• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৫ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

আসুন, সবাই বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াই 


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ২৬ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০২:১৬ পিএম
আসুন, সবাই বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াই 
দেশ বন্যায় ভাসছে

শিতাংসু গুহ

২১আগষ্ট ২০২৪-এ সামাজিক মাধ্যমে লিখেছিলাম, আসুন, আমরা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াই। বলেছিলাম, দেশ বন্যায় ভাসছে। সবাই বন্যার্তদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসুন। হিন্দুরা দুর্গাপূজার খরচ কমিয়ে বন্যার্তদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন্। অন্যের হাতে অর্থ দিয়ে নয়, নিজেরাই সাহায্য করুন, কারণ দেশ আগের মতই চোর-বাটপারে ভরা। তাছাড়া এবার পূজা করতে পারবেন কিনা কেজানে, পারলেও হিন্দু-নির্যাতনের প্রতিবাদ হিসাবে ‘ঘটপূজা’ করুন। পূজার অর্থ বাঁচিয়ে যাদের ঘরবাড়ী ভেঙ্গেছে তাদের ঘর বানিয়ে দিন; যেসব রমণী ধর্ষিতা হয়েছে তাদের পুনর্বাসন করুন, যাদের চাকুরী গেছে তাদের পাশে দাঁড়ান। ২৬শে আগষ্ট সকাল, ইতিমধ্যে বন্যার জল অনেকটা গড়িয়ে গেছে, বহু অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। দেশের মানুষ বন্যার্তদের সাহায্যার্থে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রবাসীরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এটি ভাল।


আমরা ছোটকাল থেকে বন্যা দেখেছি। সেই ছোট্টবেলা হতেই জানি, “বন্যার জন্যে ভারত দায়ী”। এতকাল হুঙ্কার ছিলোনা, এবার সেটাও দেখলাম। একজন লিখেছেন, ভারত জল ছেড়ে দেয়ায় সৌদি আরবে বন্যা হয়েছে। এক হুজুর বলেছেন, হিন্দুদের সাহায্য নেয়া যাবে, তাদের বন্ধু বানানো যাবেনা। আর এক ফতোয়া দেখলাম, মসজিদের টাকা বন্যার্তদের সাহায্যে ব্যয় করা যাবেনা। আমরা সবাই জানি, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা সব ভরাট হয়ে গেছে। নদী খনন হয়না বহুকাল। অতিবৃষ্টি বা উজান থেকে বয়ে আসা জল যাবে কোথায়? আমাদের ‘উন্নত’ ড্রেন ব্যবস্থার কথা সবার জানা। ১৯৮৮ সালে দেশে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিলো, অক্সফামের সহায়তায় আমরা (আমিও) ব্যাপক ত্রাণ তৎপরতা চালিয়েছিলাম। ছোটবেলায় পড়েছিলাম, ‘গোমতী নদী কুমিল্লার দু:খ’। জাহাঙ্গীর হোসেন নামক যশোরের এক যুবক হাদিস ঘেটে প্রমানসহ লিখেছেন, ‘পাপ বাড়লে বন্যা হয়’। বুঝতে পারছি না, বন্যার জন্যে কি পাপ দায়ী, না ভারত দায়ী? 


প্রধান উপদেষ্টা ড: মুহাম্মদ ইউনুস বলেছেন, বন্যা নিয়ে যা প্রচার হচ্ছে তা দু:খজনক। পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ ড: আইনুন নিশাত বলেছেন, “এই বন্যা রাজনীতির অংশ নয়। আর একজন পানি বিশেষজ্ঞ ম ইমানুল হক বলেছেন, ‘গোমতী অববাহিকায় ডমরু বাঁধের গেটখোলা জল ফেনীতে যায়না। ফেনী ডুবেছে মুহুরী নদীর বন্যায়”। বন্যার প্রতিবাদে ভারত বিরোধী মিছিল হয়েছে। মিছিলে হিন্দু-বিদ্বেষী শ্লোগান হয়েছে। ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচী হয়েছে। বিবিসি বলেছে, বন্যার বিষয়ে বাংলাদেশ আগে থেকে কেন প্রস্তুতি নিতে পারলো না? জুলাই মাসে এক বৈঠকে শেখ হাসিনা আগষ্টের বন্যার বিষয়ে আগাম সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বন্যার দুর্দশা বোঝাতে একটি বাচ্চার ভুয়া ছবি ভাইরাল হয়েছে, এতে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি। সরকার আসে সরকার যায়, বন্যা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়ার কেউ সময় পায়না। সবাই বন্যার জন্যে ভারতকে দায়ী করে তাদের কর্তব্য শেষ করে। 


এবার দু’একজন উপদেষ্টা, কিছু শিক্ষার্থী দেখলাম বেশ গরম, ভাইসব ভারতকে উচিত শিক্ষা দেয়া দরকার, চলেন আমরা ফারাক্কা বাঁধটা ভেঙ্গে দিয়ে আসি, অথবা ভারতকে আক্রমন করি। সামাজিক মাধ্যমে একজন এবারের বন্যাকে ‘জ্বিহাদী বন্যা’ হিসাবে আখ্যায়িত করেন। বন্যা জ্বিহাদের অংশ হিসাবে ভারতকে আক্রমন করা প্রতিটি মুমিন মুসলমানের কর্তব্য। শুক্রবার ২৩শে আগষ্ট জুম্মার পর বেশ কিছু মসজিদে বন্যার বিরুদ্ধে জ্বিহাদ ঘোষণার কথা বলা হয়েছে, ভারত বিরোধী কথবার্তা এসেছে। যারা দেশকে নূতনভাবে স্বাধীন করলেন তাদের উচিত ভারতকে শিক্ষা দেয়া। এরা শেখ হাসিনাকে শিক্ষা দিয়েছেন, ভারত বাকি থাকে কেন? বন্যা জ্বিহাদে ‘আবাবিল পাখি’ নিশ্চয় মুমিনদের পক্ষে, ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। কোন হুজুর হয়তো ভারতকে পরাজিত করার কোন দোয়া আবিষ্কার করে ফেলবেন। সুতরাং, বাংলার নওজোয়ান ভারত অভিমুখে হও আগুয়ান। 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image