল

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ি জেলা সদরের গামারিঢালা এলাকায় জমির দখল নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে মামলা হামলার অভিযোগ উঠেছে। যে কোন সময় উভয় পক্ষের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাতের সৃষ্টি হতে পারে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা। এর প্রতিকার জরুরি বলেও মন্তব্য তাদের।

জানা গেছে, মহালছড়ি উপজেলার মাইসছড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ আবুল বাশার (বাদশা মিয়া) ২০০২ সালে ২৫৬ নং গামারিঢালা মৌজার অন্তর্ভুক্ত ১৫ নং খাস ক্ষতিয়ানের অন্দর হইতে ০.৮০( আশি শতক) একর  আবুল কাশেম, মোঃ আবুল হোসেন, আবুল হাসান, মোঃ আব্দুল্লাহ, মোছাঃ জান্নাতুন্নেছা সর্ব পিতা মৃত মোঃমীর হোসেন এর নিটক থেকে এবং ২০০৩ সালে একই মৌজা এবং দাগ মুলে মোঃ আবুল হোসেন এর নিকট থেকে ০.৪০ (চল্লিশ শতক) একর এবং ২০০৬ সালে মোঃ হাচান আলী পিতা মৃত মীর হোসেন এর নিকট থেকে ২৫৭ নং নুনছড়ি মৌজার ৪০ নং ক্ষতিয়ানের অন্দর হইতে.০.৪০( চল্লিশ শতক) একর  ক্রয় করেন। আবুল বাশার (বাদশা মিয়া) জমি ক্রয়ের পর থেকে অদ্যবদি পর্যন্ত নিয়মিত সরকারি খাজনা পরিশোধ করে আসছেন। 

কিন্তু আবুল হোসেন গং জমি বিক্রি করেনি মর্মে অভিযোগ তুলে জবর দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন ফলে যেকোন সময়  উভয় পক্ষের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাতের ঘটনা ঘটতে পারে, এর প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসি প্রসাশনের হস্থক্ষেপ কামনা করছেন।   বাদশা মিয়া পেশায় একজন গাড়ি চালক। তার ক্রয়কৃত জমি বর্গাচাষীদের  মাধ্যমে চাষাবাদ করে ভোগদখলে বিদ্যমান আছেন, বর্তমানে মোঃ ধনু মিয়া পিতা আব্দুল খালেক  নামক এক ব্যাক্তির কাছে জমি  বন্ধক রয়েছে, এর পূর্বে ২০১৭ সাল থেকে ১৯ সাল পর্যন্ত মোঃ বেলাল হোসেনের নিকট বন্ধক ছিল। স্থানীয় বর্গাচাষী  নুরইসলাম জানান বাদশা মিয়া জমি ক্রয়ের পর থেকে ১৫/১৬ বছর পর্যন্ত আমি তার জমি বর্গাচাষ করে আসছি, এতো বছরের মধ্যেতো আমি অন্য কোন মালিক দেখিনি। একই মন্তব্য জমি বন্ধকি ধনু মিয়া ও বেলাল হোসেনের।

এছাড়া আবুল বাশার  (বাদশা মিয়া) আদালতে তার ক্রয়কৃত জমি বিক্রতা  কতৃর্ক জোর পূর্বক দখল করতে চাইলে আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালতের নির্দেশে সহকারি কমিশনার (ভূমি) খাগড়াছড়ি সদর।  বিরোধপূর্ন জমি সরেজমিনে তদন্তকালে ১৫ নং ক্ষতিয়ানের ৮২৫ নং দাগের অন্দর নালিশি ০.০২ (দুই শতক) একর ভূমি বিবাদীগন প্রায় ৮/৯ মাস যাবৎ দখলে আছেন যাহা একটি টিন সেড  একচালা ঘর হিসেবে বিদ্যমান রয়েছে মর্মে একটি রিপোর্ট প্রদান করেন।

বাদী /বিবাদীদের অভিযোগে গত কয়েকদিন পূর্বে সরেজমিনে গেলে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ, হেডম্যান, জনপ্রতিনিধিদের কাছে জানা যায় বিবাদীদের পিতা মৃতঃ মীর হোসেন ও অপরাপর ভাইদের নামে দুইটি আঞ্চলিক দলিল মুলে ০.৪ (চার একর) শতক জমি ছিল, তা থেকে বাশারের নিকট পর্যায়ক্রমে, বিবাদীগন ০১.৬০( এক একর ষাট শতক) একর জমি আঞ্চলিক দলিল মুুলে বিক্রি করে দেয় এবং অবশিষ্ট জমি  ২০১৮ সালে বিবাদীদের বড় ভাই মোঃ আব্দুল সালাম ও স্থানীয় ওয়াড মেম্বার মোঃ আহাদ, মাইসছড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ সাত্তার,  জয়নাল আবেদীন, মোঃ সুরুজ মিয়া সহ অনেকের উপস্থিতিতেই আবুল হোসেনসহ পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে এবং
 তাদের  উপস্থিতে জমি ভাগ করে দেয়া হয় তখন তাদের কোন আপত্তি ছিলনা।

মোঃ আবুল বাশার (বাদশা মিয়া) বলেন  আবুল কাশেম, আবুল হোসেন,আবুল হাসান, মোঃ আব্দুল্ল্যাহ এবং মোছাঃ জান্নাতুন্নেছা এর নিকট থেকে  তিনটি আঞ্চলিক দলিল মুলে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গদের সাক্ষ্য প্রমানের মাধ্যমে ০.১.৬০ (এক একর ষাট শতক) একর জমি তৎকালিন বাজার দর মোতাবেক ক্রয় করি এবং ভোগদখলে বিদ্যমান থেকে নিয়মিত খাজনাদি পরিশোধ করিয়া আসছি। কিন্তু এতো বছর পর হঠাৎ গত ২৯/৯/২০২১ ইং দিবা গত  ৩০ /০৯/২০২২১ ইং তারিখে গভীর রাতে আমার ক্রয়কৃত জমির উপর টিনসেড একচালা ছোট একটি ঘর করে ফেলে সকালে আমার চোখে পড়লে তাৎক্ষনিক এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিদেরকে জানাই। 

পরবর্তিতে তাদের পরামর্শ ক্রমে ঐ একই তারিখে খাগড়াছড়ি সদর থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করি, যাহার ডায়েরি নং ১৩০৮/তারিখ ৩০/০৯/২০২১। কিন্তু বিবাদীগন আইনকে তোয়াক্কা না করিয়া আবারো আমার জমি জোর পূর্বক জবর দখল করতে চাইলে এবং আমাকে ভয়ভিতি প্রদর্শন করলে আমি তাদের বিরুদ্বে গত ১৯/১০/২০২১ ই ং তারিখে আদালতে একটি মামলা দায়ের করি, মামলা নং ১২৮/২০২১। তিনি কান্নাজরিত কন্ঠে বলেন আমি একজন সামান্য চাঁদের গাড়ি( জীপ) চালক অনেক কষ্টের বিনিময়ে এ জমিটুকু ক্রয় করেছি, কিন্তু আমার এ জমি বিবাদীগন  কিছু অংশ আনুমানিক ০.২ দুই শতক ( একর) জোরপূর্বক জবর দখল করেছে বাকি সব জমি দখল করার পায়তারা করছে, আমি এর প্রতিকার চাই। আমার জমি থেকে  তাদেরকে উচ্ছেদের জন্য  আইনশৃঙ্গলা বাহিনীসহ প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করছি।

