ময়মনসিংহ ব্যুরো : চক্ষু চিকিৎসায় বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাত্র ১৫ হাজার টাকার লোভে তথাকথিত এক নামি চক্ষু চিকিৎসকের অপচিকিৎসার বলি হয়ে ৩৩ শতাংশ দৃষ্টিশক্তি চিরতরে হারানোর অভিযোগ করেছেন ময়মনসিংহের এক নারী চিকিৎসক।
অভিযুক্ত চিকিৎসক রাজধানীর দীন মোহাম্মদ চক্ষু হাসপাতালের রেটিনা স্পেশালিষ্ট অধ্যাপক ডাঃ দীপক কুমার নাগের বিরুদ্ধে ‘নজিরবিহীন অপেশাদারিত্বে’র অভিযোগ তুলে তার ন্যায়বিচার নিশ্চিতের দাবি তুলেছেন দৃষ্টি খোয়ানো ডাঃ মাহজাবিন হক মাশা। বুধবার ( ১২ অক্টোবর) ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি তুলেন তিনি।
এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ময়মনসিংহ চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোঃ আমিনুল হক শামীম (সিআইপি)এর একমাত্র কন্যা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি) পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক ডাঃ মাহজাবিন হক মাশা বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন ‘গত কয়েকমাস যাবৎ আমার চোখে কিছু সমস্যা অনূভুত হওয়ায় আমি ০১ জুন ২০২২ রাজধানীর দীন মোহাম্মদ চক্ষু হাসপাতালে ডাঃ দীপক কুমার নাগের প্রাইভেট চেম্বারে সাক্ষাৎ করি। তিনি আমার রেটিনা পরীক্ষা করে অতি দ্রুত দুই চোখেই লেজার অপারেশন করতে বলেন। তিনি আমাকে বলেন, আমি যেন ৫ জুন (২০২২) অপারেশন করাই; নয়তো যে কোন মূহুর্তে আমি অন্ধ হয়ে যেতে পারি।’
সম্মেলনে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু’র ভাতিজী ডাঃ মাহজাবিন হক মাশা উল্লেখ করেন, ‘আমি যেন কোন অবস্থাতেই ওনার নির্ধারিত তারিখ ও সময় মিস না করে সেই বিষয়ে সতর্ক করে দেন। আমি ওনার কথায় ভীষণ ঘাবড়ে যাই। আমার বাবা, মা তখন দেশের বাহিরে ছিলেন। আমি ময়মনসিংহে চলে আসি। আমার বাবা বিদেশ থেকে সব ঘটনা শুনে হাসপাতালে যোগাযোগ করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে ০৬ জুন ২০২২ সকালে আমার চোখ পরীক্ষার জন্য সময় নির্ধারণ করে দেয়। ডাঃ দীপক কুমার নাগের সতর্কতা মোতাবেক আমি ৫ জুন ২০২২ উনার চেম্বারে দেখা করে বোর্ড গঠনের কথা অবহিত করে একদিন পরে অপারেশন করার জন্য অনুরোধ করি। এতে করে তিনি ভীষণ ক্ষিপ্ত হয়ে যান।’
তিনি বলেন, ‘এমন সামান্য একটা বিষয়ে বোর্ড গঠন করিয়ে ফেললেন। আমি রেটিনা বিভাগের হেড অব ডিপার্টমেন্ট। আমাকে অসম্মান করলেন। আমি ও বোর্ডে যাব না। যদি আমাকে দিয়ে অপারেশন করাতে চান তো আজই করতে হবে; নয়তো আর কোনদিনই আমি আপনার চোখে অপারেশন করব না`-যোগ করেন দৃষ্টি হারানো ওই নারী চিকিৎসক।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘ওনার কথায় আমি খুব বেশি ঘাবড়ে গিয়ে অপারেশন করতে রাজি হয়ে যাই। আমি এবং আমার সঙ্গে থাকা আমার স্বামী ও বাবা ওনার কাছে জানতে চান যে, লেজার অপারেশনের কোন সাইডইফেক্ট বা ঝুঁঁকি আছে কিনা? আমার বাবা বলেন যে, সামান্যতমও ঝুঁঁকি থাকলে বলেন, আমার মেয়েকে বিদেশে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাব। এতে তিনি বললেন, আমি দীপক নাগ গ্যারান্টি দিচ্ছি যে ১০০% ঝুঁকিমুক্ত চিকিৎসা করব। আমার বাবা ওনাকে অপারেশন করতে মাত্র একটা দিন বিলম্ব করার জন্য অনুরোধ করলে তিনি পুনরায় ক্ষিপ্ত হয়ে যান। যেহেতু আমি একজন ডাক্তার এবং তিনিও একজন ডাক্তার। তাই তার কথায় বিশ্বাস স্থাপন করে আমি সম্মতি দিলে তিনি ওই দিনই অপারেশন করেন।’
ডা মাশা বলেন, ‘ডাঃ নাগ আমার ডান চোখে ৪৫ মিনিট ধরে লেজার ধরেন। আনুমানিক ২০ মিনিট পর প্রচন্ড যন্ত্রণা বোধ করায় ওনাকে লেজার বন্ধ করতে অনুরোধ করি। মনে হচ্ছিলো আমার চোখ ফেটে গলে যাচ্ছে। উনি ১০/১৫ সেকেন্ডঢাকানিউজ২৪.কম / নজরুল
আপনার মতামত লিখুন: