• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

ক্রমাগত চোরের জ্বালায় অতিষ্ঠ নলগড়িয়া গ্রামের জনগন, প্রশাসন নিরব


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০২:৩০ পিএম
চোরের উপদ্রপ বেড়েছে

মোঃ সুমন আহমেদ, বিজয়নগর প্রতিনিধিঃ  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অত্যন্ত সুপরিচিত একটি গ্রাম নলগড়িয়া। এটি জেলার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের সর্ব পূর্বদিকে ভারতের সীমানা ঘেঁষে অবস্থিত। বর্তমানে গ্রামটির সাধারণ জনগন চোরের আতংকে রাত্রি যাপন করছেন। প্রতিদিনই কারো না কারো বাড়িতে চুরি হচ্ছে মূল্যবান সামগ্রী। বাথরুমের সামগ্রী, টিউবওয়েল, পানির মোটর, রান্নাঘরের গ্যাস সিলিন্ডার, ঘরের ব্যাবহার সামগ্রী থেকে শুরু করে স্বর্ণের অলংকার বাদ যাচ্ছেনা কিছুই। এমনকি কারো কারো বাগানের সবজি ও ফসল তুলে নেবারও খবর পাওয়া গেছে। এই নিয়ে নানান মানুষের মাঝে উদ্বেগ এর সীমা নেই।

কোন সংঘবদ্ধ চক্র, নাকি গ্রামের ভিতরের কেউ বা সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের বসবাসকারীদের জন্য এমন ঘটনা বার বার ঘটছে তার রহস্য কেউ উদঘাটন করতে পারছে না। এই নিয়ে গ্রামে চলছে নানান গুঞ্জন এবং মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এলাকার মেম্বার, চেয়ারম্যান এবং প্রশাসনকে বার বার জানানোর পরও তারা নিরব ভূমিকা পালন করছেন।

নলগড়িয়া গ্রামের ফায়েজ ভুঁইয়ার বাড়ি থেকে পানির মোটর চুরি গেছে দুদিন আগে। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন পানির মোটর নেই। পাইপসহ চোরে নিয়ে গেছে। এমন ঘটনা তার বাড়িতে আগে ঘটে নি। গ্রামের পূর্ব দিকের ফোরকানের বাড়ি থেকে চুরি গেছে স্বর্ণের অলংকার। ঘরের টিনের সাইড কেটে রাতের আঁধারে নিয়ে যায় চোরে। তার পাশের বাড়ি অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য মোঃ আলী আজম সরকারের বাড়ি থেকে ১০ বস্তা সিমেন্ট চুরি যায়। সকাল বেলা মোঃ আলী আজম জানান, বাড়ির কাজ করার জন্য গতকাল সিমেন্ট এনে রেখেছি। রাতের আঁধারে কে যেন নিয়ে গেছে। তাদের বাড়ির পশ্চিমদিকে আলী হোসেনের বাড়ি। মৃত আলী হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ আলী জানান, এক সপ্তাহ আগে আমার রান্না ঘরের গ্যাস সিলিন্ডার, হাড়ি পাতিল, পাইপ, স্টোভ চুরি করে নিয়ে যায়। এমনকি আমার বাড়িতে বেড়াতে আশা মেহমানের স্মার্ট ফোনও চুরি করে নিয়ে যায়। এই ঘটনার কারনে আমরা হতাশায় ভুগছি। বাহিরের মানুষের কাছে লজ্জিত হয়ে পড়ছি।

এলাকার মেম্বার বাচ্চু মিয়া এবং চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়াকে বার বার জানানোর পরেও কোন সুরাহা হয়নি। তারা বলেন চোরকে ধরার জন্য। এছাড়া কোন উদ্যোগ তারা গ্রহন করেন নি। এলাকার লোকজন বলেন, আমাদের থানা বিজয়নগর অনেক দূরে বলে সহজে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করা যায় না। এই ব্যাপারে বিজয়নগর থানার ওসিকে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। এলাকার বিশিষ্ট সাংবাদিক এবং একুশ আমার এর সম্পাদক মোঃ সাইফুল আলম সরকার বলেন, গ্রামে মোবাইল নেটওয়ার্ক অনেক দুর্বল। যে কোন প্রয়োজনে দ্রুত যোগাযোগ করা সম্ভব হয়না। ঘর থেকে বের হয়ে অনেক দূরে গিয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলতে হয়। ডিজিটাল যুগে এই রকম সমস্যা সত্যিই আমাদের অনেক পীড়া দেয়। সিংগারবিলের আশাপাশে একটু পুলিশ ফাঁড়ি হওয়া অনেক প্রয়োজন। কারন পুলিশি সেবার আমাদের যেতে হয় অনেক দূরে।

গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা বোরহান উদ্দিন অনেক টাকা বিনিয়োগ করে সবজি প্রোজেক্ট এবং নার্সারি করেছেন। তার বাগান থেকে প্রায় ৪০/৫০ হাজার টাকার বিভিন্ন সবজি চুরি করে নিয়ে গেছে। চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসনকে জানানোর পরেও এই বিষয়ে কোন সদুত্তর পাওয়া যায় নি। এলাকাবাসী বলছেন আমাদের আশেপাশের অন্য কোন গ্রামে এতো বেশী চুরি হবার ঘটনা বার বার আমরা শুনতে পাইনা। আমাদের এলাকার প্রশাসনের নীরব ভূমিকাকেই অনেকে দায়ি করছেন। এলাকাবাসী বলছেন, প্রত্যেক বিষয়েরই একটি সহ্যসীমা থাকে। যদি মেম্বার, চেয়ারম্যান বা প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না গ্রহন করেন তাহলে এলাকার যুব সমাজ মিলে চোর ধরার উদ্যোগ গ্রহন করবে এবং চোর ধরতে পারলে তার হাত কেটে দিবে।

বাথরুমের সামগ্রী, টিউবওয়েল, পানির মোটর, রান্নাঘরের গ্যাস সিলিন্ডার, মোবাইল ফোন, ঘরের ব্যাবহার সামগ্রী থেকে শুরু করে স্বর্ণের অলংকার এগুলো কারা বার বার চুরি করছে? কে তাদের মূল হোতা? কাদের মদদে একই ঘটনা বার বার ঘটছে? এই রহস্য উদঘাটন করতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন সমগ্র নলগড়িয়া গ্রামবাসী। 

ঢাকানিউজ২৪.কম /

আরো পড়ুন

banner image
banner image