আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ইউক্রেনের সৈন্যরা রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ মস্কভা তলিয়ে দিয়েছিল বলে দেশটির একাধিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হয়েছে।
নাম উল্লেখ না করা যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এনবিসিকে নিউজকে জানায়, ইউক্রেনীয়রা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে দক্ষিণ ওডেসার দিকে যাওয়া একটি জাহাজের অবস্থান জানতে চায়। যুক্তরাষ্ট্র পরে তাদের জানায়, এই জাহাজটিই ‘মস্কভা’ ছিল এবং এরপর তার অবস্থানও বলে দেয়। পরে ইউক্রেনীয় বাহিনী এটিতে দুটি মিসাইল ছুড়ে।
নাম উল্লেখ না করা ওই কর্মকর্তারা আরও জানান, ইউক্রেনীয়রা মস্কভায় হামলা চালাবে এমনটা তারা জানতেন না। রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ মস্কভা তলিয়ে দেওয়ায় ইউক্রেনীয় সৈন্যদের সহায়তার অভিযোগ নাকচ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র মস্কভাকে লক্ষ্যবস্তু করতে কোনো সুনির্দিষ্ট অবস্থানের কথা বলেনি। এই হামলার সঙ্গে বা ইউক্রেনীয়দের অভিযানের সঙ্গে আমরা যুক্ত নই।’
তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনীয়দের রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ চিহ্নিত করার জন্য নিজস্ব প্রযুক্তি রয়েছে তারা এ ক্ষেত্রে সেগুলোই কাজে লাগিয়েছিল।
এর আগে কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ ‘মস্কভা’ ডুবে যাওয়ার পর প্রথমবারের মতো ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে মুখ খুলে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
রাশিয়ার রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় শুক্রবার দেওয়া এক বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাহাজে আগুন লেগে বিস্ফোরণের ঘটনায় একজন নাবিক নিহত হবার পাশাপাশি ২৭ জন নিখোঁজ হয়েছেন।
গত ১৩ এপ্রিল এক বিস্ফোরণের পর সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যুদ্ধজাহাজ ‘মস্কভা’। পরে সাগরের ঝড়ো হাওয়ার মধ্যে জাহাজটিকে বন্দরের দিকে টেনে নেওয়ার পথে ১৪ এপ্রিল সেটি ডুবে যায়। যদিও ইউক্রেন দাবি করে, তাদের নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই মস্কভা ডুবে গেছে।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, অগ্নিকাণ্ডের পর নাবিকরা যখন জাহাজটি রক্ষার চেষ্টা করছিলেন তখন একজন নিহত হন। এ ছাড়া নিখোঁজ হন আরও ২৭ নাবিক। বাকি ৩৯৬ নাবিককে উদ্ধার করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মস্কভা থেকে রক্ষা পাওয়া বেশির ভাগ অফিসার, মিডশিপম্যান ও নাবিক কৃষ্ণসাগরে অভিযানের কাজ চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাদের মধ্যে বেশকিছু কর্মী নৌবহরের অন্যান্য জাহাজে অবস্থান করবেন এবং অভিযান চালিয়ে যাবেন।
কৃষ্ণসাগরে মোতায়েন রাশিয়ার নৌবহরটি ব্ল্যাক সি ফ্লিট হিসেবে পরিচিত ছিল। রাশিয়ার কৃষ্ণসাগর বহরের নেতৃত্বে ছিল মস্কভা। জাহাজটি ১৯৮৩ সালে রাশিয়ার নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়। যুদ্ধজাহাজটিতে ১৬টি জাহাজবিধ্বংসী ‘ভলকান’ ক্রুইজ ক্ষেপণাস্ত্র ছিল। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা অন্তত ৭০০ কিলোমিটার (৪৪০ মাইল)। ১২ হাজার ৫০০ টনের এই যুদ্ধজাহাজটিতে সাধারণত প্রায় ৫০০ জন নাবিক অবস্থান করতেন।
২০২১ এর এপ্রিলে রাশিয়ার একজন অবসরপ্রাপ্ত অ্যাডমিরাল মস্কভাকে ‘কৃষ্ণসাগরীয় নৌবহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: