• ঢাকা
  • বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

অহন মাথা গুজার টাই হইছে, দিনে একবার খাইলেও শান্তি


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০২:৩৬ পিএম
অহন মাথা গুজার টাই হইছে
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ পল্লী

বিজয়কর রতন, মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ  মিঠামইন উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঘোড়াউত্রা নদীর উত্তর তীরে ১৫ একর জমি নিয়ে ঘড়ে উঠেছে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ পল্লী। প্রথম দিকে রাষ্টপতির নির্দেশে কিছু কিছু টিন সেট ঘর উঠলেও পরবর্তীতে প্রায় ২বছর পর ঘর গুরো অকেজো হয়ে পড়ে। ২০২১ সনে প্রধান মন্ত্রীর আশ্রায়ন প্রকল্পের অধীনে অসহায়, ভূমিহীন, গৃহহীন পরিবারের  জন্য সরকারীভাবে ঘর নির্মান কাজ শুরু হয়।

এই পল্লীতে প্রথম পর্যায়ে ৯টি ঘর নির্মানের মমধ্য দিয়ে কাজ শুরু হয়। যার ব্যয় ধরা ১৫ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা। ২য় পর্যায়ে আরো ৬০টি ঘর নির্মান করা হয়। এতে ব্যয় হয় ১ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা। ৩য় পর্যায়ে ১৭৮টি ঘর নির্মানে ব্যয় হয় ৪ কোটি ৬১ লক্ষ ৯১ হাজার টাকা। ৪র্থ পর্যায়ে ৭৫টি নির্মানের কাজ চলছে। বর্তমানে ২৪৭টি পরিবারের জন্যঘর নির্মানে ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ৯১ লক্ষ ৩০ হাজার। এসকল ঘরে গৃহহীনরা পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছে। এ প্রকল্পের আওতায় ঘর নির্মান ছাড়াও ঘরে বসবাসরত পরিবারদের জন্য নির্মান করা হয়েছে একটি মসজিদ, ২টি মন্দির, ১টি মুজিবকেল্লা, ৪টি দোকান, খাবারের পানির জন্য ১০টি টিউবয়েল।

প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। একটি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মানাধীন রয়েছে। বিদ্যালয় প্রতিষ্টার জন্য প্রস্তাবিত স্থান নির্ধারন করা হয়েছে। হামিদ পল্লীতে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মান কাজে উপজেলার বিভিন্ন সরকারী দপ্তর সহযোগিতা করেছেন। ইপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় অন্যান্য দপ্তরের মধ্যে রয়েছে, এলজিইডি, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি), জনস¦াস্থ্য, সমবায়, পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি। এছাড়াও  মিঠামইন সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এডঃ শরীফ কামাল সার্বক্ষনিক হামিদ পল্লীর ঘর নির্মান কাজের সময় বিভিন্ন রকম সহযোগিতা করেছেন। তিনি মাটি ভরাট সহ, প্রায়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছেন। সরজমিনে ঘোড়াউত্রা নদীর তীরে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ পল্রীতে আশ্রয়ায়ন প্রকল্পের ঘর দেখতে গিয়ে সুবিধাভোগী কয়েকটি পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা হয়। হালিমা খাতুন নামে একজন গৃহিনী বলেন তাদের বাড়ী কামাল পুরে ছিল। তারা সদর চেয়ারম্যান শরীফ কামালের বাগান বাড়ীতে থাকত। এখন হামিদ পল্লীতে “ঘর পাইয়া মাথা গোজার টাই হইছে। দিনে একবার খাইলেও শান্তি”। আমি অহন মিডামইন হাসপাতালে ডাকতারের ভাত রান্দি। আমার জামাই জলিল মিয়া পল্লীতে শাকসবজীর চাষ কইরা হেইডা বেইচ্ছা কোন মতে সংসার চইল্লা আছে। এক পোলা কলেজ পড়ে, আরেক মাইয়া ইসকুলে পড়ে। প্রধান মন্ত্রীর ঘর পাইয়া আমরা খুশি। অপর গৃহিনী মাহমুদা আক্তার (২২), তার বাড়ী ছিল মিঠামইন সদর ইউনিয়নের ক্ষিদির পুর গ্রামে, তারা অন্যের বাড়ীতে বসবাস করত হামিদ পল্লীতে ঘর পাইয়া আমরা খুশি। তারস্বামী রিদয় মিয়া রাজমিস্ত্রীর কাজ করে। তার শশুর সায়োরার মিয়া শাকসবজীর চাষ করে পল্লীতে। তাদের পরিবারে লোকসংখ্যা ৭জন। বাড়ীঘরের চিন্তা দূর হইছে। অহন একদিন না খাইয়া থাকলেও শান্তি। পল্লীতে কোন কিছুর অভাব নেই।

প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোওয়া করি। সদর ইউনিয়রের আশাপুর গুচ্ছগ্রাম থেকে আসা রজব আলীর সাথে কথা হয় তিনি বলেন, হামিদ পল্লীতে ঘর পাইয়া শান্তিতে আছি। তিনি ঢাকাও সিলেটে ব্যবসা করেন তার মা পল্লীতে শাকসবজীর চাষ করে সংসার চালায়। তার মতো আরও ২শত পরিবার রয়েছে। তারাও বিভিন্ন কাজকর্ম করে সংসার চালায়। পল্লীতে আমরা অনেক শান্তিতে আছি।  মিঠামইন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোল্লা খলিলুর রহমান জানান, উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় হামিদ পল্লীতে গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মান করতে পেরেছি। ৪র্থ পযার্য়ে কাজ শুরু হচ্ছে।মিঠামইন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, তিনি এই উপজেলায় যোগদানের পর ৩য় পর্যায়ে ১৭৮টি ঘর নির্মান করেছেন। বর্তমানে ৪র্থ পর্যায়ে নির্মানাধীন রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্পের ঘর নির্মানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা উপজেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা করেছেন। সদর ইউপি চেয়ারম্যানও বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করেছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আছিয়া আলম ও মাননীয় সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক মহোদয় বিভিন্ন সময় এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। জেলা প্রশাসক মহোদয় কিছুদিন পরপরই হামিদ পল্লীতে ঘর নির্মানের কাজ পরিদর্শনে আসেন এবং আশ্রয়ন প্রকল্প আসা প্রতিটি পরিবারের খোজখবর নেন। তিনি আরও বলেন, অবসর সময়ে প্রায়ই তিনি এ সকল পরিবারের খোজখবর নিতে হামিদ পল্লীতে ছুটে যান।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image