
নিউজ ডেস্ক: ১৯৭১ এর অগ্নিঝরা মার্চের দিনগুলি স্মরণে বাংলাদেশ জাসদ দলীয় কার্যালয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ নুরুল আম্বিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সভাপতির ভাষনে জনাব শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন," স্বাধীন বাংলাদেশ একটি ধারাবাহিক রাজনৈতিক আন্দোলনের ফসল। অগ্নিঝরা ১৯৭১ এর মার্চ মাসের প্রতিদিন বিভিন্ন কর্মসূচি, ঘটনাবলী, আন্দোলন ও জীবনদানের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রাম অগ্রসর হয়েছে। ১লা মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করায় বিক্ষুব্দ জনতা ২রা ও ৩রা মার্চের পতাকা উত্তোলন ও ইশতেহার পাঠের কর্মসুচীর মধ্যে দিয়ে তাদের নুতন দিক নির্দেশনা পেয়েছিল। আর ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বক্তৃতার মধ্য দিয়ে যা চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করেছিল। আওয়ামী রক্ষণশীলরা পাকিস্তান রক্ষা করার সকল চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু ২৩ মার্চ তারিখের পাকিস্তানের প্রজাতন্ত্র দিবসে জয় বাংলা বাহিনীর কুচকাওয়াজ, জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে উম্মুক্ত সামরিক ট্রেনিইং, এবং ২২ মার্চ রাতেই ক্যান্টনমেন্ট ছাড়া সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে মানচিত্র খচিত নতুন জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে পাকিস্তানের কফিনে প্রথম পেরেকটি ঠুকে দেয়া হয়। সারাদেশ ব্যাপি চলছিল ছাত্র, শ্রমিক, জনতার বিক্ষোভ মিছিল। স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াস তাদের ইউনিট গুলোকে সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি নিতে বলে। এমন পরিস্থিতিতে বংগবন্ধু গ্রেফতার হওয়ার আগে স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে প্রতিরোধ যুদ্ধের ডাক দেন।
আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তির এই মহান সংগ্রাম গড়ে উঠেছিল গনতান্ত্রিক ন্যায্যতা, মানবিক মর্যাদা ও বৈষম্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক সমাজ নির্মানের সংগ্রামের প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে, যা আমাদের রাজনৈতিক অদুরদর্শীতা, লোভ লালসা, সাম্প্রদায়িক চক্রান্ত ও সামরিক শাসকদের ষড়যন্ত্রের কারনে ফিকে হয়ে গিয়েছে। মার্চ মাসে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এবং নেপথ্যে থেকে সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠত স্বাধীনতার নিউক্লিয়াস যে শৃজনশীল ও দৃঢ় ভূমিকা পালন করেছেন সেজন্য ইতিহাসের পাতায় তাদের কথা স্ব্রর্নাক্ষরে লেখা থাকবে।
ব্যক্তিস্বার্থে ও গোষ্ঠী স্বার্থে ইতিহাসকে বিকৃত করার এক নির্লজ্জ প্রবনতা আমাদের সমাজে রয়েছে। ক্ষমতাসীন মহল বর্তমানে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার উদ্দেশ্যে অনেকের ভূমিকা অবমূল্যায়ন করছেন, উপেক্ষা করছেন এবং তাচ্ছিল্যের আকারে প্রকাশ করছেন। এমন যারা করছেন, ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না। সত্যই প্রতিষ্ঠিত হবে। "
আলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হক প্রধান, বাংলাদেশ জাসদ স্থায়ী কমিটির সদস্য ডাকসুর সাবেক জিএস ডাঃ মুশতাক হোসেন, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করিম সিকদার, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনজুর আহমেদ মনজু, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল ইসলাম বাবু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসদের সভাপতি আবদুস সালাম খোকন, ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি আসাদুজ্জামান জাকির, ঢাকা মহানগর পূর্বের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মহিউদ্দিন, জাতীয় যুবজোট এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক সাইদুর রহমান, জাতীয় যুবজোট ঢাকা মহানগরের সভাপতি ফারুক হোসেন চঞ্চল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বিসিএল এর সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রাহাত।
দলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, "পাকিস্তানের ২২ পরিবারের লুটের হাত থেকে মুক্তির আশায় লক্ষ মানুষের জীবনের বিনিময়ে যে বাংলাদেশ সেই দেশে আজ হাজার লুটেরা তৈরী হয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের সীমাহীন মুল্য বৃদ্ধি জনগণকে দিশেহারা করে ফেলেছে। অগ্নিঝরা মার্চ থেকে শিক্ষা নিয়েই সত্যিকারের জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করেই এই সংকট মোকাবেলা করতে হবে।। আর সেই সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা অবশ্যই সরকারকে করতে হবে।"
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: