• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

সিলেটে বন্যায় চিড়া মুড়ির দাম দ্বিগুণসহ শিশু খাদ্য সংকট প্রকট


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০২:৩১ পিএম
সিলেটে বন্যায় চিড়া মুড়ির দাম দ্বিগুণ
চিড়া, মুড়ি

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট: বন্যায় সিলেটে চিড়া ও মুড়ির দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বেড়েছে গুড়, বোতলজাত পানির দামও। অনেক ক্ষেত্রে বেশি দামেও মিলছে না এসব পণ্য।

এদিকে বন্যায় আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে দেখা দিয়েছে শিশু খাদ্য সংকট । সুনামগঞ্জে আশ্রয় কেন্দ্র আশ্রয় নেওয়া পরিবার গুলোর অনেক  দুদ্ধ শিশু রয়েছে।  যারাই ত্রাণ বিতরণ করছেন বিভিন্ন কেন্দ্র ও পানিবন্দি বাড়িতে শিশুদের খাদ্য সংকটের কথা জানানেন না।  

দুর্গত অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, বন্যা আক্রান্ত মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের জন্য চিড়া, মুড়ি ও গুড়ের চাহিদা বেড়েছে। সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে সিলেটে এসব শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

চাহিদা বাড়ার ফলে এসব পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই সুযোগে দাম প্রায় দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ত্রাণ বিতরণের জন্য সিলেটের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কালিঘাটে চিড়া, মুড়ি ও গুড় কিনতে গিয়েছিলেন নগরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজিদ আহমদ।

তিনি সাজিদ বলেন, ‘বাজারে এসে দেখি সব পণ্যেরর দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আমরা ৫০০ মানুষের জন্য শুকনো খাবার কিনতে এসেছিলাম। তবে জিনিসপত্রের যে দাম দেখছি, তাতে ৩০০ জনের জন্যও কিনতে পারব না।’

কিছু অসাধু ব্যবসায়ী , বিপদগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে ব্যবসায়ীরা সহযোগিতার বদলে আরও দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

সোম বার থেকে বুধবার দুপুরে কালিঘাটের বিভিন্ন দোকান ঘুরে। সেখানে প্রতি কেজি চিড়া ৭২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহেও ছিলে ৪০ টাকা। আর গত সপ্তাহে ৬৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মুড়ির দাম এখন হয়ে গেছে ১২০ টাকা।

এ ছাড়া গুড় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০টাকায়। আগের সপ্তাহে যা বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশি দামে কিনে আনা, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ সংকট এবং বন্যায় পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় পণ্যমূল্যও বেড়েছে।

কালিঘাটের পাইকারী প্রতিষ্ঠান মা স্টোরের স্বত্বাধিকারী অনল পাল বলেন, ব্যাপক আকারে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হওয়ায় সিলেটে চিড়া, মুড়ি ও গুড়ের সংকট দেখা দিয়েছে। ঢাকায়ও সংকট তৈরি হয়েছে। ফলে ওখানকার ব্যবসায়ীরাই দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমরা বেশি দামে কিনে আনছি। তা ছাড়া বন্যার কারণে পরিবহন খরচও অনেক বেড়ে গেছে। এ কারণে আমরা বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।

অনল আরও বলেন, বাড়তি দামে আমরা বিক্রি করতে চাই না। কিন্তু আমরা পণ্য না রাখলে বন্যাকবলিত মানুষ আরও সমস্যায় পড়বে। তারা শুকনো খাবারও পাবে না। এ জন্য আমরা বাড়তি দামে এসব পণ্য কিনে এনে বিক্রি করছি।

একই বাজারের মাছুম অ্যান্ড ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আব্দুস সালাম জানান, গত সপ্তাহে প্রতি বস্তা চিড়ার দাম ছিলে ১ হাজার টাকা। এখন ১ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।

এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমরাই ১৬০০ টাকা করে বস্তা কিনে আনছি। তার ওপর বন্যার কারণে পরিবহন খরচ অনেক বেড়েছে। আমাদের লাভ সামান্যই হচ্ছে।

চিড়া-মুড়ি এখন আর বিক্রি করবেন না জানিয়ে সালাম বলেন, ‘আমাদের লাভ হয় না ৫০ টাকা, অথচ ভোক্তা অধিকার এসে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে বসে। আমরা নিজেরাই যে বেশি দামে কিনে আনছি সেটা তারা বুঝতে চায় না।’

সিলেটে গুড়ের সংকট দেখা দিয়েছে জানিয়ে কালিঘাটের লতিফিয়া স্টোরের স্বত্বাধিকারী বেলাল আহমদ দাবি করেছেন, সিলেটের আশপাশেও গুড় পাওয়া যাচ্ছে না। ভৈরবসহ বিভিন্ন আড়ত থেকে বেশি দাম দিয়ে গুড় আনতে হচ্ছে। এতে পরিবহন খরচও বেশি লাগছে। প্রতি কেজি গুড় পাইকারি ১০০ টাকা ও খুচরা ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বন্যায় সিলেটে শুকনো খাবারের সংকট ও দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর নজরেও আনেন সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

সিলেট সিটি মেয়র বলেন, সামর্থ্য থাকলেও আমরা সিলেটে শুকনো খাবার পাচ্ছি না। শ্রীমঙ্গল থেকে খাবার আনার চেষ্টা করছি, তাও খুবই অল্প পরিমাণে। ঢাকা থেকে যদি খাবার না যায়, তবে এখানে শিশুখাদ্যের অভাব দেখা দেবে।

এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেটের উপ-পরিচালক আমিরুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় চিড়া, মুড়ি, গুড়ের একটি সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তবে সিলেটের বাইরে থেকে প্রচুর পরিমাণে এসব পণ্য আসছে। ফলে সংকট কেটে যাবে। এই সুযোগে কেউ বেশি দামে পণ্য বিক্রি করলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

ঢাকানিউজ২৪.কম / মো: জহিরুল ইসলাম/কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image