
নিউজ ডেস্ক: গোপালগঞ্জে নতুন জাতের আলু চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। ক্যারোলাস জাতের এই আলু দ্বিগুণের বেশি ফলন দিচ্ছে বলে কৃষকেরা জানিয়েছেন। নতুন জাতের আলু চাষে আগ্রহ তৈরি হচ্ছে কৃষকদের মধ্যে।
সোনাকুড় গ্রামের কৃষক মো. রেজাউল হক সিকদার বলেন, নতুন জাতের আলু প্রচলিত আলুর চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি ফলন দিয়েছে। এই আলুতে রোগবালাই নেই। স্বাভাবিক পরিচর্যায় এই আলু ভালো ফলন দেয়। পরিবর্তিত আবহাওয়ায় নতুন জাতের সব আলু খাপ খাইয়ে নিতে পারে। তাই এই আলু চাষ করে আমি অধিক ফলন পেয়েছি। আমার খেতের আলু দেখে অনেকেই আগামী বছর এসব জাতের আলু চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে।’
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) নতুন জাতের আলু নিয়ে কাজ শুরু করেছে। এসব জাতের আলু কৃষিতে সমৃদ্ধি আনবে। এই আলু বিদেশে রপ্তানি করা যাবে। গোপালগঞ্জে নতুন জাতের আলুর মালটি লোকেশন পারফর্মেন্স ট্রায়েল পরিদর্শন শেষে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান এ এফ এম হায়াতুল্লাহ এসব তথ্য জানান।
ঐ কর্মকর্তা আরও জানান, ‘মানসম্মত আলুবীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ এবং কৃষক পর্যায়ে বিতরণ জোরদারকরণ’ প্রকল্পের আওতায় গোপালগঞ্জের সোনাকুড় গ্রামের কৃষক মো. রেজাউল হক সিকদারের ২ একর জমিতে নতুন জাতের আলুর মালটি লোকেশন পারফর্মেন্স ট্রায়েল করা হয়। প্রচলিত আলু প্রতি হেক্টরে ২২ টন পর্যন্ত ফলন দিতে পারে। কিন্তু নতুন জাতের আলু ৪০ থেকে ৫৩ টন পর্যন্ত ফলন দিয়েছে। এই জাতের আলু চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হবেন।
ঐ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের দেশে ১ কোটি ১০ লাখ টন আলু উৎপাদিত হয়। আমাদের আলুর চাহিদা রয়েছে ৮০ লাখ টন। ৩০ লাখ টন উদ্বৃত্ত থাকছে। রাশিয়া আমাদের আলু নিতে চাইছে। আমরা নতুন জাতের আলু চাষাবাদ সম্প্রসারণের কাজ করছি।’ ‘মানসম্মত আলুবীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ এবং কৃষক পর্যায়ে বিতরণ জোরদারকরণ’ প্রকল্পের পিডি মো. আবীর হোসেন বলেন, সান্তানা, সানসাইন, ডোনাটা, কুইনএনি, প্রাডা, প্রিমাভেরা, আডাটো, রাশিদা, সেভেন ফোর সেভেন, এডিসন, ক্যারোলাস, মিউজিকা, ফরিদা, গ্রানোলা, ডায়মন্ট, বারি ৪১, অ্যাস্টারিক্স, বারি ৩৫, বারি ৭৯, বারি ৩৭ জাতের আলুর মালটি লোকেশন পারফর্মেন্স ট্রায়েল করা হয়েছে। সেখানে নতুন জাতের আলুর বাম্পার ফলন পাওয়া গেছে। এই জাতের আলুর বহুমুখী ব্যবহারের যোগ্যতা রয়েছে। এই আলু রপ্তানি যোগ্য।
গোপালগঞ্জ বিএডিসির উপপরিচালক দীপংকর রায় বলেন, ‘আমরা গোপালগঞ্জে বীজ আলু ও রপ্তানিযোগ্য আলু উৎপাদন করছি। এ বছর ২০০ একরে বীজ আলু উৎপাদন করেছি। ১০ একরে রপ্তানিযোগ্য আলু উৎপাদিত হয়েছে। এছাড়া ২ একরে ২০ জাতের আলুর মালটি লোকেশন পারফর্মেন্স ট্রায়েল করা হয়েছে। বীজ আলু ও রপ্তানিযোগ্য আলু উৎপাদন করে কৃষক লাভবান হয়েছেন। আলুর মালটি লোকেশন পারফর্মেন্স ট্রায়ালেও ব্যাপক সাফল্য এসেছে। নতুন জাতের আলুর চাষাবাদ সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে কৃষিতে সমৃদ্ধি আসবে।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: