বিজয়কর রতন, মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ- মিঠামইন উপজেলার গোপদিঘী ইউনিয়নের ধলাই, বগাদিয়া এলাকা থেকে শ্যামপুর দারুলউলুম দাখিল মাদ্রাসার তিনটি স্থাপনা সহ ২০ লক্ষ টাকার মালামাল দিন দুপুরে একই ইউনিয়ন প্রতিপক্ষ শ্যামপুরের লোকজনের বিরুদ্ধে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গিয়াছে।
ঘটনাটি গত ৯ই সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে ঘটে।ঘটনার পর এলাকায় পুলিশ মোতায়েন ছিল। গতকাল ১০ই সেপ্টেম্বর শনিবার এব্যাপারে শ্যামপুর মাদ্রাসার সুপার আমিনুল হক বাদি হয়ে মিঠামইন থানায় ৮২ জন আসামি সহ অজ্ঞাত নামা আরও শতাধিক লোকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
১০ ই সেপ্টেম্বর শনিবার কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ(পিপি এম বার), অষ্ট্রগ্রাম সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সামুয়েল সংমা ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন। জানা যায়, এ মাদ্রাসার স্থান নিয়ে দীর্ঘ দিন যাবৎ দু'পক্ষের মধ্যে মামলা মোকদ্দমা চলে আসছে আদালতে। বর্তমানে যে জায়গা থেকে প্রতি পক্ষের লোকজন স্থাপনা গুলি সহ মালামাল নিয়ে গেছে সে জায়গা টি আদালত থেকে প্রাপ্ত রায়ের জায়গা। গত ২২ই জুন কাল বৈশাখের ঝড়ে মাদ্রাসার ৩টি স্থাপনা উড়িয়ে নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১১ বান্ডিল টিন বরাদ্দ দেয়া স্থাপনা তৈরির জন্য। স্থাপনা তৈরির ৩ দিন পরই শ্যামপুরের লোকজন তৈরি করা ৩ টি স্থাপনা ও মালামাল দিন দুপুরে দেশিয় অস্ত্র সহ সজ্জিত হয়ে হামলা চালিয়ে নিয়ে যায়। এ তান্ডব প্রায় ৩ ঘটনা যাবৎ চলে। এলাকাবাসী জানায়,ঘটনার সময় পুলিশের নিরবতাকে রহস্যজনক মনে হচ্ছে। স্থাপনা ভেঙ্গে নেওয়ার সময় তাদেরকে বাধা দিতে গেলে পুলিশ ঘটনার স্থলে ধলাই ও বগাদিয়ার লোকজনকে যেতে দেয়নি।তারা আসামিদের পক্ষে কাজ করেছে বলে জানান।
গতকাল শনিবার ১০ই সেপ্টেম্বর সরজমিনে ঘটনা স্থল ধলাই বগাদিয়া গিয়ে কয়েকজন গ্রাম বাসীর সাথে কথা হয়,তারা হলেন কাজী মিয়া,মতি মিয়া,হেলাল মিয়া,রুপ মিয়া,শামীম মিয়া,মোঃ শাহ আলম তারা জানান, সকাল ৭ টা সময় ৩ শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আধা কিলোমিটার দূরে শ্যামপুর থেকে বগাদিয়া এসে মাদ্রাসার স্থাপনা ভেঙ্গে নিয়ে যায়।এসময় তারা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের লোকজনকে সেখানে যেতে দেয়নি।তারা এ ঘটনার জন্য পুলিশকে দায়ী করছে।
ঘটনার পর পরই মিঠামইন সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ্যাডঃ শরীফ কামাল,উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ইব্রাহিম মিয়া,উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মোঃ শাহজাহান মিয়া,উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার বৈষ্ণব গোপদিঘী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ঘটনা স্হল পরিদর্শন করেন। এবং এলাকা বাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। শ্যামপুর দারুলউলুম দাখিল মাদ্রাসার সুপার ও মামলার বাদী আমিনুল হক জানান, তিনি মাদ্রাসা ভেঙ্গে নেওয়ার পরিকল্পনার কথা পূর্বেই জেনেছেন।এর জন্য গত ৮ ই সেপ্টেম্বর তিনি মিঠামইন থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কিন্তু অভিযোগ দায়ের এর পরেও পুলিশ সেখানে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছিলো।
অভিযোগের পরের দিন ৯ ই সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে শ্যামপুরের সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩ শতাধিক লোক এসে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে ৩ টি ঘর ও আসবাবপত্র সহ ২০ লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এ তান্ডব খন্ড খন্ড ভাবে দিন ভর চলতে থাকে।পরে তিনি নিরুপায় হয়ে মিঠামইন থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। প্রতি পক্ষ সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে, এমনকি সে বাড়িতে ও নেই।শ্যাম পুর গ্রামের অপর এক শিক্ষক হারুন মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মামলার কারণে এলাকা থেকে তারা সরিয়ে পড়েছে। তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।
মিঠামইন থানার ওসি কলিন্দ্র নাথ গোলদার জানান, ঘটনার বিষয়ে ঘটনার পূর্বে মাদ্রাসার সুপার একটি অভিযোগ দায়ের করে ছিলেন।তিনি ঘটনার দিন সকালে ঘটনা স্থলে পুলিশ পাঠান।এবং তিনি নিজেও যান। ততক্ষণে তারা স্থাপনা গুলি ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। পুলিশ ঘটনা স্থলে উভয় পক্ষকে দাঙ্গা হাঙ্গামা থেকে রক্ষা করার জন্য একএে হতে দেয়নি।পুলিশ কোনো পক্ষ পাতিত্ব করেনি। এ অভিযোগ সত্য নয়। ঘটনা স্থল পুলিশ সুপার মোঃ রাসেল শেখ (পি পি এম বার) ও সহকারী পুলিশ সুপার সামুয়েল সংমা আজ শনিবার পরিদর্শন করেছেন। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: