নিজস্ব প্রতিবেদক : সম্প্রতি প্রাক্তন কর্মচারীদের কিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল কোনো আয়না ঘর নয়, বরং একটি ফুলের বাগান যেখানে সকল কর্মচারী একত্রে কাজ করছে।
শনিবার (৩১ আগস্ট) এক পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে তারা তাদের অবস্থান তুলে ধরেন।
ইউনিয়নের সভাপতি মো. মহসীন বলেন, "হোটেলটি একটি বহুজাতিক অপারেটরের দ্বারা সুনামের সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে এবং এখানে আয়নাঘর নামে কিছু নেই। বরং এটি একটি ফুলের বাগান যেখানে কর্মীরা একসঙ্গে কাজ করছে।" তিনি উল্লেখ করেন, গত দুই বছরে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা তার ইতিহাসের সর্বোচ্চ ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জন করেছে। ২০২৩ সালে হোটেলের আয় ২০২১ সালের তুলনায় ১২৭.৪% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মুনাফা ৪৩৩% বৃদ্ধি পেয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হুমায়ুন কবীর, সহসভাপতি হুমায়ুন কবির লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক অশোক কুমার সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
মোহসিন অভিযোগ করেন, প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান এবং তার অনুসারীরা হোটেল কর্তৃপক্ষের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক দাবি আদায়ের চেষ্টা করেছেন এবং হোটেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে সুনাম ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, "ইউনিয়নটি সম্পূর্ণরূপে বহিঃরাজনৈতিক চর্চামুক্ত এবং সবসময় কর্মীদের কল্যাণে কাজ করে। আমাদের নির্বাচিত ইউনিয়ন ৩৩৫ জন কর্মীর প্রতিনিধিত্ব করছে এবং গত বছরের নির্বাচনে আমরা বিপুল সংখ্যক ভোটে বিজয়ী হয়েছি।"
অন্যদিকে, গত শুক্রবার (৩০ আগস্ট) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে চাকুরিচ্যুত কর্মচারীরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলেন। তারা অভিযোগ করেন, হোটেলের প্রশাসনিক ব্লকের দ্বিতীয় তলায় একটি নির্যাতন কক্ষ—‘আয়নাঘর’—ব্যবহার করে কর্মচারীদের ইস্তফার চিঠিতে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করা হয়।
প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক নূরুজ্জামান বলেন, কর্মচারীরা তাদের বকেয়া বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য পাওনা দাবি করলেই তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়।
ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বলা হয়, "নূরুজ্জামানের অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন এবং তার বিরুদ্ধে ম্যানেজমেন্টের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে আন্দোলনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পরিচালিত করা হচ্ছে।"
মোহসিন সকল মহল এবং দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান, যেন হোটেলটির সুনাম রক্ষায় সহযোগিতা করেন এবং বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার থেকে বিরত থাকেন।
তিনি আরও জানান, হোটেলের ইউনিয়ন সবসময়ই শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিদাওয়া কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করে এবং সমঝোতার ভিত্তিতে তা বাস্তবায়িত হয়। হোটেলের শীর্ষ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তারা কর্মচারীদের অধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কোনো ধরনের অন্যায় বা নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / জেডএস/সানি
আপনার মতামত লিখুন: