জাফর আলম, কক্সবাজার: কক্সবাজারের টেকনাফের আলীখালী ক্যাম্প থেকে পাঁচ রোহিঙ্গাকে অপহরণ করেছিল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। এর মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম নামে এক রোহিঙ্গা কিশোরের হাতের কবজি কেটে অপর চার জনের পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে অপহরণকারীরা। জাহাঙ্গীর আলম (১৬) টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের আলীখালীর ২৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সামসু আলমের ছেলে। তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার (২ জুন) রাতে আলীখালী ক্যাম্প থেকে জাহাঙ্গীরসহ পাঁচ রোহিঙ্গা অপহরণের শিকার হন। অপর চার জন হলেন একই ক্যাম্পের নুর হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ ইউনুস (৩২), মোহাম্মদ রফিকের ছেলে মোহাম্মদ সুলতান (২৪), আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ (১৬) ও মোহাম্মদ সৈয়দের ছেলে আনোয়ার ইসলাম (১৮)।২৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা (মাঝি) নুরুল আমিন বলেন, ‘শুক্রবার রাতে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পাঁচ রোহিঙ্গাকে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা।
শনিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পের কাঁটাতারের পাশের পাহাড়ে জাহাঙ্গীরের বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন ফেলে রেখে যায় তারা। খবর পেয়ে ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা তাকে উদ্ধার করে এনজিও হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নুরুল আমিন বলেন, ‘জাহাঙ্গীরের হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে অপহৃত অপর চার জনের পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ করে ২০ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছে অপহরণকারীরা। টাকা দিলে ছেড়ে দেবে, না দিলে হত্যার হুমকি দিয়েছে তারা।সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আশিকুর রহমান বলেন, শনিবার রাতে বাঁ হাতের কবজি কাটা অবস্থায় এক রোহিঙ্গাকে হাসপাতালে আনা হয়। তার হাতের কবজি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে।
বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ওই কিশোর। পাঁচ রোহিঙ্গাকে অপহরণের কথা শুনেছি জানিয়ে টেকনাফ থানার ওসি মো. আবদুল হালিম বলেন, ‘আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও পুলিশের একাধিক টিম অপহৃতদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক পুলিশ সুপার জামাল পাশা বলেন, পাঁচ রোহিঙ্গাকে অপহরণের কথা শোনার পর থেকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে হাতের কবজি কেটে একজনকে ফেলে গেছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, টেকনাফের পাহাড়গুলোতে আস্তানা গড়েছে একাধিক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। গত আট মাসে টেকনাফের ৬৫ জন এসব গোষ্ঠীর হাতে অপহরণের শিকার হন। গত ২৮ এপ্রিল পাত্রী দেখতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন সদরের চৌফলদণ্ডী ইউনিয়নের উত্তরপাড়ার মোহাম্মদ আলমের ছেলে জমির হোসেন রুবেল, তার দুই বন্ধু ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ সওদাগর পাড়া এলাকার মোহাম্মদ ইউসুফ ও নুনিয়াছড়া এলাকার ইমরান হোসেন।এদিকে, ২৪ মে টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় করা মামলায় চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: