• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

৭১-এর মত সংগ্রাম করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো: গণফোরাম


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৪:৪৯ পিএম
৭১-এর মত সংগ্রাম করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো
বক্তব্য রাখছেন গণফোরাম সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা মোস্তফা মোহসীন মন্টু

নিউজ ডেস্ক : দুর্নীতি, দুঃশাসন হটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শনিবার (২৬ নভেম্বর) গণফোরাম ঢাকা মহানগর উত্তরের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে আহবায়ক এম. এ. কাদের (মার্শাল)-এর সভাপতিত্বে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণফোরাম সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সরকার ২০১৪ সনে বিনা ভোটের নির্বাচন ও ২০১৮ সালে মধ্য রাতের নির্বাচনে ঠকবাজদের সমন্বয় করে জনগণকে ধোঁকা দিয়েছে। জনগণ তাদেরকে আর বিশ্বাস করে না। হাতের যা ছিলো জোচ্চুরি দেখিয়ে দিয়েছে এই সরকার, আর হবে না, জনগণ আর হতে দিবে না। আমরা আমাদের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছিলাম অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া আমরা কখনো নির্বাচনে যাবো না। এখন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবী নিয়ে আমরা রাজপথে থাকবো, আমাদের সাথে যারা সুর মেলাবে মাঠে আসবে আমরা তাদের পাশেই থাকবো, তাদেরকে সাথে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন করব। 

প্রয়োজনে আমরা আত্মত্যাগ করব, আত্মহুতি দিব, এদেশের মানুষের জন্য ৭১-এর মত সংগ্রাম করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো ইনশা-আল্লাহ্। রাজনৈতিক দলের বিভেদ আমরা চাইনা, আমরা চাই সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ যে রাষ্ট্রে মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকারের চেতনা নিয়ে অত্যাচার-অবিচার বিহীন, লুটপাট বিহীন, পরিবেশ খেকো-বালু খেকো-নদী খেকোরা থাকবে না, ব্যাংক লুটেরারা থাকবে না, জোর-জবরদস্তি করে জমি দখল-কারখানা দখল হবে না সেই একটা দেশ আমরা গড়তে চাই।

নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার মাধ্যমেই আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে। জাতিকে বিভাজিত করে কখনো কোন দেশে মৌলিক বিষয়ে যদি আমরা ঐক্যমতে না থাকি জাতি এগিয়ে যেতে পারে না। আজকে একদল দাবী করেন তারা মুক্তিযুদ্ধের হোলসেলার, তারা মুক্তিযুদ্ধের দল, তারাই মুক্তিযুদ্ধ করেছে, তারাই মুক্তিযুদ্ধের সংগঠন, তারাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি! আসলেই কি তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি? মুক্তিযুদ্ধে কি বলেছে? বলেছে মানব মুক্তির কথা। মুক্তিযুদ্ধে কি বলেছিল? বলেছিল আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। মুক্তিযুদ্ধ কি বলেছে? বলেছে জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। মুক্তিযুদ্ধ কি বলেছে? বলেছে ধনী-গরীবের বৈষম্য থাকবে না। মুক্তিযুদ্ধ কি বলেছে? বলেছে মানুষের সুযোগের সমতা থাকবে। আজকে সবাই কি সুযোগে সমতা পাচ্ছে? এই সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেনা বলেই আজকে সমাজ-রাষ্ট্র-দেশে বৈষম্যের পাহাড় তৈরি হয়েছে। আজকে ২০% লোকের হাতে দেশের ৮০% সম্পদ। জনগণকে জাগ্রত করতে হবে। যারা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে কিন্তু তা মানে না তারা কখনোই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হতে পারে না।

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, পাকিস্তানের ২৪ বছর আমাদের লড়াই করতে হয়েছে আর এখন আমাদের সুবর্ণ জয়ন্তী হয়ে গেলেও এখনও একই লড়াই করছি, একই কথা বলছি, রাজনীতির কী গুণগত পরিবর্তন হয়েছে? তখনও শাসন-শোষণ, নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলেছি এখনও ৫০ বছর পরে বলতে গেলে ৭৫ বছর পরেও চিন্তা করেন একটা জাতির ৭৫ বছর পরেও আমাদের রাজনৈতিক ভাষা পরিবর্তন করতে পারিনি। কতগুলো অশ্লীল শব্দ, অশ্লীল মানে বাস্তবিক অর্থে দুর্নীতি-মহাদুর্নীতি, সাগর চুরি-মহা সাগর চুরি, নদী খাওয়া, সাগর খাওয়া, বৃক্ষ খাওয়া, পাহাড় খাওয়া এক অর্থে সর্বভুক খাওয়া শুধু খাওয়ার রাজনীতিতে আছি। শিক্ষা ব্যবস্থা খাওয়া, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা খাওয়া খেতে খেতে রিজার্ভও খেয়ে ফেলেছি। আহারে চোরের মায়ের বড় গলা! কিছুদিন আগে বলেছেন রিজার্ভ কমতে কমতে তলানিতে ঠেকেছে, দুর্ভিক্ষ আসছে। এখন আবার উল্টোটা বলছেন রিজার্ভের কোন ঘাটতি নেই, টাকার কোন ঘাটতি নেই। তারা কখন কি বলেন তার ঠিক নেই। তাদের বক্তব্য রাষ্ট্রের জন্য অশনি সংকেত। 

তারা অশনি সংকেতের রাজনীতি বাংলাদেশে শুরু করেছে। একই ভাবে তারা বাংলাদেশে একটা নির্বাচন নির্বাচন খেলা শুরু করেছে। নির্বাচন হবে কি হবেনা তারই কোন পরিবেশ নেই। কেউই মনে করে না বাংলাদেশে এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে বা কোনদিনই হবে। বিগত বছরগুলোতে এই সরকার নির্বাচনের নামে তামাশা করেছে অতএব তারা ফেল করেছে, শুধু ফেলই করেনি তারা নিচে নেমে গেছে। নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছে।

আরও বক্তব্য রাখেন গণফোরাম নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট এ.কে.এম. জগলুল হায়দার আফ্রিক, অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন আব্দুল কাদের, সভাপতি পরিষদ সদস্য মেজর (অব.) আসাদুজ্জামান বীর প্রতীক, আতাউর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা খান সিদ্দিকুর রহমান, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির মহাসচিব আব্দুল কাদের, গণফোরাম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লতিফুল বারী হামিম, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ রওশন ইয়াজদানী, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আলীনূর খান বাবুল, তথ্য ও গণমাধ্যম সম্পাদক মুহাম্মদ উল্লাহ মধু, সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পাদক ও ঢাকা জেলা গণফোরামের সভাপতি আব্দুল হামিদ মিয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জনাব হাবিবুর রহমান বুলু প্রমুখ।

সম্মেলনে জনাব এম. এ. কাদের (মার্শাল)-কে সভাপতি ও এরশাদ জাহান সুমনকে সাধারণ  সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

Something went wrong!