 বিবাদী মোঃ আবুল হোসেন মোঃ আবুল বাশারের জমি জবর দখলের কথা অস্বীকার করে বলেন আমাদের পিতা মারা যাওয়ার পর সকল কাগজপত্র ছিল মেজ ভাই মোঃ আবুল কাশেমের কাছে, আর বড় ভাই  সালাম রিনগ্রহস্থ হয়ে এখান থেকে চলে যায় তখন তার সাথে আমাদের কোন যোগাযোগ ছিলনা। এর মধ্যে মেঝ ভাই আবুল কাশেমের আবুল বাশারের  মায়ের সাথে সম্পর্ক  থাকায় এলাকাবাসী  বিয়ে করিয়ে দেয় তখন আমি সমাজের নেতৃবৃন্দদের কাছে বিচার প্রার্থী হলে  বাসারের মায়ের ঘরবাড়ি ভেঙ্গেদেয় এলাকাবাসি, আশ্রয় নেয় সাবেক ইউপি মেম্বার কবির হোসেনের বাড়িতে, সেখানেও বেশিদিন থাকতে পারেনি, পরে  বাদশা তার মাকে নিয়ে থাকার জন্য আমাদের বড় ভাই সালামের কাছে আশ্রয় চাইলে ঘর করে থাকার জন্য তার বাড়িতে জায়গা দেয়, পরবর্তিতে বাদশা, তার মা, এবং আমার মেঝ ভাই কাশেম আমার বড় ভাইয়ের স্ত্রী পুত্র সন্তানদেরকে জমির কাগজ চুরির অভিযোগ দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয়, এবং কাশেম আমিসহ চার ভাইবোনের সাথে প্রতারনা করে মোঃ আবুল বাশার (বাদশা মিয়া) এর নামে বাড়ির জমি সহ সাড়ে চার কানি অর্থাৎ ০.১.৮০ (এক একর আশি শতক) একর জমি লিখে দেয়, আমরা কোন জমি বিক্রি করিনি। কাশেম আমাদের কাছ থেকে জমির নতুন কাগজপত্র তুলবে এবং রেশন কার্ডের নাম পরিবর্তনের কথা বলে স্বাক্ষর নিয়েছে তবে আমরা আমাদের জমিতেই রয়েছি, এ জমি বাশারের নয়।

মোঃ আব্দুল আলী (আব্দুল্লহ) বলেন আমরা বাশারের কাছে কোন জমি বিক্রি করিনি, মেঝ ভাই কাশেম রেশন কার্ড পরিবর্তন করতে স্বাক্ষর লাগবে মর্মে আমার কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়েছে।

মাইসছড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাত্তার বলেন ২০১৮ সালে আমি এবং সাবেক ওয়াড মেম্বার আহাদ সহ স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গের উপস্থীতে আবুল হোসেনদের পিতার নামীয়  জমি তাদের সবার মাঝে ভাগ করে দেয়া হয়েছে তখনতো তারা বাশারের কাছে বিক্রিত জমির দাবী করেনি , এখন মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বড় ধরনের সংঘাত সৃষ্টির পায়তারা চালাচ্ছে, বিষয়টি সমাধান জরুরি।

সাবক ওয়াড মেম্বার আবু আহম্মদ মজুমদার  বলেন কাশেম, আবুল হোসেনরা আবুল বাশারের কাছে জমি বিক্রি করেছে।

মাইসছড়ি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ গিয়াস উদ্দিন লিডার বলেন আবুল বাশার আমাদেরকে জানিয়ে জমি ক্রয় করেছে,বর্তমানে জমির মুল্য বেশি হওয়ায় লোভের বসুবিত হয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আবুল হোসেন গং বিক্রি করা জমি জোর পুর্বক জবর দখল করতে চায়।

মাইসছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান সাজাই মারমা বলেন আমার কাছ উভয়পক্ষ যদি সমজোতার জন্য আসে তা হল্  চেষ্টা করব ১ নং খাগড়াছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান জ্ঞান ময় দত্ত বলেন যেহেতু বিষয়টি আদালতে  বিচারাধীন সেহেতু এ বিষয় নিয়ে আমার কিছু করার নাই ।

রিপন সরকার খাগড়াছড়ি

ঢাকানিউজ২৪.কম / রিপন সরকার/কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image