মোঃ জাহিদুল ইসলাম,বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি, বরিশাল: হত্যা না স্বাভাবিক মৃত্যু, স্বজনেরা ও মৃতের ছেলে বলছে তার বাবাই হত্যাকারী। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এর অপেক্ষা না থেকে তার বাবাকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবদ জরুরি বলে স্হানীয় দের ধারণা।
বছর ১৫ এর আগে উপজেলার কবাই ইউনিয়নের মাছুয়াখালী গ্রামের রাজ্জাক বয়াতির কুমারী মেয়ে খালেদা বেগমকে ভালোবেসে বিয়ে করেন কলসকাঠির বাগদিয়া গ্রামের আরশেদ আলীর পুত্র আলামিন হাওলাদার। কথা ছিল দুজন মিলে সুখের সংসার গড়বে।সেই সুখ যেন আর ধরা দেয়নি খালেদার জীবনে। বিয়ের ৬ মাসের মাথায় যৌতুকের জন্য চাপ দেয় আলামিন, দফায় দাফায় টাকা এনে দিয়েও সুখী হতে পারেনি খালেদা, দিন দিন যৌতুকের মাত্রা বেড়ে গেলে খালেদার পরিবার আলামিনের বিরুদ্ধে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করে, পরবর্তীতে খালেদা তার পরিবারকে আবার বুঝিয়ে সে মামলা গুলো উত্তোলন করেন।
খালেদার বাবা এভাবে ১৫ বছরের প্রায় সাতটি মামলা করেন আলামিনের বিরুদ্ধে, পরবর্তীতে স্থানীয় সালিশে খালেদা আলামিনের সংসার জীবনের ইতি টেনে স্থানীয় কাজীর মাধ্যমে দুজনার তালাক কার্যকারী হয়। বছরখানেক পরে আল-আমিনের অনুরোধ হানুয়া গ্রামের ইউপি সদস্য বসার শিকদারের মাধ্যমে তালাক ভেঙে আবার আলামিনের ঘরে চলে আসেন খালেদা আক্তার। আলামিন সেই পুরনো রূপে চলে যায় শুরু করেন নির্যাতন
গত ৫/৬/২০২৩ ইং সোমবার রাত ঠিক এগারোটা আলামিন তার শ্বশুরকে ফোন দেয় তার অসুস্থতার জন্য টাকা লাগবে চিকিৎসার জন্য টাকা না দিলে মেয়ের কবর রচিত হবে বলে শশুরকে শাসায়, ঠিক ১১ঃ১৫ মিনিটে ফোন দেয় আল-আমিনের ছোট ভাই রাসেল তার ভাবি আর এই পৃথিবীতে নেই, কথাগুলো বলছিলেন আর কাদঁছিলেন খালেদার বাবা রাজ্জাক বয়াতি।
খালেদার বাবা রাজ্জাক আরো বলেন সন্তানের লাশ বাবার কাঁদে এর চেয়ে কষ্ট আর কি হতে পারে বলেন, আমরা এই খুনির বিচার চাই, সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় এস আই স্বপন ও রিয়াজ লাশের সুরাহতাল শেষে স্থানীয়দের বক্তব্য রেকর্ড করছেন পাশে বসা আলামিন জিজ্ঞেস করলেই বলে, আমার স্ত্রী তিন দিন ধরে অসুস্থ গতরাত ১০ টায় মারা গেছে, চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা হচ্ছে কিনা বললো কবিরাজ দেখিয়েছে চারটা তাবিজ দিছে স্বাভাবিক মৃত্যু হলে পুলিশ লাশ কেন পোস্টমর্টেম পাঠাবে তার কোন উত্তর নাই, হত্যা না স্বাভাবিক মৃত্যু তিনি জড়িত কিনা বললো পোস্টমর্টেম রিপোর্টে সব জানা যাবে, লাশের সাথে শেবাচিমে যাবেন কিনা ওটা পুলিশের কাজ সবকিছুই স্বাভাবিকভাবে সে উত্তর দিচ্ছে।
মায়ের মৃত্যুর সময় আলামিনের ছেলে হৃদয় পাশে ছিলেন না, কিছুদিন আগে তার বাবা তাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে জোর করে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়, হৃদয়, আলামিন কে বারবার মারতে উদ্যত হয় আর খুনী হিসেবে তার বাবাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, আমাকে ঢাকা পাঠিয়ে তুই তো আমার মাকে হত্যা করেছিস শতাধিক মানুষের ভিড়ে ছোট্ট হৃদয় বাবাকে খুনি হিসেবে চিহ্নিত করায় সবার একটাই প্রশ্ন, হত্যা না স্বাভাবিক মৃত্যু পোস্টমর্টেম রিপোর্টের অপেক্ষা না থেকে আলামিনকে পুলিশে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসা করলেই বেরিয়ে আসবে আসর রহস্য, তদন্ত কর্মকর্তা এস আই স্বপন বলেন আমরা খালেদা আক্তার নামে এক নারির লাশ উদ্বার করছি সুরহতাল করে পোস্টমার্টামের জন্য শেবাচিমে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জাফর হাওলাদার বলেন আলামিন ও খালেদার ঘরে দুইটি ছেলেমেয়ে ছেলে হৃদয় ১৩ বছর আর মেয়ে তাম্মি ৭ বছর দাম্পত্য কোলাহ শোনা গেলেও আমি কখনোই তাদের দেখেছি আর এখন এসে পুলিশ লাশ নিয়ে যাচ্ছে।
সর্বশেষ বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম মাকসুদুর রহমান জানান, নিহত গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে দেয়া হয়েছে। পুলিশের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী নিহত খালেদা কিছুদিন যাবৎ অসুস্থ ছিলেন। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: