• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ২৮ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

ব্যক্তিস্বার্থ নয়, সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়নে রাজনীতি করেছেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ০৫ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০১:৪০ পিএম
তাঁর এই রাজনীতিই এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন
বিশেষ গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা বাহিনীর সভায় বক্তব্য রাখছেন ফওজিয়া মোসলেম

নিউজ ডেস্ক:  ব্যক্তিস্বার্থ নয়, সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনীতি করেছেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য। ধর্ম-সম্প্রদায়ের ঊর্ধ্বে থেকে দেশ ও মানুষকে গভীরভাবে ভালোবেসেছেন তিনি। তাঁর এই রাজনীতিই এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। প্রয়াত এই বাম নেতার স্মরণসভায় অংশ নিয়ে এভাবেই পঙ্কজ ভট্টাচার্যের কাজের মূল্যায়ন করেছেন বক্তারা।

শনিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক পঙ্কজ ভট্টাচার্যের স্মরণে এ সভা হয়। বিশেষ গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা বাহিনীর কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম। বিশেষ গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা বাহিনীর কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক খান সিদ্দিকুর রহমান সভাটি সঞ্চালনা করেন।

ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য ছিলেন গত শতকের ষাটের দশকের অন্যতম ছাত্রনেতা। তিনি আজীবন দেশের গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে গেছেন। গত ২৪ এপ্রিল তিনি পরলোকগমন করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ, সিপিবি, ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীদের নিয়ে একটি গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা দল গঠন করা হয়েছিল। পঙ্কজ ভট্টাচার্য এই গেরিলা দলের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। সভার শুরুতেই গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন জেলা কমিটির প্রতিনিধি, রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পঙ্কজ ভট্টাচার্যের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। শোক প্রস্তাব পাঠ করেন প্রবীণ সাংবাদিক চপল বাসার। এরপর এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সংগীত পরিবেশন করেন নম্রতা মনস্বী বসু ও ঋদ্ধি ঋত্বিকা বসু।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান বলেন, ঢাকাসহ সারা দেশে রাজনৈতিক দল ছাড়াও সামাজিক সংগঠনের আয়োজনে পঙ্কজ ভট্টাচার্যের স্মরণসভা হচ্ছে। সেখানে দল–মত–ধর্ম–সম্প্রদায়ের ঊর্ধ্বে থেকে সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত হয়ে তাঁর প্রতি শোক প্রকাশ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। এটা সম্ভব হয়েছে কারণ পঙ্কজ ভট্টাচার্য তাঁর সারা জীবনে ব্যক্তিগত স্বার্থ, জাতি–সম্প্রদায়ের সংকীর্ণতার কথা ভাবেননি। তিনি দেশ ও মানুষকে হৃদয় দিয়ে গভীরভাবে ভালোবাসেন। তাঁর মতো মানুষ সমাজ ও রাজনীতিতে বিরল।

সভাপতির বক্তব্যে ফওজিয়া মোসলেম বলেন, পঙ্কজ ভট্টাচার্যরা যখন রাজনীতি করতেন, তখন নিজের স্বার্থের কথা ভাবতেন না। কে বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন, সেটাই তাঁদের লক্ষ্য ছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন, ধনী ও দরিদ্রের বৈষম্য কমানো সম্ভব। এ জন্য তিনি গণমানুষের ক্ষমতায়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করতেন। তাই এই রাজনীতির এখন বড় প্রয়োজন।

পঙ্কজ ভট্টাচার্য শুধু একজন বড় মাপের রাজনীতিবিদই নন, মানুষ হিসেবেও অতুলনীয় ছিলেন বলে মন্তব্য করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী। তিনি বলেন, গত শতকের ষাটের দশক এ দেশের সমাজ ও রাজনীতির ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। তখন যে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, সেটিই একত্র হয়ে স্বাধীনতার চূড়ান্ত লক্ষ্যের দিকে এগিয়েছিল। সেখানে কিছু নেতার অনন্য ভূমিকা ছিল। পঙ্কজ ভট্টাচার্য ছিলেন তাঁদের অন্যতম।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, দেশভাগের সময় পঙ্কজ ভট্টাচার্যের পরিবার ভারতে চলে গেলেও তিনি আজীবন মাতৃভূমি বাংলাদেশেই থেকে গেছেন। দেশের প্রতি তাঁর ভালোবাসার দিগন্ত ছিল সুদূরপ্রসারী। তিনি আদর্শের যে আলোর মশাল জ্বালিয়ে গেছেন, তা নতুন প্রজন্মের হাতে তুলে দিতে হবে।

সারা জীবন কীভাবে আদর্শিক অবস্থান ধরে রাখতে হয়, তা পঙ্কজ ভট্টাচার্য দেখিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক। তিনি বলেন, পঙ্কজ ভট্টাচার্য কখনো মাথা নত করেননি। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি সংস্কৃতি এবং জীবনের শেষ পর্যায়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে গেছেন।

বিশেষ গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা বাহিনীর সদস্যসচিব আবদুল গণি বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ এখন অনেক বদলে গেছে। গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের পাশাপাশি মৌলবাদকে প্রতিহত করার আন্দোলনও অব্যাহত রাখতে হবে।

স্মরণসভায় পরিবারের পক্ষে পঙ্কজ ভট্টাচর্যের শ্যালিকা বহ্নিশিখা পুরকায়স্থসহ আরও বক্তব্য দেন গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শহীদুল্লাহ সিকদার, সাধারণ সম্পাদক সাহাদাত হোসেন, ঐক্য ন্যাপের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল মোনায়েম, ন্যাপ নেতা এম এ গনি, মণি সিং-ফরহাদ ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক মুকুল চৌধুরী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, ঐক্য ন্যাপ নেতা তোবারক হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম চৌধুরী, আবু তালেব ও বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিরা।

ঢাকানিউজ২৪.কম /

আরো পড়ুন

banner image
banner image