নিউজ ডেস্ক : উজানের ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে হু-হু করে পানি বাড়ছে তিস্তায়। কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তায় পানি বাড়তে থাকায় রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার বাসিন্দাদের মধ্যে বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
শনিবার পর্যন্ত নদীতীরের বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। পানি যেকোনো সময়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানিয়েছে। এ কারণে তিস্তাপারে বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অসময়ে বন্যা হলে আমন ধান, আগাম আলুসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হবে। ফলে কৃষকদের পথে বসতে হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
পাউবো সূত্র জানায়, শনিবার দুপুর ১২টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে ৫২ দশমিক ১০ সেন্টিমিটারে পানি প্রবাহিত হয়েছে। এই পয়েন্টে বিপৎসীমা ধরা হয় ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার। এখানে যেকোনো সময়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। কাউনিয়া পয়েন্টেও হু-হু করে পানি বাড়ছে। একই সময়ে কাউনিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ ছিল ২৯ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ধরা হয় ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার।
শনিবার বেলা ৩টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ একই ছিল। পানি বাড়ার ফলে লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। চরাঞ্চলের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমিতে পানি উঠতে শুরু করেছে। বিশেষ করে জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের নদী-তীরবর্তী মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। ওই ইউনিয়নের স্প্যার বাঁধ এলাকার বাসিন্দা সহকারী অধ্যাপক রবিউল আলম বলেন, শুক্রবার রাত থেকে পানি বাড়তে শুরু করে। এতে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। তবে বৃষ্টিপাত কমে এলে পানি নেমে যাবে বলে আশা করছেন।
ডালিয়া পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন বলেন, অবিরাম বর্ষণ আর উজানের ঢলে তিস্তায় আরও পানি বাড়তে পারে। পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যারাজের সব স্লুইসগেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
লালমনিরহাট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার রায় বলেন, দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি এখন বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে রংপুর বিভাগের তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা করছেন। পরবর্তী দুই দিনের মধ্যে তা কমে বিপৎসীমার নিচে চলে আসতে পারে বলেও জানান তিনি।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তাপারের চর ও নিম্নাঞ্চলেও পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বেশ কয়েকটি চর ও নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দা। আমন ধানের জমিও তলিয়ে গেছে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: