• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

অকালে ঝরে যাওয়া এক সম্ভাবনা


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৫:০৭ পিএম
অকালে ঝরে যাওয়া এক সম্ভাবনা
ছোট্ট রাসেল

লাকী ইনাম

আজ আমরা মায়াভরা হৃদয়ে কান্নাভেজা কন্ঠে স্মরণ করব অকালে ঝরে যাওয়া এক সম্ভাবনা ছোট্ট সোনামনি শেখ রাসেল কে। বাঙালি জাতি যুগে যুগে ক্ষণজন্মা ও মহান ব্যাক্তিত্বদের জন্ম দিয়েছে। অর্ধশত বছর আগে আমাদের প্রিয় রাসেল সোনা জাতির পিতা-সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র হয়ে এ পৃথিবীকে আলো করে জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতেই হয় মাত্র ১১ বছর বয়সে ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট কতিপয় বিপথগামী সেনা সদস্যদের হাতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে শিশু রাসেল ও নির্মমভাবে নিহত হয়। 

ছোট্ট রাসেল আমাদের রাজকুমার। রাসেল সোনার কথা মনে হলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে প্রাণচঞ্চল, মিষ্টিমুখের এক অনাবিল ছবি। ওর নাম কি করে রাসেল হলো সবাই জানতে চায়। বঙ্গবন্ধু ছিলেন পৃথিবীর বিখ্যাত দার্শনিক, চিন্তাবিদ বার্ট্রান্ড রাসেলের ভক্ত। দার্শনিক রাসেলের লেখা তিনি পড়তেন এবং বেগম মুজিবকেও পড়ে শোনাতেন। বেগম মুজিবও ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছিলেন বার্ট্রান্ড রাসেলের ভক্ত- আর তাই ১৯৬৪ সালের হেমন্তের শিশিরস্নাত রাতে রাসেলের জন্মের পর এই নামটিই, বঙ্গবন্ধু  ও ফজিলাতুন নেছা মুজিব তাঁদের কনিষ্ঠ পুত্রের জন্য নির্বাচন করেছিলেন। রাসেল সোনার ছোট্ট মুখে সেকি মায়া। দেখেই মনে হচ্ছিল যেন-পুরো দেশটা জুড়ে একদিন মায়া ছড়াবে সে বাবারই মতো। সে স্বপ্ন দেখবে এ দেশ হবে সোনার দেশ। মাঠভরা ফসল আর গোলাভরা থাকবে ধান। পুকুর ভরা মাছ আর গোয়াল ভরা গরু।

এ দেশের সকল শিশু থাকবে আনন্দে আর সুখে, তাদের কল কাকলীতে মুখরিত হবে প্রাঙ্গণ। কিন্তু না- দানবের দল তা হতে দেয়নি। স্বপ্নভঙ্গের বেদনা নিয়ে রাসেলকে চলে যেতে হয়েছে দূর অজানার দেশে। তাই প্রতিবছর রাসেল দিবসে রাসেলের জন্মদিনে আমাদের সবার চোখ হয়ে ওঠে ছলছল। সব শিশুদের চোখ অশ্রুজলে টলমল, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন আমাদের এই ছোট্ট রাজকুমারও বেঁচে থাকবে আমাদের সবার অন্তরে। এ দেশের আকাশ-নদী, ফুল-পাখি আর পাহাড়-ঝরণার কলতানে। 

চতুর্থ শ্রেনীতে পড়া রাসেল সোনা ছিল অত্যন্ত মেধাবী ও মায়ায়ভরা প্রাণের অধিকারি। পায়রা পুষতে ভালোবাসতো, ভালোবাসতো বৃক্ষরাজি। নিজের ছোট্ট সাইকেলটি ছিল তার অত্যন্ত প্রিয় বাহন। সকাল বিকেল ক্রিং ক্রিং ক্রিং-বত্রিশ নম্বর বাড়িটার ছোট্ট অলিন্দে দ্রুততালে চক্কর দিতে বড়ো ভালোবাসত রাসেল। শেখ রাসেল বাঙালি জাতির কাছে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। পুরো বাঙালি জাতি শেখ রাসেলের মধ্যে খুঁজে পায় তাদের ছেলে বেলাকে। বাঙালির শৈশব বেঁচে থাকবে শেখ রাসেলের মধ্য দিয়ে। তার অসময়ে চলে যাওয়া বারবার আমাদের মনে করিয়ে দেয় আমাদের এই বাংলাদেশের করুণ ইতিহাস। নৃশংস ক্ষমতালোভী  কিছু মানুষেরর ক্ষমতার লোভে বলী হতে হয়েছে শিশু রাসেলকে। তার এই অকাল প্রয়াণ ক্রোধে জাগ্রত করে আমাদের বিবেক। আমরা জানি ইতিহাস কথা কয়। 

ইতিহাস জেগে ওঠে, ইতিহাস চির জাগরুক। যে জাতি নিজের ইতহাসকে মিথ্যাচারে রুপান্তরিত করে সে জাতি কোনোদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। শেখ রাসেল বাঙালি জাতির সেই ইতিহাসে এক জলন্ত প্রতিবাদের প্রতিমূর্তি। তার স্মৃতিকে চিরকাল বাঁচিয়ে রাখার জন্য বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে নির্মিত হয়েছে শেখ রাসেল মঞ্চ, শেখ রাসেল শিশু যাদুঘর, শেখ রাসেল শিশু গ্রন্থাগার। তার নামে রাজধানী ঢাকার বুকে রয়েছে একটি স্কেটিং স্টেডিয়াম, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ। এভাবেই শেখ রাসেল অমর হয়ে থাকবে বাঙালি জাতির হৃদয়ে, মাথার মনি হয়ে, হৃদয়ের পদ্ম হয়ে। শেখ রাসেল সকল শিশুর প্রতি ঘটে যাওয়া সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ। যারা শিশু রাসেলকে তার বেঁচে থাকার অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে তাদের জানাই ধিক্কার। ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে তারা নি:সন্দেহে। 
কবির ভাষায়-
রাসেল এখন কোথায়?
ছোট্ট একটা পাখী এসে 
এই তো বলে গেল 
রাসেল ছিল, রাসেল আছে 
তোমার আমার মনে 
ইচ্ছা হলেই বলছি কথা
দেখছি প্রতিক্ষনে
তাইতো সেদিন বললো রাসেল 
‘থাকবো আরো ভালো
সবাই মিলে সোনার বাংলা
গড়তে যদি পারো’।                                                                                     

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image