• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

যুদ্ধ-সংঘাত এবং নিষেধাজ্ঞা বন্ধের আহবান, জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ১১:০১ এএম
যুদ্ধ-সংঘাত এবং নিষেধাজ্ঞা বন্ধের আহবান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

নিউজ ডেস্ক : আমরা ইউক্রেন ও রাশিয়ার সংঘাতের অবসান চাই বলেছেন,  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে একটি দেশকে শাস্তি দিতে গিয়ে নারী, শিশুসহ গোটা মানবজাতিকেই শাস্তি দেয়া হয়। এর প্রভাব কেবল একটি দেশেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং সকল মানুষের জীবন-জীবিকা মহাসংকটে পতিত হয়; মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়।

বৈশ্বিক শান্তির জন্য ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গোটা মানবজাতিকে কষ্ট থেকে মুক্তি দিতে সব ধরনের অস্ত্র প্রতিযোগিতা, যুদ্ধ-সংঘাত এবং নিষেধাজ্ঞা বন্ধেরও ডাক দেন তিনি।

স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেলে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব আহ্বান জানান। বরাবরের মতো এবারও বাংলায় ভাষণ দেন শেখ হাসিনা। এটি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তার ১৯তম ভাষণ।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ইউক্রেন ও রাশিয়ার সংঘাতের অবসান চাই। নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে একটি দেশকে শাস্তি দিতে গিয়ে নারী, শিশুসহ গোটা মানবজাতিকেই শাস্তি দেয়া হয়। এর প্রভাব কেবল একটি দেশেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং সব মানুষের জীবন-জীবিকা মহাসংকটে পতিত হয়; মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়।

খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। বিশেষ করে, শিশুরাই বেশি কষ্ট ভোগ করে। তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে হারিয়ে যায়। বিশ্ব বিবেকের কাছে আমার আবেদন, অস্ত্র প্রতিযোগিতা, যুদ্ধ, স্যাংশন বন্ধ করুন। শিশুকে খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা দিন। শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দেখতে চাই, একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্ব যেখানে থাকবে বর্ধিত সহযোগিতা, সংহতি, পারস্পরিক সমৃদ্ধি এবং ঐকবদ্ধ প্রচেষ্টা। আমাদের একটি মাত্র পৃথিবী এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই গ্রহকে আরও সুন্দর করে রেখে যাওয়া আমাদের দায়িত্ব।’

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে সপরিবারে বাবা-মাকে হারানোর কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কাজেই যুদ্ধের ভয়াবহতা, হত্যা-ক্যু-সংঘাতে মানুষের যে কষ্ট-দুঃখ-দুর্দশা হয়, ভুক্তভোগী হিসেবে আমি তা উপলব্ধি করতে পারি। তাই যুদ্ধ চাইনে, শান্তি চাই; মানবকল্যাণ চাই। মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, আগামী প্রজন্মের জন্য শান্তিময় বিশ্ব, উন্নত-সমৃদ্ধ জীবন নিশ্চিত করতে চাই। আমার আকুল আবেদন, যুদ্ধ, অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন। সমুন্নত হোক মানবিক মূল্যবোধ। আসুন, সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে হাতে হাত মিলিয়ে আমরা একটি উত্তম ভবিষ্যৎ তৈরির পথে এগিয়ে যাই।

আলাপ আলোচনাই বিরোধ-সংঘাত মেটানোর সর্বোত্তম উপায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধ বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার মতো বৈরী পন্থা কখনও কোনো জাতির মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। পারস্পরিক আলাপ-আলোচনাই সংকট ও বিরোধ নিষ্পত্তির সর্বোত্তম উপায়।’

সংকট নিরসনে ‘গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ’ গঠন করায় জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই গ্রুপের একজন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে, আমি বর্তমান পরিস্থিতির গুরুত্ব ও সংকটের গভীরতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি বৈশ্বিক সমাধান নিরূপণ করতে অন্যান্য বিশ্বনেতাদের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।’

‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক’ রাখার নীতির কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, “বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত পররাষ্ট্রনীতির মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।’ বাংলাদেশ জন্মলগ্ন থেকেই এই প্রতিপাদ্য উদ্ভূত জোট নিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ করে আসছে।"

এ বছরের সাধারণ বিতর্কের প্রতিপাদ্য ‘একটি সংকটপূর্ণ সন্ধিক্ষণ: আন্তঃসংযুক্ত প্রতিকূলতাগুলোর রূপান্তরমূলক সমাধান।'

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবারের প্রতিপাদ্যে এসব প্রতিকূলতা মোকাবিলায় এবং আমাদের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করে শান্তিপূর্ণ ও টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলার উপায় খুঁজে বের করার জন্য সকলের ঐক্যবদ্ধ আকাঙ্ক্ষার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। আর এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের এখনই সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে।’

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image