• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

শেরপুরে বাঁশের তৈরী চাঁই বিক্রির ধুম


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ২৩ মে, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৫:৩০ পিএম
বাঁশের তৈরী চাঁই বিক্রির ধুম
বাঁশের তৈরী চাঁই

শেরপুর প্রতিনিধি: বর্তমানে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে ফসলের জমি থেকে শুরু করে খাল-বিল ও নদীতে এখন পানি টুই- টুম্বর।

এতে দেশী প্রজাতির ছোটজাতের মাছের পরিমাণ বেড়ে গেছে। তাই বিভিন্ন উপায়ে মাছ ধরতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। এ উপলক্ষে শেরপুর জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে দেশি প্রজাতির ছোট মাছ ধরার উপকরণ বাঁশের তৈরি চাঁই (মাছ ধরার ফাঁদ) বিক্রির ধুম পড়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার হাটবাজারগুলোতে শত শত চাঁই বিক্রি হচ্ছে। এখানকার তৈরি চাঁই স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে পার্শ্ববর্তী জেলাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। গুণগত মান ভালো হওয়ায় আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন চাঁইশিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা। নিম্নআয়ের অনেক পরিবার বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে চাঁই তৈরিকে বেছে নিয়েছেন।

বাঁশ ও সুতা দিয়ে তৈরি এসব চাঁই ভালো মানের হওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকার মাছশিকারিরাও এসব হাটবাজার থেকে কিনে নিয়ে যান। বর্ষা মৌসুম এলেই চাঁইয়ের কদর বেশি হওয়ায় চাঁই তৈরির সঙ্গে জড়িত পরিবারগুলো মৌসুমের দুই-তিন মাসেই প্রায় সারা বছরের আয় করে নেন।

চাঁই তৈরির কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব চাঁই তৈরিতে প্রকারভেদে খরচ পড়ে ৮০ থেকে ২০০ টাকা। বিক্রি হয় ২০০ থেকে ৫০০ টাকায়। আকারে বড় চাঁই তৈরিতে খরচ অনুযায়ী বিক্রির মূল্য নিধারণ করা হয়। চাঁই, বিভিন্ন এলাকায় ধন্দি, বানা, খাদন, খালই, বিত্তি, বুড়ং ও ভাইর নামে পরিচিত। ছোট প্রজাতির মাছ ধরার সুতি, কারেন্ট জালসহ বিভিন্ন উপকরণের দাপটের কারণে বাঁশের তৈরি চাঁই বাজারে বেশ প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছে।
এ জেলার প্রায় দশটি এলাকার কয়েক শতাধিক মানুষ এই শিল্পের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করলেও এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি তেমন কোনো উদ্যোগ নেই।

ঝিনাইগাতী উপজেলার হাতিবান্দা ইউপির লয়খা গ্রামের আবু হানিফ বলেন, আগের মত আর বাঁশ পাওয়া যায় না, বাঁশের দামও অনেক। তাই লাভ খুব বেশি না হলেও বর্ষা মৌসুমে এর চাহিদা থাকায় রাত-দিন পরিশ্রমের মাধ্যমে চাঁই তৈরি করে তারা বেজায় খুশি। এতে একদিকে যেমন সময় কাটে, অন্যদিকে লাভের আশায় বাড়ির সদস্যরা মিলে চাঁই তৈরি করে অভাব ঘুচানোর চেষ্টা করেন।

এ গ্রামের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ঝর্ণা ও সেতু জানান, পড়ালেখার পাশাপাশি তাদের পরিবারকে সহায়তা করার জন্য তারাও চাঁই গাঁথে। এতে করে তাদের পড়ালেখার খরচের সমস্যা হয় না।

নালিতাবাড়ি উপজেলার নন্নী এলাকার সাজু মিয়া বলেন, ২-৩ বছর আগে তিনি নিজেই চাঁই তৈরি করতেন। এখন তিনি চাঁই তৈরির এলাকা ঘুরে ঘুরে চাঁই পাইকারী কিনে আনেন। পরে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন বাজারে হাটবারের দিনগুলোতে তা খুচরা বিক্রি করেন। এগুলো বিক্রির লাভ্যাংশ দিয়ে তার সংসার ভালই চলে। বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানি বাড়ায় বর্তমানে চাহিদা অনেক বেশি। এ কারণে দামও বেশি। এতে তার লাভও বেশি হচ্ছে বলে জানান তিনি।

ঝিনাইগাতী বাজারের ইজারাদার পক্ষের রাজস্ব (জমা) উত্তোলনকারী মো. মুকবুল হোসেন বলেন, বর্তমানে এই হাটে সপ্তাহের দুইদিনে প্রায় ১ লাখ টাকার মাছ ধরার সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। এ উপজেলার মানুষ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ এ হাটে এসব সামগ্রী কিনতে আসেন।

 

ঢাকানিউজ২৪.কম / জাহিদুল হক মনির/কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image