• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

কুমড়া বড়ি তৈরিতে সচ্ছলতা ফিরেছে সিংড়ার ১০ পরিবারে


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শুক্রবার, ০৬ জানুয়ারী, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০১:৩৭ পিএম
সিংড়ার ১০ পরিবারে
কুমড়া বড়ি তৈরি করে সচ্ছলতা

মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, নাটোর প্রতিনিধি : কুমড়া বড়ির এই গ্রামের নারী-পুরুষরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বড়ি বানাতে। শীতে বেশি দামে বড়ি বিক্রির আশা তাদের। রোদে ডাল শুকিয়ে তৈরি করা হয় কুমড়া বড়ি। এটি তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছে নাটোরের সিংড়া উপজেলার কলম পুন্ডরী গ্রামের প্রায় ১০টি পরিবার। 

এটাকে পেশা হিসেবে নিয়েছে তারা। আগে শীতকালে কুমড়া বড়ির চাহিদা বেশি থাকতো। সেই কারণে শুধু শীতকালেই বড়ি তৈরি হতো। সারাদেশে চাহিদা ক্রমশ বেড়েছে। ফলে পরিবারগুলোর ওপর তাগিদ সৃষ্টি হয়েছে সারাবছরই সরবরাহের।

পুন্ডরী গ্রামের এই পরিবারগুলো কুমড়া বড়ির ব্যবসা করে সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছে। বছরের ছয় মাস এ ব্যবসায় এখন পরিবারগুলোর চালচিত্র বদলে গেছে। প্রতিটি পরিবারের ছেলেমেয়ে স্কুল-কলেজে পড়ছে। সেই সাথে নারীরাও সচ্ছলতার আলো এনেছে সংসারে।

সরেজমিনে পুন্ডরী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বড়ি তৈরি করে শুকানোর জন্য সারি সারি রোদে দেওয়া। নারীদের পাশাপাশি পুরুষরাও এই কাজ করছেন। এটি তৈরির প্রধান উপকরণ এংকার ডাল,  মাশকালাইয়ের ডাল, খেসারির ডাল এবং মসলা। স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি মাশকালাই ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। তারপর মিশ্রণে বড়ির উপকরণ তৈরি হয়। উজ্জ্বল রোদ, ফাঁকা স্থান ও বাড়ির আঙিনায় খোলা জায়গায় ভোর থেকে তা তৈরির কাজ শুরু হয়। টিন বা পাতলা কাপড়ে সারি সারি এটি রোদে রাখা হয় শুকানোর জন্য। দুই থেকে তিন দিন টানা রোদে শুকাতে হয়। তারপরে তা খাওয়া বা বিক্রির উপযোগী হয়।

কারিগররা জানান, এই বড়ি দিয়ে বোয়াল, বাইম, কৈ, শিং অথবা শোল মাছের ঝোল বেশ মুখরোচক ও জনপ্রিয়। এটি বানানোর উপযুক্ত সময় শীতকাল। তবে চাহিদা বাড়ায় এখন সারাবছরই তৈরি করা হচ্ছে। কলম পুন্ডরী গ্রামের নারীরা সারাবছর ব্যস্ত বড়ি বানানোর কাজে। বাড়ির চাহিদা মিটিয়ে এটি হাত বদল হয়ে চলে যাচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে। তারা জানায়, বগুড়া, নাটোর, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, ঢাকা থেকে পাইকাররা এসে বড়ি নিয়ে যায়।

বড়ি তৈরির কারিগর পুন্ডরী গ্রামের রাশেদা বেগম বলেন, কুমড়া বড়ি বানানো ৮ বছরের অভিজ্ঞতা আমার। মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় হয়। সেটি দিয়ে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে থাকি।

তিনি আরও জানান, আমাদের দেখে এলাকার ১০টি নারী এই কাজে এখন ব্যস্ত। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে তা বানানোর ধুম পড়ে যায়। এখানকার বড়ি সুস্বাদু। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে এগুলো সরবরাহ করা হয়।

কারিগর আলামিন শাহ্ জানান, প্রায় ১৫ বছর ধরে এই পেশায় আছি। তাই আজও তা করে আসছি। বড়ি মূলত ডাল, মাশকালাই, চালকুমড়া, জিরা, কালোজিরা, মোহরী দিয়ে তৈরি করা হয়। প্রতি কেজি ১২০-১৫০ টাকা করে পাইকারি বিক্রয় করা হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিনিয়তই পাইকাররা এসে আমাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে যায়। এছাড়া স্থানীয় বিভিন্ন হাটেও খুচরা বিক্রয় করা হয় এই বড়ি।

বগুড়া জেলা থেকে বড়ি কিনতে এসেছেন ব্যবসায়ী মিল্টন আলী। তিনি বলেন, এখানকার বড়ি সুস্বাদু ও বেশ ভালো। তাই চাহিদাও অনেক বেশি। অন্য জায়গার বড়ি কম দামে পাওয়া গেলেও নিতে চান না ভোক্তারা। তাই বেশি দামে হলেও ভালোটা নিতে হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম এম সামিরুল ইসলাম বলেন, পাইকাররা ছাড়াও তারা অনলাইন প্লাটফর্মে কুমড়া বড়ি বিক্রি করতে পারেন। এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগররা চাইলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image