নিউজ ডেস্ক: দর বেঁধে দেওয়ার পরও ক্রেতাকে বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে চিনি ও সয়াবিন তেল। সরকার ও আমদানিকারকদের নির্ধারিত দরের চেয়ে খুচরা বাজারে চিনি কেজিতে সর্বোচ্চ ৫ টাকা এবং সয়াবিন লিটারে ৪ থেকে ৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি নতুন করে ফের দাম বাড়ার তালিকায় উঠেছে আটা, মুরগি ও পেঁয়াজ। অন্যদিকে আগে থেকে বেড়ে যাওয়া দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল ও সবজি।
ভোজ্যতেল আমদানি ও পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো গত ৩ অক্টোবর খোলা সয়াবিন তেলের লিটার ১৫৮, বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৭৮ এবং ৫ লিটারের বোতলের দাম ৮৮০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। এর তিন দিন পর চিনি ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৬ অক্টোবর কেজিতে ৬ টাকা বাড়িয়ে খোলা চিনি ৯০ এবং প্যাকেটজাত চিনির দর ৯৫ টাকা নির্ধারণ করে। তবে কিছু জায়গায় নির্ধারিত এ দরে বোতলজাত সয়াবিন ও প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হলেও খোলা চিনি ও সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে।
রাজধানীর তেজকুনিপাড়া, মহাখালী, মালিবাগ ও কারওয়ান বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৬৩ থেকে ১৬৪ টাকা।
তেজকুনিপাড়া এলাকার মাঈন উদ্দিন ট্রেডার্সের এক বিক্রয়কর্মী জানান, পাইকারি পর্যায়ে চিনির বস্তায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি চিনি এখন তাঁর কেনা পড়ে ৯০ থেকে ৯২ টাকা। ফলে ৯৪ বা ৯৫ টাকার কমে তিনি চিনি বিক্রি করতে পারছেন না।
চিনির দামের বিষয়ে প্রায় একই কথা জানান মহাখালী কাঁচাবাজারের ফরাজি স্টোরের স্বত্বাধিকারী বিকাশ বণিক। খোলা চিনি ৯০ টাকার বেশি কেনা পড়ে বলে তিনি প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি করছেন। এখন কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা এ মানের চিনির দামও বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছেন।
কারওয়ান বাজারের আব্দুর রব স্টোরের বিক্রয়কর্মী মো. নাঈম বলেন, বোতলজাত সয়াবিন ও পাম তেলের দাম অনেকটা কমেছে। তবে ডিলাররা খোলা সয়াবিন তেলের দাম কমাননি। পাইকারি পর্যায়ে কমলে খুচরা বাজারেও কমে যাবে।
আটা-ময়দার বাজার কয়েক মাস ধরেই চড়া। নতুন করে আবারও বাড়ছে আটার দাম। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, এক মাসে খোলা আটার দাম প্রায় ১১ শতাংশ এবং প্যাকেটজাত আটার দাম দুই শতাংশের বেশি বেড়েছে।
মালিবাগ বাজারের মায়ের দোয়া স্টোরের বিক্রয়কর্মী আল-আমীন সরকার জানান, আটার দাম কিছুটা বেড়েছে। কিছু কিছু কোম্পানির দুই কেজি আটার প্যাকেটের নতুন দর নির্ধারণ করেছে ১২২ ও ১২৬ টাকা। সে হিসাবে প্রতি কেজি আটার দাম পড়ছে ৬০ টাকার বেশি, যা এতদিন বিক্রি হয়েছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। খোলা আটারও দাম বেড়েছে। এ মানের আটা পাইকারি পর্যায়ে ৫৫ টাকার মতো কেনা পড়ে। খুচরায় কেজিতে এর চেয়ে দুই-তিন টাকা বেশি দরে বিক্রি করতে হয়।
পেঁয়াজের দামও কিছুটা বাড়তি। গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে পণ্যটির দাম। বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪৫ এবং দেশি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগির দাম আরও ১০ টাকা বেড়েছে কেজিতে। ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার। আর সোনালি জাতের মুরগি পাওয়া যাচ্ছে কেজি ২৮০ থেকে ৩২০ টাকায়।
ছয় মাস দাপট দেখানো মসুর ডাল এখন কিছুটা থিতু। কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে আমদানি করা মসুর ৯৫ থেকে ১০০ এবং দেশি মসুর ডাল ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন :গত ৩ অক্টোবর দাম কমিয়ে নতুন যে দর নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন, তাতে অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: