
কুমিল্লা প্রতিনিধি: দেশের এক সময়কার প্রসিদ্ধ বানিজ্যিক নগরী কুমিল্লার লাকসামে স্থাপন হতে পারে প্রস্তাবিত কুমিল্লা বিভাগীয় সদর দপ্তর। বহু আগ থেকেই এখানে ব্যাংক-বীমা ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের একাধিক বিভাগীয় দপ্তর রয়েছে। ফলে লাকসামকে ঘিরে উঠে এসেছে নানামুখী যুক্তিকতা। ফলে লাকসামে বিভাগীয় সদর দপ্তরের অবকাঠামো গঠনে কোন বিকল্প নেই।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার বৃহত্তর কুমিল্লা ও বৃহত্তর নোয়াখালী জেলার ৩টি করে মোট ৬টি জেলা নিয়ে আলাদা বিভাগ গঠনের পক্রিয়া শুরু করলে সম্প্রতি প্রস্তাবিত এ বিভাগের নাম কুমিল্লা বিভাগ হিসাবে ঘোষনা করার প্রক্রিয়া চলছে।
এ অঞ্চল মানুষের দীর্ঘদিনের দাবী বাস্তবায়নের পর ঐতিহ্যবাহী লাকসামকে জেলা ঘোষনার দাবীও এখন সামনে উঠে এসেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংযোগ কুমিল্লা-লাকসাম-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কটি লাকসাম পৌরশহরের ভিতরে পড়ে যাওয়ায় নবগঠিত বিভাগীয় সদর দপ্তর গড়ে তোলাই একাধিক যুক্তিকতা রয়েছে। কারন বৃহত্তর কুমিল্লা ও বৃহত্তর নোয়াখালী জেলার মধবর্তী স্থান হলো দেশের মহিয়ষী প্রথম নারী নবাব ফয়জুন্নেছার পূন্যভূমি লাকসাম।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রস্তাবিত এ বিভাগের সদর দপ্তর লাকসামে স্থাপিত হলে কারো এর বিপক্ষে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।
এ বিভাগ বাস্তবায়ন ঘিরে নতুন আঙ্গিকে এলাকার আরো উন্নয়ন হবে, গড়ে উঠবে পরিকল্পিত অবকাঠামো, উন্নত হবে যোগাযোগ ব্যবস্থা, ব্যবসা-বানিজ্য প্রসার হয়ে বাড়বে কর্মসংস্থান। সেই উন্নয়ন মহাসড়কে উজ্বল আলোয় আলোকিত হবে প্রাচ্যের বানিজ্যিক নগরী লাকসামও।
সূত্রটি আও জানায়, লাকসাম পৌরসভাটি দেশের প্রথম শ্রেণির পৌরসভাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এলাকার সার্বিক পরিবেশ পরিচ্ছন্ন ও রূচিশীলতার পরিচয় বহন করলেও দেশের বৃহত্তম আধুনিক ৪/৫টি রেলওয়ে জংশনের মধ্যে লাকসামও একটি এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪ এর সদর দপ্তর।
প্রসিদ্ধস্থাপনা গুলোর মধ্যে খান বাহাদুর সাহেবের জমিদার বাড়ী, অতুল কৃষ্ণ রায়ের জমিদার বাড়ী, জগন্নাথ মহা দেবালয়, রায় গোবিন্দ চৌধুরী জমিদার বাড়ী, তানসেন আশ্রম ঠাকুর বাড়ী, জ্যোতিপাল মহাথের কমপ্লেক্সসহ রয়েছে অসংখ্য পীর কামেলদের মাজার, দেশের অন্যতম ইসলামী বিদ্যাপীট গাজীমুড়া আলীয়া মাদ্রাসা, তৈলকল, করাতকল, ধান-চালসহ শাক-সবজির হাট বাজার।
অপরদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা-সিলেট রেলওয়ে এবং সড়ক যোগাযোগের অত্যাস্ত প্রাচীন রুট হিসাবেও লাকসাম পরিচিত। এখানে বিভাগীয় সদর দপ্তর গড়ে তুললে মরা ডাকাতিয়া নদীটি পূর্ন জীবন পেলে মেঘনা, গোমতী নদীর সাথে সংযোগ হয়ে দেশের সকল নৌবন্দরের যোগাযোগ সচল হয়ে উঠবে। এ অঞ্চলে জন্ম নিয়েছেন তৎকালীন মন্ত্রী সামছুল হক, কর্নেল আকবর হোসেন ও আ হ ম মোস্তফা কামাল, দেশের সর্বচ্চো বিদ্যাপীটের দুইজন ভাইস চ্যাঞ্জেলর ড. আবদুল মতিন পাটোয়ারী ও ড. সামছুল হক।
শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ এ এইচএম মহিউদ্দিন, অধ্যক্ষ ফয়েজুল্লাহ, অধ্যক্ষ আবুল কালাম মজুমদার, ডিআইজি মাজেদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ডিআইজি মোসলেউদ্দিন, ডিসি সোলাইমান,সামাজিক ব্যাক্তিত্ব মৌলভী আবদুল হাকিম, ছানাউল্লাহ মিয়া, সুবল চন্দ্র সাহা, চাঁন মিয়া ও সুরুজ মিয়া এবং বর্তমান সরকারের অর্থমন্ত্রী ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সহ স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারগুলোর বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ন কর্মকর্তা এবং অসংখ্য মহিয়ষী ব্যাক্তি।
ঢাকানিউজ২৪.কম / মশিউর রহমান সেলিম/কেএন
আপনার মতামত লিখুন: