
আলী জামান:
সাম্প্রতিক সময়ে কুমিল্লায় বিভাগ করা নিয়ে- একটা বাহাস চলছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বললেন, মোসতাকের জন্মস্থান কুমিল্লার নামে তিনি বিভাগ দেবেন না। এই সুযোগে নোয়াখালী, ফেনীর লোকেরা বিভাগ দাবী করে বসেছে। ফরিদপুরে নতুন বিভাগ হচ্ছে- পদ্মা নামে।
এখন একটা প্রশ্নঃ এত বিভাগ হলে- সাধারন মানুষের কি লাভ? এক সময় দেশে চারটে বিভাগ ছিল। বলা হলো, এর কারনে- প্রশাসন চালাতে অসুবিধা হয়। তখন দেশের প্রেসিডেন্ট ছিলেন বরিশালের বাসিন্দা। তিনি তদবির করে বরিশাল বিভাগ করলেন।
আর যায় কোথা? সিলেটবাসী বললো,আমাদেরও বিভাগ দিতে হবে।আমি একজন সিলেটিকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, বিভাগ হলে তোমাদের কি লাভ হবে? উনি জানিয়েছিল, অতশত বুঝি না। "আমড়ার চেয়ে কমলা ভাল,আমড়া কেন বিভাগ হইলো?"
ব্যাস,সিলেট বিভাগ হয়ে গেল।এরপর রাজনৈতিক বিবেচনায় আরো অনেক বিভাগ হলো।এখন তো আরো নতুন দুটো বিভাগ হচ্ছে।সামনে আরো হবে। এত বিভাগ করে লাভটা কোথায়?
বিশেষ করে যারা আম পাব্লিক,আর যাদের প্রদত্ত করের টাকায় এই সব বিভাগে নতুন নতুন সরকারী পদ সৃষ্টি করে-টাকার শ্রাদ্ধ করা হয়?পাব্লিক কি ফায়দা পায়...?তাদের কি উপকার হয়?
১৯৭২-৭৩ সালে তাজউদ্দিন সাহেবের বাজেটের আকার ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা।তখন রাজস্ব আর উন্নয়ন ব্যয়ের অনুপাত ছিল ৩৬ঃ৬৪।এখন বাজেটের আকার প্রায় ছয় লাখ কোটি টাকা।আর রাজস্ব- উন্নয়ন ব্যয়ের অনুপাত দাঁড়িয়েছে বিপরীত। ৬৪ঃ৩৬।
বাজেটের এই টাকার যোগান দেয় আমজনতা। এখন সবাই কর দেয়।একটা রাস্তার ফকিরকেও কর দিতে হয়।কারন- ভ্যাট থেকেই সবচেয়ে বেশী রাজস্ব আসে,যা সবাইকেই দিতে হয়।আর পরিনতিতে- দ্রব্যমুল্য নাগালের বাইরে চলে যায়।
এত কিছুর পরেও কিন্তু রাজস্ব আয় থেকে উন্নয়ন ব্যয় মেটানো যায় না।তার জন্য দেশ- বিদেশ থেকে ধার করতে হয়।আর সেই ধারের টাকার সুদ গুনতে গিয়ে লাভের গুড় পিপড়েয় খেয়ে যায়।রাজস্ব খাতের সিংহভাগ টাকা খরচ হয়ে যায়।
লেখক: আলী জামান, প্রেসিডেন্ট, এসএমইওনার্স এ্যাসোসিয়েশন্স
ঢাকানিউজ২৪.কম / আলী জামান
আপনার মতামত লিখুন: