
রিপন সরকার, খাগড়াছড়ি: চিনি হুকুমু, চিনি সিনিমুং” যার বাংলা অর্থ 'আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের পরিচয়'এ প্রতিপাদ্যকে কেন্দ্র করে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসু উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে হারি বৈসু অর্থাৎ প্রথম দিনে “তৈবুকমা নৗ খুম বকনাই বাই রি কাতাল কাচকরনাই” কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
“তৈবুকমা নৗ খুম বকনাই বাই রি কাতাল কাচকরনাই” এর বাংলা অর্থ “মা গঙ্গার প্রতি পুষ্পার্পণ ও নতুন কাপড় নিবেদন করা”।নদীতে নানা রকম বাহারি ফুল দিয়ে, ধূপ-দীপ জ্বালিয়ে, ও ছোট শিশুদের নিজের হাতের তৈরি নতুন কাপড় (রিনাই, রিসা)কাপড় পানিতে ভাসানো ত্রিপুরাদের নিজস্ব রীতি নীতিনুযায়ী ‘হারি বৈসু’ মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বৈসু উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। এতে প্রতিপাদ্যের বিষয় ছিল” চিনি হুকুমু, চিনি সিনিমুং” যার বাংলা অর্থ “আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের পরিচয়”।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩এপ্রিল) সকাল থেকে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের পেরাছড়া ইউডনিয়নের পল্টনজয় পাড়াস্থ চেঙ্গী নদীতে বড় পরিসরে এ উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদ, বাংলাদেশ ত্রিপুরা যুব কল্যাণ সংসদ এবং ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরাম, বাংলাদেশ’র বৈসু উৎসব উদযাপন কমিটি।
এছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্থানে ত্রিপুরা সম্প্রদায়েরা গঙ্গাদেবীকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন এবং ছোট শিশুদের হাতে বুনা ত্রিপুরাদের ঐতিহ্যবাহী নতুন কাপড় পানিতে ভাসিয়ে দেন। এদিন ভোর বেলায় বিভিন্ন ফুল গাছ থেকে ফুল সংগ্রহ করার প্রতিযোগিতা শুরু হয়, শিশু-কিশোর-কিশোরীদের।এই ফুলের একাংশ দিয়ে পুরো বাড়ি ফুল দিয়ে সাজানো হয় এবং ফুলের আরেক অংশ দিয়ে নদীর তীরে, মন্দিরে এবং পবিত্র স্থানে ফুল, ধুপ এবং দীপ জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে জাতি, সমাজ, দেশ ও বিশ্বের সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনা করা হয়।
ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী প্রধান উৎসব বৈসু। বৈসুর প্রথম দিনকে হারি বৈসু, দ্বিতীয় দিনকে বৈসুমা/বৈসুকমা এবং তৃতীয় অর্থাৎ শেষ দিনটিকে বিসি কাতাল নামে নামকরণ করা হয়। মূলতঃ আগামী দিনের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হয়েছে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: