
সুমন দত্ত: ওয়ারী ইসকন মন্দিরে হামলাকারী হাজি সফিউল্লাহ ও তার সহযোগী ইসরাফ সুফি কে এখনো পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। ১৭ মার্চ বৃহস্পতিবার ওয়ারী থানা পুলিশের নীরব ভূমিকার কারণে হামলাকারীরা অতি উৎসাহ নিয়ে নক্কারজনক এই আক্রমণ চালিয়েছিল। ইসকন কর্তৃপক্ষ হাজি সফিউল্লাহর বিরুদ্ধে আদালতে তিন মামলা করেছে। মামলা গুলি খারিজ হয়েছে পুলিশের এই বয়ান পুরোপুরি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে (সাবেক ভিআইপি হলে) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওয়ারী ইসকন মন্দির কর্তৃপক্ষ। ইসকনের পক্ষে বিবৃতি পড়ে শোনান চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী।
সংবাদ সম্মেলনে ইসকন কর্তৃপক্ষ বলেন, ৪১ নং ওয়ার্ডের ২২২ লাল মোহন সাহা স্ট্রীটে অবস্থিত শ্রী শ্রী রাধাকান্ত জিউ তথা ওয়ারী ইসকন মন্দিরটি আড়াইশ বছর পুরানো একটি মন্দির। এই মন্দিরের জায়গা দখল করে আছে হাজি সফিউল্লাহ। তার বিরুদ্ধে ইসকন কোনো মামলা করেনি। ইসকন এই মন্দিরের দায়িত্ব পাওয়ার পর মন্দিরের সীমানায় কেউ প্রবেশ যাতে করতে না পারে তেমন একটি আদেশ আদালত থেকে নিয়ে আসে। যার মেয়াদ শেষ হয়েছে। এদিকে পুলিশের সূত্রে প্রচার করা হয় ইসকন হাজি সফিউল্লাহর বিরুদ্ধে তিন মামলা করেছে এবং তা খারিজ হয়েছে। যা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। পুলিশ এক মুখের কথা শুনে মিডিয়াতে এই বিবৃতি দিয়েছে। যার প্রতিবাদ আমরা পুলিশকে জানিয়েছি।
হাজি সফিউল্লাহর সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টির কারণ কি? সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসকনের সাধু বলেন, হাজি সফিউল্লাহ অনেকদিন আগে এই মন্দিরের এক সেবাইত রুনু বালা দাশের কাছ থেকে বিক্রি দলিল করে কিছু জায়গায় দখল করে নেয়। সেই দলিল তিনি রেজিস্ট্রি করতে পারেননি। কারণ আপনারা সবাই জানেন হিন্দু আইনে দেবত্তর সম্পত্তি কেউ বিক্রি কিংবা লীজ কিংবা হস্তান্তর করতে পারে না। তাছাড়া হিন্দু আইনে কোনো নারী সেবাইত কোনো সম্পত্তির মালিক হয় না। হাজি সফিউল্লাহর কাছে সেই দলিল থাকার কারণে অবৈধভাবে তিনি মন্দিরের সম্পত্তি ভোগ দখল করছেন। তার কাছে বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। এখন তাকে মন্দিরের সম্পত্তি ছেড়ে দিতে হবে। এমনটা জানার পর সে মন্দিরের আরো কিছু জায়গা লোকজন নিয়ে দখল করতে আসে।
স্থানীয় পুলিশের নিস্ক্রিয় ভূমিকার কারণে সেদিন পুলিশের সামনেই আক্রান্ত হোন নীহার হালদার, রাজীব ভদ্র, সুমন্ত্র চন্দ্র নামে তিনজন সনাতন ধর্মাবলম্বী। তাদেরকে কিল ঘুষি মেরে রক্তাত্ব করা হয়। তাদের ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। এ ঘটনায় নীহার হালদারের কাছ থেকে হামলাকারীরা মোবাইল ছিনিয়ে নেয়।
এদিন সংবাদ সম্মেলনে হিন্দু সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা ওয়ারীর ইসকন মন্দিরে হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেন। তারা সরকারের কাছে এ ঘটনার বিচার চান। দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত না করে তারা ঘরে ফিরবেন না। এই আন্দোলন তারা চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষাণ দেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / এসডি
আপনার মতামত লিখুন: