• ঢাকা
  • সোমবার, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

চট্টগ্রামের সাবেক মন্ত্রীরা কে কোথায়


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শনিবার, ৩১ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২:০১ পিএম
কে কোথায়
চট্টগ্রামের সাবেক মন্ত্রীরা

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার পতনের চারদিন পর ৯ আগস্ট জনসমক্ষে এসেই জনরোষে পড়েন চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফ। বিরোধী পক্ষের ধাওয়া খেয়ে বোনের বাসায় আশ্রয় নিলে সেনাবাহিনীর একটি টিম সেখান থেকে হেফাজতে নেয় তাকে। পরে ১৬ আগস্ট বায়েজিদ বোস্তামি এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বিলুপ্ত সংসদের চট্টগ্রামের ১৬ আসনের এমপিদের মধ্যে একমাত্র লতিফই গ্রেপ্তার আছেন। বাকিদের মধ্যে কেউ বিদেশ পাড়ি জমিয়েছেন, কেউ রাজনৈতিক সখ্যতায় ‘সেফ জোনে’, কেউবা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। 

চট্টগ্রাম- ১ (মিরসরাই) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফপুত্র মাহবুব রহমান রুহেল ১৭ জুলাই অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে ঢাকায় ফিরেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি দেশেই আছেন বলে প্রচার চালাচ্ছেন।
তাঁর একটি পোস্টের কমেন্টে এককর্মী কোথায় আছেন জানতে চাইলে তিনি উত্তরে লিখেছেন— ‘আমি দেশে আছি এবং গত দুই সপ্তাহ ধরে ফুসফুসের গুরুতর সংক্রমণে ভুগছি। দুদিনের মধ্যে সুস্থ হলে মিরসরাইয়ে আসবো ইনশাআল্লাহ।’

তবে দেশের কোন জায়গায় অবস্থান করছেন সেটি না জানালেও একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, রুহেল ঢাকায় রয়েছেন।

চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। চট্টগ্রামে তিনি আত্মগোপন করেছেন, বলছে ঘনিষ্ট একটি সূত্র।
চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান সন্দ্বীপ থেকে ঢাকায় গিয়ে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে। 

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম আল মামুন সরকার পতনের দিন থেকে আত্মগোপনে চলে গেছেন। তবে তিনি সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যখ্যাত জঙ্গল সলিমপুরে লুকিয়ে রয়েছেন বলে জানা গেছে একটি সূত্রে।

চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। সরকার পতনের পর তাকে কোথাও প্রকাশ্যে দেখা না গেলেও তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে দলটির একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে তার দেশের বাইরে চলে যাওয়া বা আত্মগোপনে থাকার বড় কোনো কারণ নেই বলে জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করেন।
রাউজানের আলোচিত-সমালোচিত সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী দেশেই রয়েছেন। তবে কোথায় রয়েছেন তা নিশ্চিত করা না গেলেও একটি সূত্র জানিয়েছে তিনি ঢাকার একটি তারকা হোটেল  ‘আত্মপোগনে’ আছেন।

চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে সরকার পতনের পরদিন ৬ আগস্ট ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশত্যাগের চেষ্টার সময় ইমিগ্রেশন পুলিশ আটকের গুঞ্জন উঠেছিল। পরে তাকে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে বিমানবন্দর সূত্র গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছিল। তবে অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, তিনি তিনদিন আগে নৌপথে ভারত পালিয়ে গেছেন। পরে সেখান থেকে বেলজিয়াম চলে যাওয়ার কথা চাওর হয়েছে।

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুচ ছালাম ‘নির্ভয়ে’ রয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকে। সরকার পতনের আগে থেকে অসুস্থ ছিলেন তিনি।  দীর্ঘদিন তিনি নগরের মোহরার বাড়িতে ছিলেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামে অবস্থান করলেও কোথায় রয়েছেন তা জানা যায়নি। 

চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সহিংসতার সময় তিনি চট্টগ্রামে এলেও বেশিদিন অবস্থান করেননি। এছাড়া সরকার পতনের আগের ১০ দিন ধরে ঢাকায় ছিলেন। এরপর শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করলে তিনিও ‘আত্মগোপনে’ চলে যান। সূত্রে জানা গেছে, তিনি এবং চট্টগ্রামের আরেক আওয়ামী লীগ নেতা একসঙ্গে ঢাকায় আত্মগোপনে রয়েছেন।

চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-হালিশহর-পাহাড়তলী-পাঁচলাইশ-খুলশী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু। দেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় কানাডা ছিলেন তিনি। গত ২৮ জুলাই কানাডা সফর শেষে দেশে এসে আর কোথাও যেতে পারেননি। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরপরই তিনি আত্মগোপনে চলে যান। তবে কোথায় আছেন তা জানা যায়নি।
চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফ গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি এখন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন। চট্টগ্রামের এক আত্মীয়ের বাসায় তিনি আশ্রয় নিয়েছেন বলে শোনা গেলেও এখন কোথায় তা জানা যায়নি।

চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ৪ আগস্ট দেশত্যাগ করে যুক্তরাজ্যে চলে গেছেন বলে জানা গেছে। সরকার পতনের আগে তাঁর পালিয়ে যাওয়ার কথা চাউর হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি জরুরি কাজে ঢাকায় আছেন বলে প্রচার করেন।

চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া আংশিক) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী শ্রম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। সরকার পতনের আগে বেশ কয়েকবার এলাকায় গেলেও সবশেষ কোথায় রয়েছেন তা জানা যায়নি। নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, তিনি দেশেই রয়েছেন।
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের সাবেক এমপি আবু রেজা নেজামুদ্দীন নদভীকে কেন্দ্রীয় নেতার ঘোল খাইয়ে সংসদে যাওয়া এম এ মোতালেব, তার ছেলে ওয়াহিদুল ইসলাম সিলেটে অবস্থান করছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তাঁর ছোট ভাই মাহমুদুল হক জামায়াত নেতা হিসেবে পরিচিত। সেই সুবাদে তিনি  ‘সেফ জোনে’আছেন বলে মনে করছেন অনেকে।

এদিকে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান সিআইপি দেশেই আত্মগোপনে রয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। পরিস্থিতি একটু ‘অনুকূলে’ এলেই তিনি জনসম্মুখে আসবেন! মোতালেব-ছালামের মতো বড়ভাই মোস্তাফিজুর  রহমান চৌধুরীর ‘বদান্যতায়’ মুজিবও ‘সেফ জোনে’ আছেন বলে মনে করেন তাঁর ঘনিষ্টজনরা।

সংরক্ষিত আসনের তিন সাবেক সংসদ সদস্যের মধ্যে ওয়াসিকা আয়েশা খান সরকারি সফরে কানাডায় যাওয়ার পরই সরকার পতন ঘটে। এছাড়া দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুণ লুবনা ও  উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দিলোয়ারা ইউসুফ চট্টগ্রামে নিজেদের আড়াল করেছেন বলে জানা গেছে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image