• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৭ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

শটগানের গুলিতে ঝাঝরা, ১৫ বছরের জুলফিকারের অবর্ণনীয় লড়াই


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বুধবার, ২১ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০১:৫৩ পিএম
শটগানের গুলিতে, ঝাঝরা, ১৫ বছরের, জুলফিকারের, অবর্ণনীয়, লড়াই
আন্দোলনে আহত জুলফিকার আলী (১৫)।

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে ১৫ বছরের এক কিশোর, যার নাম জুলফিকার আলী। মাথায়, গলা, বুকসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে শটগানের শতাধিক গুলির আঘাত নিয়ে অবর্ণনীয় যন্ত্রণার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে সে। এই অসম্ভব বেঁচে থাকার গল্প যেন এক বিস্ময়।

গত ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় উত্তরা এলাকায় সংঘর্ষে আহত হয় নবাব হাবিবুল্লাহ মডেল স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জুলফিকার। শটগানের গুলিতে ঝাঝরা হয়ে যায় তার শরীর। চার দিন নিখোঁজ থাকার পর অবশেষে তাকে ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে খুঁজে পাওয়া যায়। তবে, তার অবস্থা এতটাই গুরুতর ছিল যে এখনও ৫০টিরও বেশি গুলি তার শরীরে রয়ে গেছে। বিশেষ করে গলা ও বুকে যেসব গুলি এখনও রয়েছে, সেগুলো বের করতে গেলে মারাত্মক জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে চিকিৎসকদের।

তার মা মরিয়ম বিবি বলেন, 'আমার স্বপ্ন ছিল বড় ছেলে ডাক্তার হবে আর ছোট ছেলে ইঞ্জিনিয়ার। এখন তো সব শেষ। আমার এই ছেলে কীভাবে চলবে, পড়ালেখা করবে। ওর চোখগুলো যদি ঠিক থাকত তাও একটা আশা ছিল।'

জুলফিকারের ডান চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে, এবং বাম চোখও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও গুলির আঘাতে ভেঙে গেছে তার দাঁত, কানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শারীরিক আঘাতের সাথে সাথে মানসিকভাবেও চরম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সে। তার ভাই জোবায়ের হোসেন জানান, 'জুলফিকার মানসিকভাবে প্রচন্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগে কোনো ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করলে কখনো রাগ করতো না। কিন্তু এখন কোনো কিছু জিজ্ঞেস করলেই রেগে যায়।'

চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে, জুলফিকারের মাথায় অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হচ্ছে না জটিলতার শঙ্কায়। তবে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাওয়া ডান চোখে অস্ত্রোপচার লাগবে, আর গুলি বের করা না হলে ভবিষ্যতে ইনফেকশনের সম্ভাবনা রয়েছে।

জুলফিকারের ভাই সাহিবুর রহমান বলেন, 'কয়েকটি গুলি এমন সেন্সিটিভ জায়গায় আছে সেগুলো বের করতে গেলে অন্যান্য অঙ্গে সমস্যা হতে পারে। আবার চিকিৎসকেরা বলছেন, গুলি যদি বের করা না হয় ভবিষ্যতে ইনফেকশনের সম্ভাবনা রয়েছে। এখন আমরা বুঝে উঠতে পারছি না। কী দিয়ে কী করব।'

জুলফিকারের অবর্ণনীয় সংগ্রামের এই গল্প আমাদের সমাজের একটি কঠিন বাস্তবতা তুলে ধরে। তার পরিবারের অসহায়ত্ব, ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা এবং মানসিক বিপর্যয়ের এই কাহিনী আমাদের সকলকে নতুন করে ভাবতে শেখায়।

 

ঢাকানিউজ২৪.কম / জেডএস/সানি

আরো পড়ুন

banner image
banner image