
নিউজ ডেস্ক: ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন মহলের তীব্র সমালোচনার মধ্যেই রোববার চতুর্থ ধাপেও ব্যাপক সহিংসতা দেখা গেছে। ঠাকুরগাঁওয়ে ভোটকেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। সিলেটেও ভোটকেন্দ্রে গুলিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, কেন্দ্র দখলের চেষ্টা, জাল ভোট ও অনিয়মের অভিযোগে প্রার্থীদের নির্বাচন বর্জন এবং পোলিং এজেন্টদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধারের মতো নানা ঘটনায় এ ধাপে দেশের ৮৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট সম্পন্ন হয়েছে।
ভোটে বিভিন্ন স্থানে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও বোমা-ককটেল হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রকাশ্যে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে বেধেছে সংঘর্ষ।
সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বেশ কয়েক জায়গায় গুলিবর্ষণ করতে হয়েছে।
ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী, কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা, মুন্সীগঞ্জ ও যশোরে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে। সংঘর্ষে প্রার্থীসহ ১৫০ জনের বেশি আহত হয়েছে। সহিংসতা ও অনিয়মের অভিযোগে পুলিশ প্রায় ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া, সিরাজগঞ্জসহ কয়েক স্থানে কেন্দ্র দখলের পর ভোট স্থগিত করা হয়। চট্টগ্রাম, জয়পুরহাট ও চুয়াডাঙ্গায় নির্বাচন বর্জন করেছেন কয়েক প্রার্থী। অবশ্য ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার দাবি করেছেন, মানুষ আনন্দমুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছে।
এদিন ৫৮টি জেলার ১১৮টি উপজেলায় ভোট হয়েছে। তবে প্রাথমিক তথ্যে দেখা গেছে, আগের ধাপগুলোর তুলনায় গতকাল প্রাণহানি কম হয়েছে। ইউপি নির্বাচনে অবশ্য ভোটের পরই সাধারণত বেশি সহিংসতা হয়। নির্বাচনী সহিংসতায় এর আগে অন্তত ৮৮ জনের মৃত্যু এবং শত শত লোক আহত হয়েছেন।
ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের গুলিতে হামিদুল ইসলাম (৬০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ সময় আবুল কালাম নামে আরও একজন আহত হন। সদর উপজেলার রাজাগাঁও ইউনিয়নের আসাননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণার সময় মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকরা কেন্দ্র ঘেরাও করলে পুলিশ গুলি ছুড়লে এ ঘটনা ঘটে। হামিদুল দক্ষিণ আসাননগর এলাকার বাসিন্দা। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীরুল ইসলাম।
সিলেটের গোলাপগঞ্জের ফুলবাড়ি ইউনিয়নের বইটিকট এলাকায় গোলাগুলিতে আবদুস সালাম নামের একজন নিহত হয়েছেন বলে তার ছেলে জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন। নিহতের বাড়ি লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের দক্ষিণ রামপায়। নিহতের ছেলে জানান, ফলাফল ঘোষণার পর দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আবদুস সালাম।
প্রতিনিধিরা জানান, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য কেন্দ্রগুলোতে র্যাব, বিজিবি, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। বেশিরভাগ কেন্দ্রেই ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে পেরেছেন। ভোটারদের উপস্থিতিও ছিল সন্তোষজনক।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: