
জালাল উদ্দিন মন্ডল, নান্দাইল প্রতিনিধি : উপজেলা নান্দাইলে ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামী চপই দাখিল মাদ্রাসা সুপার হারুন অর-রশিদের অত্যাচার, নির্যাতন, বিভিন্ন অপকর্ম করার প্রতিবাদে ও মাদ্রাসা থেকে বহিস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী ও অভিভাবকবৃন্দ। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ১১ টায় উপজেলার মুশুলি ইউনিয়নের চপই মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে আবু তাহের অভিযোগ করে বলেন, সুপার হারুন অর-রশিদের বিরুদ্ধে অনিয়ন, নির্যাতনের শেষ নেই। তার বিরুদ্ধে নান্দাইল মডেল থানায় ৪ টি হত্যা চেষ্টা মামলা রয়েছে। এসব মামলা থেকে জামিনে এসে আবারও অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর আমার চাচাতো ভাই জুয়েল মিয়া(২৭) কে বাড়ির পাশে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ ঘটনায় এ বছরের ৩রা জানুয়ারী নান্দাইল মডেল থানায় সুপারকে প্রধান আসামী করে হত্যার চেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলায় সুপার উচ্চ আদালত থেকে ৪ সপ্তাহের আগাম জামিন নেন৷ পরে ৩১ শে জানুয়ারী সুপার কে বাদ দিয়ে চার্জশীট দিলে বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সুপারের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করে। ওয়ারেন্টে নিয়ে ঘুরাফেরা করলেও পুলিশ থাকে গ্রেফতার করে না ।
খলিলুর রহমান বলেন, আমার ছেলে আলিম উদ্দিন কে দপ্তরির চাকুরি দিবে বলে নগদে ৩ লাখ টাকা নিয়েছে। পরে তার বাড়ির ছেলেকে চাকুরি দিয়েছে। এখন আমি অসহায় হয়ে পড়েছি। ছেলেটি ঢাকায় বস্তিতে থাকে।
হুমায়ুন কবির নামে একজন বলেন, আমার উপরেও হামলা করেছে। এ ঘটনায় মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা মামলা চলমান রয়েছে।
চপই দাখিল মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান জয় বলেন, আমরা এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করতে পারি না। নতুন বই বিক্রি করে দেন,পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জোর করে বাড়তি ফি আদায় করে । সপ্তাহে ক্লাস বন্ধ রেখে বিরিয়ানি রান্না করে খাওয়া দাওয়া করে। এর প্রতিবাদ করলে ছাড়পত্র (টিসি) দিয়ে বের করে দিবে বলে হুমকি দেয়।
ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, মো. রতন মিয়া,দুলাল মিয়া, মো. জুয়েল মিয়া,ফাইজুল ইসলাম, মো. জসিম উদ্দিন, মফিজ মেকার সহ প্রায় দুই শতাধিক অভিভাবক, শিক্ষার্থী সহ অনেকেই। এসময় ক্ষিপ্ত অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী মাদ্রাসা সুপার হারুন অর- রশিদের বহিস্কারের দাবি জানান।
চপই দাখিল মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি সেনু মেম্বার বলেন, সুপার হারুন অর-রশিদের অনিয়ম, নির্যাতনের কর্মকান্ডে এলাকাবাসী অতিষ্ট। সুপারের নিকট আত্নীয় স্বজনকে মাদ্রাসায় নিয়োগ দিয়ে নিজের মত করে মাদ্রাসা পরিচালনা করিতেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চপই দাখিল মাদ্রাসার সুপার হারুন অর- রশিদ মুঠোফোনে বলেন, এলাকাবাসী যে অভিযোগ করেছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি অত্যন্ত সুন্দর ভাবে মাদ্রাসা পরিচালনা করে আসছি। অত্যাচার নির্যাতন আমি একজন মাদ্রাসা সুপার হয়ে করতে পারি না। তারা আমাকে হেয় করার জন্য মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। আমি জামিন নিয়েছি। জামিনের রিকল চাইলে পরে দিবে বলে ফোন কেটে দেন ৷
নান্দাইল মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. রুবেল মিয়া মুঠোফোনে বলেন, যে মামলায় সুপারকে চার্জশীটে বাদ দিলাম আদালত কিভাবে আবার ওয়ারেন্ট ভুক্ত করলো তা বুঝে আসে না। সুপার কে গ্রেফতারের প্রস্তুতি নিয়েছি। আজ (মঙ্গলবার) আমাকে ফোন করে জানিয়েছে তিনি জামিন নিয়েছে। তবে জামিনের রিকলের কপি পাইনি৷
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: