• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

কুলিদের নিয়ে হাইকোর্টের মন্তব্য দুঃখজনক : রব


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:৫৮ পিএম
কুলিদের নিয়ে হাইকোর্টের মন্তব্য দুঃখজনক : রব
জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব

নিউজ ডেস্ক : নির্মম কঠিন পরিস্থিতির শিকার কুলিদের পেশাগত অবস্থান নিয়ে হাইকোর্টের অসম্মানজনক বক্তব্যে রাষ্ট্রের দার্শনিক ভিত্তি “সাম্য,মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার” আঘাত প্রাপ্ত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন গণমাধ্যমে নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেন।

এজলাস চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজের বিরুদ্ধে কতিপয় আইনজীবী অশ্লীল স্লোগান দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাইকোর্ট বলেছেন, “অশ্লীল স্লোগান কমলাপুরের কুলিরাও এমন করে না। এটি কোন ভাষা?

উচ্চ বিচারালয়ে শ্রমজীবী কুলি পেশাকে বিতর্কে টেনে এনে প্রকারান্তরে কুলি সমাজকে অপেক্ষাকৃত ‘নিচুস্তর’ হিসেবে উপস্থাপন করে তাদের মর্যাদা ক্ষুন্ন করা কোনক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। যারা দুর্নীতি ও রাষ্ট্রের সম্পদ লুণ্ঠন এবং পাচারের ন্যায় ঘৃণ্য রাষ্ট্রদ্রোহিতার সাথে জড়িত তাদের প্রসঙ্গ না এনে যারা কায়িক পরিশ্রম করে  'দিন আনে দিন খায়, বিদ্যমান আর্থ সামাজিক অবস্থায় সহায় সম্পত্তিহীন এবং শোষণ ও নিগ্রহের শিকার তাদের কেন দৃষ্টান্ত হিসেবে আদালতে উপস্থাপন করা হলো তা বোধগম্য নয়। গরিব, নিঃস্ব বা সর্বহারা হওয়া কোন অপরাধের বিষয় নয় বরং তাদের এই অবস্থা সমাজ ও রাষ্ট্রের অব্যবস্থাপনারই প্রতিফলন। 

আন্দোলন সংগ্রামে এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে এই শ্রমজীবীদের আত্মদান ও অবদান ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে। এখনো গণতন্ত্র ও অধিকার আদায়ের সংগ্রামে শ্রমজীবী জনগোষ্ঠী ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

সংবিধানের ২০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- কর্ম হচ্ছে কর্মক্ষম প্রত্যেক নাগরিকের পক্ষে অধিকার, কর্তব্য ও সম্মানের বিষয়। রাষ্ট্রের কোন প্রতিষ্ঠান কোন কর্মকে অমর্যাদাকর ঘোষণা করতে পারে না।

৩২ অনুচ্ছেদে জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার সংরক্ষণ করা হয়েছে। কুলি- কর্ম তথা কোন পেশা বা বৃত্তিকে নিম্নস্তরের বিবেচনা করা স্বাধীন দেশের চেতনা বিরোধী। নিম্ন আয়ের মানুষদের নিয়ে অবহেলা, অবজ্ঞা এবং বৈষম্য মূলক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিধ্বনি স্বাধীন দেশের উচ্চতর আদালত থেকেও প্রতিফলিত হচ্ছে, যা সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী।

'কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী বা বর্ণের কারণে রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবে না বা বৈষম্য প্রদর্শন করা যাইবে না'- এটা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। কোন অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রতি মর্যাদা হানিকর কোন বক্তব্য প্রদান কোনো ক্রমেই ‘সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান’ - সংবিধানের এই নির্দেশনাকে সুরক্ষা দেয় না।

আমাদের রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক সমাজের প্রতিষ্ঠা করা যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হবে। সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদেও মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। স্বাধীন দেশের কোন কর্ম বা পেশা বা পেশাজীবীকে হেয় করা বা কোন জনগোষ্ঠীর মর্যাদা ক্ষুন্ন করা সংবিধান পরিপন্থী।

আমরা আশা করছি, আদালতের এহেন অসাংবিধানিক ও অনৈতিক মন্তব্যের প্রেক্ষিতে  রাষ্ট্রের দার্শনিক ভিত্তি সুরক্ষার প্রশ্নে এবং কুলি-শ্রমজীবীদের অসম্মানের ন্যায্য প্রতিকারে উচ্চ আদালত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image