নিউজ ডেস্ক: স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে জিতে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। বৃষ্টির বাঁধা পেরিয়ে শনিবার দ্বিতীয় দিনের খেলায় আধিপত্য বাংলাদেশের।
এদিন টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে টাইগারদের বোলিং তোপে ২৭৪ রানে অলআউট হয়েছে পাকিস্তান। দিন শেষে কোনো উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১০। পাকিস্তানের চেয়ে ২৬৪ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় শুরু করবেন সাদমান ইসলাম ও জাকির হাসান।
বাংলাদেশের পক্ষে মেহেদী হাসান মির ৫টি, তাসকিন আহমেদ ৩টি, সাকিব আল হাসান ও নাহিদ রানা একটি করে উইকেট দখল করেন।
টস জিতে বোলিং নিয়ে শুরুতেই কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পায় বাংলাদেশ। চোট কাটিয়ে ফেরা তাসকিন আহমেদ একাদশে ঢুকে প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন। বোল্ড আউট হয়ে শূন্য রানে ফেরেন ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক।
স্বাগতিক ব্যাটারদের কোনও পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। বরং শুরুর ধাক্কা সামলে দুই ঘণ্টার মতো কর্তৃত্ব করেন শান মাসুদ ও সাইম আইয়ুব জুটি। তাদের প্রতিরোধেই প্রথম সেশন নিজেদের করে নেয় স্বাগতিকরা। প্রথম সেশনে ২৫ ওভার ১ উইকেটের বিনিময়ে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯৯ রান।
লাঞ্চ বিরতি থেকে ফিরে দ্বিতীয় সেশনের তৃতীয় ওভারেই পাকিস্তানের প্রতিরোধ ভাঙেন মিরাজ। শান মাসুদকে এলবিডাব্লিউতে বিদায় দিয়ে ১০৭ রানের জুটি ভাঙেন তিনি। এরপর থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে স্বাগতিকরা।
সাইম আইয়ুব খেলছিলেন প্রপার টেস্ট ক্রিকেট। তাকে বড় শট খেলতে একপ্রকার ফাঁদেই ফেলেছিলেন মিরাজ। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে স্লগ করতে চেয়েছিলেন। তবে বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া বলটা ব্যাটে আসেনি। বল উইকেটরক্ষক লিটনের হাতে যেতেই নিখুঁত স্ট্যাম্পিং।
এরপর সৌদ শাকিল ফিরতে পারেন শূন্য রানেই। নাহিদ রানার বলে স্লিপে ক্যাচ যায়। তবে তা মিস করেন মিরাজ। ২৮ বলে ১৬ রান করে এগোচ্ছিলেন প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি করা এই ব্যাটার। তবে সেটাকে বাড়তে দেননি তাসকিন। ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় স্ট্যাম্পে। তাসকিনের দিনের দ্বিতীয় শিকার হন এই ব্যাটার।
সাকিব আল হাসান চাপ বাড়িয়েছেন। মেহেদি হাসান মিরাজ পেয়েছেন উইকেট। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের শেষ বিকেলে চিত্র ছিল। মাঝে মোহাম্মদ রিজওয়ানের উইকেট তুলে নিয়েছেন পেসার নাহিদ রানা। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে রিজওয়ানকে নাজমুল হোসেনের ক্যাচ বানিয়ে ফিরিয়েছেন এই গতি তারকা। লাফিয়ে ওঠা বলে খোঁচা দিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন আগের ম্যাচে দারুণ ছন্দে থাকা রিজওয়ান। তার আউটে ষষ্ঠ উইকেট হারায় পাকিস্তান।
২৪ রানের জুটির পর মিরাজের বলে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন খুররাম শেহজাদ। ক্যাচ দিয়েছেন মিড–অফে দাঁড়িয়ে থাকা সাকিব আল হাসানকে। মিরাজ পেয়ে যান নিজের তৃতীয় উইকেট। এরপরেই সাকিব আল হাসানের বলে ক্যাচ মিস করেন মুমিনুল হক। জীবন পান মোহাম্মদ আলী।
তবে সেটার সুবিধা পাকিস্তান নিতে পারেনি। মোহাম্মদ আলী বেশিক্ষণ টিকলেন না। মিরাজের বলে স্লিপে সাদমান ইসলামের ক্যাচ হয়েছেন। মিরাজ নিলেন চতুর্থ উইকেট, পাকিস্তান হারায় অষ্টম ব্যাটসম্যান।
সালমান আলী আঘা এরপর মারমুখী হয়েছেন। নতুন বলে তাসকিন আক্রমণে আসতেই উড়িয়ে খেলেছেন। তুলে নেন ফিফটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই তাসকিনের বলেই ফিরতে হয় তাকে। বাউন্সার বলে খেলতে চেয়েছেন ফাইন লেগে। সাকিব আল হাসান বাউন্ডারি লাইনে নিয়েছেন দারুণ এক ক্যাচ।
আর ঠিক পরের বলেই আবরার এগিয়ে এসে খেলতে গিয়েছিলেন মিরাজকে। ব্যাটে বলে হয়নি। বল লিটনের হাতে জমা পড়তেই ভেঙে দেন স্ট্যাম্প। পূর্ণ হয় মিরাজের পাঁচ উইকেট। পাকিস্তান থামল ২৭৪ রানে।
ব্যাটিংয়ে নেমেইনিংসের প্রথম বলেই মীর হামজার শিকার হতে বসেছিলেন সাদমান ইসলাম। ফোর্থ স্টাম্প বরাবর করা বল আউটসাইড এজ হয়ে গালির দিকে ছুটলেন। দুই হাত দিয়ে বল ধরে রাখতে পারলেন না সৌদ শাকিল। জীবন পেয়ে গেলেও দিনের শেষ ১১ বল খেলতে বেশ ভুগেছেন সাদমান, তার সঙ্গে জাকির হাসান ৩ বল খেলেছেন। শেষ পর্যন্ত সবগুলো উইকেট হাতে রেখে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ, স্কোরবোর্ডে জমা পড়েছে ১০ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে ৮৬.১ ওভারে ২৭৪/১০ (মীর হামজা ০*, আগা সালমান ৫৪, আবরার ৯, আলী ২, খুররাম শাহজাদ ১২, বাবর আজম ৩১, মোহাম্মদ রিজওয়ান ২৯, আব্দুল্লাহ ০, শান মাসুদ ৫৭, সাইম আইয়ুব ৫৮, সৌদ শাকিল ১৬)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ২ ওভারে ১০/০ (সাদমান ৬*, জাকির ০*)
ঢাকানিউজ২৪.কম / এইচ
আপনার মতামত লিখুন: