• ঢাকা
  • শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

চট্টগ্রাম বন্দরে দরপত্র ছাড়াই অপারেটর নিয়োগের তৎপরতা 


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:৪২ পিএম
চট্টগ্রাম বন্দরে
দরপত্র ছাড়াই অপারেটর নিয়োগের তৎপরতা 

নিউজ ডেস্ক : বহির্নোঙরে পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের জন্য দরপত্র ছাড়াই অপারেটর নিয়োগ দিতে চায় চট্টগ্রাম বন্দর। এ জন্য বোর্ড সভা আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বন্দরের এই তৎপরতায় ‘অশনিসংকেত’ দেখছে বর্তমান অপারেটররা। বদলি হওয়া চেয়ারম্যান কেন যাওয়ার আগে তড়িঘড়ি করে এমন উদ্যোগ নিয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশ শিপ হ্যান্ডলিং অ্যান্ড বার্থ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন। 

তারা মনে করছে, দরপত্র ছাড়া অপারেটর নিয়োগের এমন উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে অস্থিরতা তৈরি হবে বন্দরের বিহর্নোঙরে। লোকসানও গুনতে হবে এখনকার ৩২ অপারেটরকে। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ মনে করছে, নতুন অপারেটর নিয়োগ দিতে হবে সময়ের প্রয়োজনে। আগে বন্দরের বিহর্নোঙরে বছরে গড়ে ২ কোটি টন পণ্য ওঠানামা করত। এখন করে সাড়ে তিন কোটি টন। ভবিষ্যতে এটি আরও বাড়বে ধরে নিয়ে আগাম প্রস্তুতি নিতে চায় তারা। এরই মধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে আগ্রহী শতাধিক প্রতিষ্ঠান।

এ ব্যাপারে বন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, আমরা কারও কাছে কোনো আবেদন চাইনি। নতুন অপারেটর নিয়োগের ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতিও নেই। তবে বন্দর ব্যবহারকারীদের অনেকেই প্রতিযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারে বিভিন্ন ফোরামে এটি নিয়ে কথা বলেছেন।

চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেলের গভীরতা কম হওয়ায় বড় জাহাজে আসা গম, সার, সিমেন্ট ক্লিংকার, পাথর, কয়লা ইত্যাদি খোলা পণ্য নিয়ে সরাসরি বন্দরের মূল জেটিতে আসতে পারে না। তাই বহির্নোঙরে এসব জাহাজকে অপেক্ষা করতে হয়। সেখানে ছোট ছোট জাহাজে পণ্য খালাস করে নদীপথে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। 

নদীবন্দর সংশ্লিষ্ট গুদামে পণ্য সংরক্ষণ করা হয়। বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য খালাসের এই কাজটি শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটররা পরিচালনা করে।

২০০৭ সালের আগে শিপ হ্যান্ডলিংয়ের কাজটি করত লাইসেন্সধারী ৫৬টি স্টিভিডোর কোম্পানি। কাজে গতি আনতে পরবর্তী সময়ে স্টিভিডোর কোম্পানিগুলো থেকে বাছাই করে বার্থ অপারেটর, শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটরে ভাগ করা হয়। ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রের মাধ্যমে শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। পরে আরও তিনজন যোগ হয়। বর্তমানে ৩২টি প্রতিষ্ঠান শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দরের বিহর্নোঙর ও অন্যান্য বিশেষায়িত জেটিতে আগত জাহাজের মালপত্র হ্যান্ডলিং কাজ করছে। বড় ব্যবসায়ীরা বলছেন, পণ্যের তুলনায় অপারেটর কম হওয়ায় বিহর্নোঙরে সময়ক্ষেপণ হয়। বাড়ে পণ্যের ব্যয়ও। তবে এ দাবি মানতে নারাজ শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটররা।

বাংলাদেশ শিপ হ্যান্ডলিং ও বার্থ অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিওএ) সভাপতি একেএম শামসুজ্জামান রাসেল বলেন, পুরো বিশ্ব এখন এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিও দিনের পর দিন খালি থাকছে। বর্তমান অপারেটররা এখন লোকসান গুনছে। এর মধ্যে নতুন অপারেটর নিয়োগ হলে তা অস্থিরতা আরও বাড়াবে। দরপত্র ছাড়া এমন নিয়োগ পুরো সেক্টরকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তিনি জানান, অপারেটরদের মনোপলি ব্যবসা করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ পণ্যের ক্যাটাগরি অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম চেম্বার ও শিপ হ্যান্ডলিং অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠকে কাজের রেট নির্ধারণ করা হয়।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএসবিওএ সভাপতি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কুতুবদিয়া বহির্নোঙর ও অন্যান্য বিশেষায়িত জেটিতে আসা দেশি-বিদেশি জাহাজের পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের জন্য রেগুলেশনস ফর ওয়ার্কিং অব চিটাগং পোর্ট (কার্গো অ্যান্ড কনটেইনার) ২০০১-এর প্রবিধানমালা অনুসরণ না করে অনিয়মতান্ত্রিক ও দরপত্র ব্যতীত নতুন শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর তালিকাভুক্ত করতে একটি বোর্ড সভা আহ্বান করতে যাচ্ছে। অথচ চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকাণ্ডে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ ও দক্ষ হওয়া সত্ত্বেও অনেক স্টিভিডোরিং প্রতিষ্ঠান শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে ব্যর্থ হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে কুতুবদিয়া, বহির্নোঙর ও অন্যান্য বিশেষায়িত জেটিতে কাজের জন্য দরপত্র ব্যতীত শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর তালিকাভুক্তি ও নিয়োগ করা অত্যন্ত অযৌক্তিক ও বেআইনি।

অ্যাসোসিয়েশন মনে করছে, হঠাৎ করে নতুন শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর নিয়োগ হলে এখন যারা আছেন, তাদের কাজের পরিমাণ কমে যাবে। অপারেটরদের অধীনে নিয়োজিত শ্রমিক-কর্মচারীরাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এতে করে চট্টগ্রাম বন্দরে শ্রম অসন্তোষ দেখা দিতে পারে এবং যে কোনো সময় বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image