• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

আইভি রহমান হত্যার প্রতিবাদে সেদিন ভৈরব ছিল উত্তাল


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ২২ আগষ্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০২:২৪ পিএম
আইভি রহমান হত্যার প্রতিবাদ
বর্বরচিত গ্রেনেড হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন আইভি রহমান

সোহানুর রহমান সোহান, ভৈরব প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ: ৭৫'র ১৫ ই আগস্টের পরে ২০০৪ সালে রক্তাক্ত ও বিভীষিকাময় দিনটি হলো ২১ শে আগস্ট এ দিন ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এ আওয়ামীলীগের সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমানকে যে ভাবে স্ব-পরিবারে হত্যা করেছিল ঘাতকের দল তেমনি ২০০৪ সালে এ দিনে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সহ কেন্দ্রীয় পর্যায়ের সকল নেতাদের বর্বরচিত গ্রেনেড হামলার মতো কলঙ্কজনক অধ্যায় সৃষ্টি করেছিল তৎকালীন বিএনপি জামাত-জোট সরকার।

সেইদিন ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু সেইদিন ঘাতকের গ্রেনেডের হামলায় রাজপথে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে ২৪ জন নেতা কর্মীর সাথে প্রাণ হারিয়েছিলেন তৎকালীন মহিলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভানেত্রী চির সংগ্রামী নারী নেত্রী আইভী রহমান। এ দিন গুরুত্বর আহত হয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ।

একের পর এক গ্রেনেড বিস্ফোরনে মৃত্যুপুরীতে পরিনত হয় বঙ্গবন্ধু এভিনিউ। ১৩ টি গ্রেনেড বিস্ফোরনের বিভ্যসতার রক্ত আর লাশের স্তুপে পরিনত হয় সমাবেশ স্থল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রান নাশের চেষ্টায় সমাবেশস্থলে গ্রেনেড হামলা হতাহতের ঘটনায় ক্ষোভে বিক্ষোভে জ্বলে উঠে সারা দেশ। নারকীয় হত্যাযজ্ঞে ফুঁসে উঠে দেশবাসী টালমাটাল হয়ে উঠে বাংলার শহর বন্ধর গ্রাম জনপদ। বোমা হামলার প্রতিবাদে ১৬ জেলায় হরতাল এবং বেশ কয়েকটি জেলায় অঘোষিত হরতাল পালিত হয়। এ দিকে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সূর্য সন্তান নারী নেত্রী আইভী রহমানকে হত্যার প্রতিবাদে তার নিজ জন্মস্থান ভৈরবে প্রতিবাদ মিছিল করে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ। বন্দরনগরী ভৈরবে অলিগলি প্রদক্ষিণ করে।

অন্যদিকে এখানে হরতাল চলাকালে তাদের এলাকার সূর্য সন্তান ও তাদের প্রিয় নেত্রীকে হত্যার প্রতিবাদে উত্তেজিত বিক্ষুদ্ধ জনতা সুবর্ন এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয় ভাংচুর করে সেদিন বিক্ষোভ দমাতে কয়েক দফা পুলিশের গুলি বর্ণন ও ঘটে, সেদিন আইভী রহমান হত্যার প্রতিবাদে ট্রেনে আগুন দেয়া বিক্ষুদ্ধ জনতা মামলা হয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ভৈরব রেলওয়ে থানায়।

তৎকালীন পৌর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ শেফাত উল্লাহ-গং কে প্রধান আসামী করে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১১৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা এছাড়াও ভৈরব থানায় ফায়ার সার্ভিস মামলায় ভৈরব উপজেলা আওয়ামীলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক হাজী সিরাজ উদ্দীন গং কে প্রধান  আসামী করে বাংলাদেশ দন্ডবীধি আইনে ১৮ জনের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা করা হয়।

দুইটি মামলায় মোট আসামী করা হয় ২১৪ জন আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের কে কিন্তু কেন এ মিথ্যা মামলার শিকার করা হয় তাদের। সেই দিন কি অপরাধ করেছিল এ নেতাকর্মীরা? সেইদিন তাদের প্রিয় নেত্রীকে হত্যার প্রতিবাদ করাই কি তাদের জন্য কাল হয়ে দাড়িয়েছিল? সেই দিনের প্রত্যক্ষদর্শী তৎকালীন ভৈরব পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাকদ বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শেফাত উল্লাহ বলেন, সেইদিন নেত্রীকে হত্যার প্রতিবাদে আমরা ভৈরব বাজার এ একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করি, কিন্তু ট্রেনে আগুন দেয় বিক্ষোদ্ধ জনতা আর মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা হয় আমাদের। কালে পালা বদলে অনেকে নেতৃত্বে এসেছেন কিন্তু সেদিন প্রতিবাদ সংগ্রামে ছিলাম আমরা। আজ হয়তো কয়েকজন ঘটনার ১৭ বছর আজও সেই স্মৃতি মনে পড়ে।

আগস্ট মাস এলে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয় কিন্তু এ ঘটনাটির কথা কেউ মনে করেনা। আরেক প্রতক্ষদর্শী ভৈরব উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ অহিদ মিয়া বলেন, নেত্রীকে হত্যার প্রতিবাদে মিছিল বের করি কিন্তু এজন্য আমি এবং আমার পরিবারের জন্য সদস্যদের মামলার শিকার হতে হয়েছে, আর এজন্য আমাদের কোর্টে হাজিরা দিতে হয়েছে দিনের পর দিন। এছাড়াও সেই দিনের আরেক প্রতক্ষ্যদর্শী সেই সময়ে মামলার ১১৬ নম্বর আসামী পৌর আওয়ামীলীগের মুক্তিযোদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক এম. আর সোহেল বলেন ঐদিন আমি বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এ জনসভায় ছিলাম ভাগ্যক্রমে বেঁচে সেদিন সকল প্রকার যানবাহন যখন বন্ধ হয়ে যায় আইভী রহমান মারা যাওয়ার খবরে তখন আমি নরসিংদীর মাধবদী থেকে পায়ে হেটে ভৈরবে এসে পৌছাঁয় পরদিন স্থানীয় আওয়ামীলীগের দেয়া প্রতিবাদ মিছিলে আমার সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ডের নেতাকর্মী নিয়ে অংশ নেয়।

সেইদিন বর্তমান ভৈরব উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সায়দুল্লাহ চাচা, উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিঃ সহ-সভাপতি সদ্য প্রয়াত হাজী সিরাজ ভাই, পৌর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভ, আওয়ামীলীগ নেতা নাজমুল হক রুবেল, যুবলীগ নেতা অরুন আল আজাদ, ইকবাল হোসেন, সদ্য প্রয়াত সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি খলিলুর রহমান লিমন, আমার বাল্যবন্ধু ভৈরব পৌর ২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি হাজী আসাদুজ্জামান জামান বর্তমান ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ আলাল মিয়া,  তৎকালীন উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহব্বায়ক দৈনিক গৃহকোণ প্রত্রিকার সম্পাদক আলহাজ্ব এম.এ লতিফ তার ছোট ভাই যুবলীগ নেতা মৃত ইকবাল সহ তার বাড়ির একাধিক ছেলেকে আলোচিত এ মামলাটিতে একাধিক ছেলেসহ আমাদের আওয়ামীলীগের প্রায় দুই শতাধিক নেতা-কর্মীকে দিনের পর দিন দিতে হয় কোর্টে হাজিরা। এতো কিছুর পরও মনে কোনো দুঃখ নেই সেই খুনীদের বিচারের রায় অবিলম্বে দ্রæত কার্যকর করা হোক।

এছাড়াও এ মামলার অন্যান্য আসামীদের সাথে কথা বলে এবং মামলার বিভিন্ন নথি দেখে জানা যায়, ২০০৮ সালে আওয়ামীলী সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন ২০০৯ সালের ৬ ডিসেম্বর এ বহুল আলোচিত মামলাটি নিস্পত্তি হয়।

ভৈরববাসী ও সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা জানায় সেই স্মৃতি আজও আমাদের মনে কড়া নাড়ে; আমরা আমাদের এ কৃতি সন্তানকে নির্মমভাবে হত্যার বিচার চাই। সেই দিনের প্রত্যক্ষ্যদর্শী মামলার ১১৬ নম্বর আসামী এম.আর সোহেল আরো বলেন, সেই দিন আমরা যারা আসামী হয়েছিলাম আমরা আমাদের দুঃখ-কষ্টের সেই স্মৃতি কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে জানাতে চাই।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image