• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

হরিরামপুরে কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা না পাওয়ার অভিযোগ


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৫:০৯ পিএম
কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা না পাওয়ার  অভিযোগ
কমিউনিটি ক্লিনিক

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌছিয়ে দেয়ার লক্ষ নিয়ে ক্লিনিক গুলো স্থাপন করা হলেও কাক্ষিত সেবা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীদের।
 
মানিকগঞ্জের নদী ভাঙন কবলিত হরিরামপুর উপজেলায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌছিয়ে দেয়ার লক্ষে ২২টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হলেও এসব ক্লিনিক গুলোর দরজা থাকে বন্ধ। এতে চিকিৎসা সেবা ব্যবত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারীর অভাবে এসব কমিনিউটি ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা নিতে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর।   

রবিবার (২৪'এপ্রিল) সময়,১১টায় বাহিরচর গ্রামের পান্নু বিশ্বাস গ্যাসের সমস্যায় বুক জ্বালাপোড়া নিয়ে যান বাহিরচর বাজার কমিউনিটি তে গিয়ে দরজা বন্ধ পাওয়ায় আক্ষেপ করে বলেন,'সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে বুকে জ্বালাপোড়া দেখে ক্লিনিকে যাই গিয়ে দেখি দরজায় তালা ঝুলছে। মাঝে মধেই তালা ঝোলানো থাকে, আমরা এখানে আসি সরকার আমাগো জইন্যে ফ্রি ঔষধ দেয়, কিন্তু এই ক্লিনিকের ম্যাডাম মাঝে মইধ্যে কই যেন যায়'।

আন্ধার মানিক গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'সকাল ১০টার পর আমি পেটে ব্যাথা নিয়ে যাত্রাপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখি দরজায় তালা ঝুলতে দেখে ফিরে আসি বাজারে । আমি গরীব মানুষ ছোট একটা দোকান করে আমার সংসার চলে । কি করব? পরে দোকান থেকে একটা ঔষধ কিনে খাইলাম । এই ক্লিনিক মাঝে মধ্যেই তালা দেওয়া থাকে'।

 মরিয়ম আক্তার, তিনি তার পাঁচ মাস বয়সী মেয়ে রিমাকে নিয়ে এসেছিলেন। অপেক্ষা করে ফিরে যাচ্ছিলেন। জানান, ছোট বাচ্চার নিয়ে এখানে এসেছিলেন সেবা নিতে কিন্তু কাউকে না পেয়ে অবশেষে চলে যাচ্ছেন বাড়িতে।

তিনি আরও বলেন, সকাল ৯টায় খোলার কথা থাকলেও কোন ক্লিনিক খোলে বেলা ১১টায়, কোনোটি ১২টায়, কোনোটি দুপুরের পর, কোনোটি আবার ঘোষণা ছাড়াই বন্ধ থাকে দিনভর।

মরিয়ম জানালেন, এখানে এক-দুই টাকা দামের ট্যাবলেট দিয়ে বিদায় করা হয়। বলা হয়, ওষুধ আসে না। তাই অন্য ওষুধ দেয়া যাচ্ছে না। এগুলো বহু আগে থেকেই শুনে আসছি।

উপজেলার রহিম , আমিন ও কালাম দেওয়ানসহ স্থানীয় আরও কয়েকজনের কাছ থেকেও পাওয়া গেল নানা অভিযোগ। জানান, কেবল এই ক্লিনিক নয়, উপজেলার বেশির ভাগ কমিউনিটি ক্লিনিকেই একই ধরনের চিত্র।

সকাল ৯ টায় খোলার কথা থাকলেও কোনো ক্লিনিক খোলে বেলা ১১টায়, কোনোটি ১২টায়, কোনোটি দুপুরের পর, কোনোটি আবার ঘোষণা ছাড়াই বন্ধ থাকে দিনভর।

আবার খোলা হলে কতক্ষণ চলবে, তারও নেই ঠিকঠিকানা। কখনও এক ঘণ্টা, কখনও দুই ঘণ্টা পরেই বন্ধ করে দেয়া হয়। রোগীরা জানতে চাইলে জরুরি বৈঠক বা অসুস্থতার ছুটির অজুহাত দেন কর্মীরা।

সরজমিনে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বিজয়নগর কমিউনিটি ক্লিনিক, শিকদারপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক,হাপানিয়া কমিউনিটি ক্লিনিক,বাহিরচর কমিউনিটি ক্লিনিক, যাত্রাপুর কমিউনিটি ক্লিনিক, তন্দ্রখোলা কমিউনিটি ক্লিনিক ও গঙ্গারামপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে তালা ঝুলছে।
   
বিষয়টি হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: ইসরাত জাহানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্লিনিক বন্ধ থাকার কথা নয়। যদি ক্লিনিক গুলো বন্ধ থাকে তাহলে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাদের বিরুদ্বে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এব্যাপারে মানিকগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাঃ মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী বলেন, বিষয়টি নজরে আছে। যদি সত্যিই ক্লিনিক গুলো বন্ধ থাকে তাহলে কেন তারা ক্লিনিকে আসেনি। এবিষয়ে তাদের জবাবদিহিতা করতে হবে। তারা ক্লিনিক বন্ধ রাখতে পারে না। এটি মোটেও গ্রহণ যোগ্য নয়। যদি ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে তাদেও বিরুদ্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

ঢাকানিউজ২৪.কম / সাকিব আহমেদ/কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image