• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

জলঢাকার রাজা হরিশ চন্দ্রের বাড়ীটির সংরক্ষণের নেই উদ্যোগ


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বুধবার, ১৫ ফেরুয়ারী, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০১:৫৭ পিএম
জলঢাকার সংরক্ষণের নেই উদ্যোগ
রাজা হরিশ চন্দ্রের বাড়ী

মশিয়ার রহমান, জলঢাকা প্রতিনিধি, নীলফামারী: নীলফামারী জলঢাকায় সংস্কারের উদ্দ্যোগ নেই রাজা হরিশ চন্দ্রের বাড়ী। সরকার উদ্যেগ নিলে এটি হতে পারে পর্যটন কেন্দ্র।  

হরিশ চন্দ্র পাঠ উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম। রাজা হরিশ চন্দ্রের নাম অনুসারে গ্রামটির নামকরন করা হয়েছে। আর এই জায়গায় রাজা হরিশ চন্দ্রের রয়েছে প্রাচীন রাজবাড়ি। 

বর্তমানে এই রাজ বাড়ীটি  মাটির নিচে দেবে যাওয়ায় তার ধ্বংসাবসাশের নাম হরিশচন্দ্র পাঠ।  চাড়াল কাটা নদীর দক্ষিণ তীরে প্রায় এক বিঘা জমির উপর ৫টি বড় কালো পাথর খণ্ডে ঘেরা স্থানটিকে দূর থেকে রাজ বাড়ীর শিব মন্দিরের জায়গাটি উঁচু মাটির ঢিপি বলে মনে হয়।  ঢিপির উচ্চতা ৫০-৬০ ফুট থাকলেও সময়ের আবর্তনে উচ্চতা কমে ১০ ফুট হয়ে গেছে। যদিও প্রচলিত আছে,পাথরগুলো এভাবে ঢিবির মাটির নিচে তলিয়ে গিয়ে আবার ভেসে উঠে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,বাউন্ডারি দেয়ালের ভিতরে মন্দির ছাড়াও হরিশ চন্দ্র পাঠ গ্রামে রাজা হরিশচন্দ্রের প্রাচীন কিছু স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ সহ কিছু বটগাছ রয়েছে।

এই রাজবাড়ী টি  রক্ষা ও সংস্কার করার জন্য  ব্রিটিশ সরকারের আমলে খনন কাজ শুরু হয়েছিল। 

স্হানীয়রা জানান  খননের তৃতীয় দিন মাটির নিচে একটি দরজার মুখ দেখতে পায় তখনকার খনন কাজে নিয়োজিত শ্রমিকেরা। সে দরজা দিয়ে খনন কাজে কর্মরত ৮ ব্যাক্তি মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করলে হটাৎ মন্দিরের দরজা বন্ধ হয়ে যায় । দরজাটা আর খোলা যায়নি।  এতে বাহিরে থাকা খনন কাজে নিয়োজিত ব্যাক্তিরা ঘাবরে যান ও ভয় পেয়ে খনন কাজ বন্ধ করে দেন। সেই আট ব্যাক্তির ভাগ্যে সেইদিন কি ঘটেছিল তা আজও জানাযায়নি।এরপর থেকে আজ পর্যন্ত মন্দিরের আর কোন সংস্কারের কাজ করা হয়নি।

রাজবাড়ী টি বর্তমানে অরক্ষিত অবস্থায় আছে। সরকারী ভাবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মাধ্যমে এসব নিদর্শন  সংরক্ষণের কোন উদ্দ্যোগ না থাকার ফলে  অযত্ন আর অবহেলা, রক্ষনাবেক্ষন ও সংস্কারের অভাবে এ নিদর্শন স্থানটি আজ হুমকির মুখে পরেছে।

প্রতিবছর শিবমন্দিরে ৩ টি ধর্মীয় উৎসব জাঁকজমক ভাবে আয়োজনের সাথে পালন করে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন দানশীল রাজা হরিশচন্দ্রকে নিয়ে অনেক পালাগান, যাত্রাপালা রচিত হয়েছে।তবে কোন পালাগান বা যাত্রাপালাও সংগ্রহ করা যায় নি। তবে বিভিন্ন  সুত্রে জানাযায় মৃত্যুর আগে রাজা হরিশচন্দ্র এই স্থানে একটি শিব মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু করলেও তা সমাপ্ত করে যেতে পারেননি। তাঁর মৃত্যুর পর স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্যোগে মন্দিরের কাজ সম্পন্ন হয়। 

প্রাচীনকালে এখানে বেশকিছু মূর্তি ছিল, যা এখন আর নেই।এলাকাবাসী জানায় শিব মন্দির নিয়ে নানা ধরণের লোককথা প্রচলিত রয়েছে  কথিত আছে, এই মন্দির ও আশেপাশের স্থান থেকে এক টুকরা মাটি, ইট বা পাথর যদি কেউ নিয়ে যায় তবে সে ব্যক্তির নাক মুখ দিয়ে রক্তপাত হয়ে মারা যায়। এরপর জেলা প্রশাসকের উদ্দ্যোগে ১৯৯৮ সালে সরকারি ভাবে ঐতিহাসিক এ নিদর্শন রক্ষার জন্য এলাকার কিছু অংশকে পুরাকীর্তি এলাকা হিসাবে ঘোষণা করে নির্মাণ করে বাউন্ডারি দেয়াল।  

এ রাজার বাড়ি পরিদর্শনে রংপুরের পীরগাছা থেকে আসা আব্দুল মালেক নামে এক তরুন জানান এলাকাটি খুব সুন্দর। জায়গাটি দেখে ভালো লাগছে। তবে কোন কিছু দেখা যায় না সব মাটির নিচে। এ এলাকারয় উন্নয়ন করে পর্যটকদের জন্য সুযোগ সুবিধা বাড়ানো হলে এখানে দর্শনার্থীদের যাতায়াত বৃদ্ধি পাবে। 

এলাকার বাসিন্দা বাসুদেব (৭০) বলেন এ স্থানটি আমি ছোট বেলা থেকে একই রকম দেখছি এর কোন সংস্কার মেরামতের কোন উদ্দ্যোগ নাই। এলাকাবাসীর দাবী এই স্থান টি পর্যটন এলাকা হিসাবে গড়ে ওঠার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও তা না করার ফলে  সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।তাই এ এলাকাকে পর্যটন শিল্প এলাকা গড়ে তোলে তা করার দাবী জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ময়নুল ইসলাম জানান এ এলাকাকে দর্শনীয় স্থান করতে পরিকল্পনা গ্রহন করার জন্য  উর্ধতন কর্তৃপক্ষ কে জানানো হয়েছে ,। আশা করি এটি বাস্তবায়ন  হলে জেলার অন্যতম পর্যটন এলাকা হিসাবে গড়ে উঠবে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image