
নিউজ ডেস্ক: পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে আজ মঙ্গলবার। এর মাধ্যমে পূরণ হবে আরেকটি স্বপ্ন। ফরিদপুরের ভাঙ্গা জংশন থেকে পদ্মা সেতু হয়ে নতুন নির্মিত রেলপথে প্রথমে যাবে একটি গ্যাং কার। সেটির পিছু পিছু যাবে চীন থেকে সদ্য কেনা বগিতে তৈরি যাত্রীবাহী ট্রেন। পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় একটি গ্যাং কার (পরিদর্শন ট্রেন) ভাঙ্গা থেকে মাওয়ার উদ্দেশে যাত্রা করবে। এর পর ছয় বগির একটি ট্রেন পদ্মা সেতু হয়ে মাওয়ায় যাবে।
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ট্রেনে যাত্রী হবেন। ট্রেনটি আবার সেতু পার হয়ে মাওয়া থেকে ভাঙ্গা জংশনে ফিরবে।
গত বছরের ২৫ জুন দ্বিতল পদ্মা সেতুর আপার ডেকে (ওপরতলা) যান চলাচল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২০ আগস্ট ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর লোয়ার ডেকে (নিচতলা) রেললাইন স্থাপনের কাজ শুরু হয়। ছয় মাসের মধ্যে এই কাজ সম্পন্নের লক্ষ্য ছিল। প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছেন, ৩১ মার্চ সেতুতে স্লিপার ঢালাইয়ের মাধ্যমে ব্যালাস্টলেস (পাথরবিহীন) রেললাইন নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে।
আগামী সেপ্টেম্বরে ঢাকার কমলাপুর থেকে মাওয়া, পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত যাত্রীবাহী ট্রেন চালাতে চায় রেলওয়ে। রেলমন্ত্রী যদিও একাধিকবার ঘোষণা দিয়েছিলেন– জুনেই যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে। তবে প্রকল্প সূত্রের ভাষ্য, আগামী ডিসেম্বরে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা রুটে চলবে ট্রেন।
সরকারের অগ্রাধিকারের পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় চীনের ঋণে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকায় কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা, ঢাকার কেরানীগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুরের ভাঙ্গা, নড়াইল, মাগুরা হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার মূল লাইনসহ ২১৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।
ঢাকা থেকে মাওয়া, মাওয়া থেকে ভাঙ্গা এবং ভাঙ্গা থেকে যশোর– এই তিন ভাগে প্রকল্পের কাজ চলছে। ৩১ মার্চ পর্যন্ত সার্বিক অগ্রগতি ৭৩ শতাংশ। ঢাকা-মাওয়া অংশের কাজের অগ্রগতি প্রায় ৭২ শতাংশ এবং মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের অগ্রগতি প্রায় ৯৩ শতাংশ। ভাঙ্গা-যশোর সেকশনে কাজ এগিয়েছে প্রায় ৬৫ শতাংশ। প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছেন, ঢাকা-মাওয়া অংশের কাজ পরিকল্পনার চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে। আরও পাঁচ-ছয় মাস লাগতে পারে। এ বছরেই ৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা রুটে ট্রেন চলবে। আগামী বছরের জুনে যশোর পর্যন্ত যাবে রেল।
পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প ঢাকা থেকে খুলনার দূরত্ব ২১২ কিলোমিটার কমাবে। বর্তমানে ঢাকা থেকে গাজীপুর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ঘুরে দক্ষিণবঙ্গে যায় ট্রেন। পদ্মা সেতুতে ট্রেন চালুর পর রাজশাহীর ট্রেনও স্বল্প সময়ে এই পথে ঢাকা থেকে যেতে পারবে। মোংলা বন্দর রেলপথে সরাসরি যুক্ত হবে রাজধানীর সঙ্গে।
এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলেও দক্ষিণবঙ্গ থেকে ঢাকামুখী যাত্রীদের যানজটে পড়তে হয় রাজধানীর বাবুবাজার ও পোস্তগোলা সেতুতে। ট্রেন চালুর পর যাত্রাবাড়ী ও পুরান ঢাকার যানজট থেকে মুক্তি পাবেন দক্ষিণের যাত্রীরা। দ্রুত ঢাকায় যাতায়াত নয়; পণ্যও পাঠানো যাবে।
শিবচরের ব্যবসায়ী আবু জাফর বলেন, বাসে ভাড়া বেশি। ট্রেনে কম খরচে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহন করা যাবে।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: