
ডেস্ক রিপোর্টার : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের রিভিউ খারিজের রায় প্রকাশ করেছেন আদালত। ফলে একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি কার্যকরে আইনি বাধা নেই।
বুধবার (৩ মার্চ) সকালে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৮ সদস্যের আপিল বেঞ্চ স্বাক্ষর করার পর ২১ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।
মঙ্গলবার (২ মার্চ) অধ্যাপক তাহের হত্যার দুই আসামি শিক্ষক মহিউদ্দিন ও কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীরের রিভিউ খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৮ সদস্যের বেঞ্চ।
২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাবির কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ। পদোন্নতিসংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে তাকে নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হন তিনি। ৩ ফেব্রুয়ারি নিহত অধ্যাপক তাহেরের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছিল পুলিশ। বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত ৪ জনকে ফাঁসির আদেশ ও ২ জনকে খালাস দেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন: একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, নিহত অধ্যাপক ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীর আলমের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের সম্বন্ধী আবদুস সালাম।
খালাস পাওয়া চার্জশিটভুক্ত ২ আসামি হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও আজিমুদ্দিন মুন্সী।
২০০৮ সালে বিচারিক আদালতের রায়ের পর নিয়ম অনুযায়ী ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণ) হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন। শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় দুই আসামির ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল এবং অন্য দুই আসামির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন হাইকোর্ট।
ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল রাখা দুই আসামি হলেন অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া দুই আসামি হলেন নাজমুল আলম ও আবদুস সালাম।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, ‘আসামিদের স্বীকারোক্তিগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, হত্যার এই ষড়যন্ত্রে মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিনই মুখ্য এবং সক্রিয় ভূমিকা পালন করছিলেন। আমাদের এটা বলতে দ্বিধা নেই যে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন শুধু প্রফেসর হিসেবে পদোন্নতি পেতেই ড. তাহেরকে এই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেন।
তার ধারণা ছিল, ড. তাহের বেঁচে থাকলে অধ্যাপক হিসেবে তার পদোন্নতি পাওয়া সম্ভব না। আমাদের এও বলতে দ্বিধা নেই যে, আপিলকারী জাহাঙ্গীর আলম এবং আবেদনকারী আবদুস সালাম ও নাজমুল আর্থিক সুবিধাসহ অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার জন্য অধ্যাপক তাহের আহমেদকে হত্যার জন্য ড. মহিউদ্দিনের প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: